বিএনপি জোট অ্যামিবার মতো ছোট-বড় হয়: তথ্যমন্ত্রী
৬ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৫২
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অ্যামিবার আকার যেমন মাঝে মধ্যে বড় হয় আবার ছোট হয়, বিএনপির জোটও সেরকম। অ্যামিবা যেমন নিজেকে ভাগ করে দু’টা হয়, চারটা হয়, বিএনপির জোটও ঠিক সেরকম। দেখা গেলো, ২২ দলীয় জোট ছিল হলো ১২ দলীয় জোট, আবার ক’দিন পরে শুনি তারা ৫৪ দলীয় জোট। এ জন্য তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি ঘোষণাপত্র দেওয়ার চেষ্টায় কেন সফল নয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিতে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম সবাই আছে। সবাইকে একত্রিত করে ঘোষণাপত্র দেওয়া তো কঠিন কাজ। বিএনপির মধ্যে আবার কয়েকটি ভাগ- চেয়ারপারসনের ধারা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের ধারা, মির্জা ফখরুল সাহেবের ধারা, সংস্কারপন্থীদের ধারা। সব ধারাকে এক করাও কঠিন কাজ।’
এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই আইন দেশের সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে। আর আমাদের এ আইন আমেরিকার আইনের চেয়ে অনেক সহজ। আমেরিকায় ডিজিটাল অপরাধের জন্য ২০১৫ সালের আইনটি ২০২২ সালে সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এত কারাদণ্ড নেই। আমেরিকার আইনে ডিজিটাল অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে যদি কারও মৃত্যু হয় সেক্ষেত্রে শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নও ২০২২ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তার নতুন আইন করেছে এবং প্রায় সব দেশেই এই আইন আছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও আমাদের চেয়ে কঠিন। সুতরাং এই আইন বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। তবে এতে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর দেওয়া প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও কী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করছি।’
এর আগে, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধবিষয়ক সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের লেখনির ফলেই রাষ্ট্র ও সমাজের পক্ষে অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হয়। অপরাধীরা অনেককেই হুমকি দেয়, এটি সমীচীন হয়। সাংবাদিকরা সাহস নিয়ে কাজ করলে সমাজ উপকৃত হবে, রাষ্ট্র উপকৃত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে সবসময় খেয়াল রাখাতে হবে, রিপোর্টিং করতে গিয়ে যেন কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। পাশাপাশি, ক্রাইম রিপোর্টারদের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা যাতে কোনোভাবে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সেটি অবশ্যই এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আমি খেয়াল রাখি এবং সাধ্য মতো সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করি।’
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল এবং সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ সভায় তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন। কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক রুদ্র মিজান, অর্থ সম্পাদক মো. এমদাদুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল আহমেদ, দফতর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এস এম ফয়েজ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আবু জাফর, প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু, কল্যাণ সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো. তানভীর হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন, জসীম উদ্দীন ও এনামুল কবীর রূপম সভায় অংশ নেন।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম