‘বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যতটুকু পারি সাহায্য করব’
৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০১
ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ঈদের আগে, রোজার সময় কত মানুষ যে ব্যবসা-বাণিজ্য করছিল। তাদের কষ্টটা, তাদের কান্না—এটা সহ্য করা যায় না। ইতোমধ্যে বলে দিয়েছি, আমরা যতটুকু পারি তাদের সাহায্য করব।
পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থবিভাগের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকা পরিশোধের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চেক হস্তান্তর করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার কীরকম ক্ষতি হয়েছে এটা আমরা দেখব। পাশাপাশি বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় যারা ফায়ার সার্ভিসের অফিসে ঢুকে গাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, সবচেয়ে কষ্ট লাগে, এখানে একবার ১৯৯৫ সালে আগুন লাগে। এরপর ২০১৮ সালে আবার আগুন লাগে। এরপর আমরা সুপরিকল্পিত মার্কেট করার জন্য একটা প্রকল্প গ্রহণ করি। তখন বেশকিছু লোক বাধা দেয়। শুধু বাধা দেয়নি, রিটও করেছিল। হাইকোর্ট এটাকে স্থগিত করে দেয়। সেই সময় যদি এটা স্থগিত না করত তাহলে এখানে আমরা একটা ভালো মার্কেট তৈরি করতে পারতাম। এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা তখন আর ঘটত না।
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় বিক্ষুব্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের কিছু লোকের আচরণটা আমাকে খুব ক্ষুব্ধ করেছে। যখনই আগুন লেগেছে তখনই ফায়ার ব্রিগেড সেখানে চলে গেছে আগুন নেভাতে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আনসার ভিডিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, ভলান্টিয়ার প্রত্যেকে সেই সকাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। কথা নাই বার্তা নাই দুপুরের পরে হঠাৎ একদল লোক লাঠিসোটা নিয়ে হাজির। তারা গিয়ে একেবারে ফায়ার সার্ভিস অফিসের ভেতরে ঢুকে কয়েকটা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কতগুলো ভাংচুর করেছে এবং সেখানে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ? এটা কেন? যারা এই লাঠিসোটা নিয়ে গেছে তাদের সবাইকে চিহ্নিত করতে বলেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং মামলা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে কেউ যদি ফায়ার সার্ভিসের কোনো মানুষের উপর বা কোনো গাড়ির উপর এই ধরনের আক্রমণ করে বা জনস্বার্থে ব্যবহার করা জিনিসের উপর আঘাত হানে তাদের কিন্তু ছাড় দেওয়া হবে না।
পদ্মা সেতুতে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলেছে মঙ্গলবার। গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা নদীর ওপর সড়ক সেতুর উদ্বোধন হলেও বহুল প্রতীক্ষিত রেলপথ চালুর অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। তাই পদ্মা সেতুর উপর পরীক্ষামূলক রেল চলাচলকে বাংলাদেশের জন্য একটি আনন্দের খবর বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটাও আমাদের একটা বিরাট অর্জন। তবে আমাদের যখন একটা আনন্দের সংবাদ আসে, পাশে আবার দুঃখের সংবাদ থাকে। সেটা হলো গতকাল বঙ্গবাজারে আগুন লেগে পুড়ে যাওয়া। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যতটা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, ততোটা পেছন থেকে টানার চেষ্টা করে। সেটা আমরা সবসময় লক্ষ্য করি। কিন্তু যত বাধাই আসুক বাংলাদেশ যে যাত্রা শুরু করেছে, উন্নয়ন অগ্রগতির এই গতিটা অব্যাহত রেখে আমরা এগিয়ে যাব।
সারাবাংলা/এনআর/আইই