Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অর্থমন্ত্রী সংসদে থাকেন না, তিনি কথা শুনতে চান না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:২১

ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, টাকা পাচারের ঘটনায় কোনো জবাবদিহিতা নেই। কে জবাবে দেবে? কোন মন্ত্রীর কী দায়িত্ব সেটিও আমরা জানি না। কে কী কাজ করেন, কোনো জবাবদিহিতাও নেই। ব্যাংকের যেমন জবাবদিহিতা নেই, মন্ত্রীদেরও জবাবদিহিতা নেই। অর্থমন্ত্রী সংসদে থাকেন না। তিনি কথা শুনতে চান না। সরকারের মন্ত্রীরা একেক সময় একেক কথা বলেন। তাদের কথায় সত্যতা নেই।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কোথাও জবাবদিহি না থাকলে দেশ কীভাবে চলবে?— ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হলে সেটি কীভাবে চলবে তা ঠিক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক, মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ। তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। কেন জনগণের টাকা লুটপাট হচ্ছে, কে দায়ী— এ সবের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের টাকা নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। ব্যাংকগুলো পারিবারিক হয়ে গেছে। এগুলো জনগণের ব্যাংক নেই। আমরা টাকা রাখি ঠিকই। ব্যাংকের মালিকদের চাকর-বাকরদেরও কোনো অসুখ হলে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক চলে যাবে চিকিৎসার জন্য।’

কাজী ফিরোজ রশিদ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তিনি ইফতারে যে টাকা খরচ হয় সেটি নিষেধ করেছেন। কিন্তু ইফতারে কত যেত, হয়ত ১০০ কোটি টাকা যেত। কিন্তু এখানে এক হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে আমেরিকায় পালালেন আমজাদ সাহেব। পাচার করা অর্থে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও একাধিক বাড়ি কিনে বসবাস করছে। সাউথ বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আমজাদ। উনি একা তো এই টাকা মারেননি। এটি দীর্ঘদিন যাবত হয়েছে। এক হাজার টাকা তো কম না।’

বিজ্ঞাপন

ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘আমরা জানি যে ব্যাংকিং অবস্থা খুব শক্ত। এখানে সমন্ত ব্যাংক সেক্টর এখন অটোমেশন হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত ইনটারনাল অডিট করে, প্রত্যেকটা ব্যাংকে অডিট করে। স্টক এক্সচেঞ্জে আজকে যে লেনদেন হবে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ জানবে কার কত বাকি আছে? তিন শ বাকি থাকলে তার পরদিন ক্রেডিট করতে দেবে না। আর এইখানে এক হাজার কোটি টাকা। এইটা তো এক দিনে নেয়নি। তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন তারা কী করল? যাদের ওপর দায়িত্ব ছিল, মনে করতে হবে যে শস্যের মধ্যে ভূত আছে।’

তিনি বলেন, ‘এই যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশ নিয়ে যাচ্ছে এসব কাদের টাকা। এই টাকা তো দেশের জনগণের টাকা। ব্যাংকের মালিকরা তো জনগণ। প্রধানমন্ত্রী লাইসেন্স দেন ঠিকই, তার অর্থ এই নয় যে লাইসেন্সের নামে একটি কামান দিলাম, যাকে ইচ্ছা তাকে গোলা ছুড়বে। জনগণের টাকাটি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এই ব্যাংকগুলো এখন পারিবারিক ব্যাংক হয়ে গেছে। এগুলো জনগণের ব্যাংক নেই। জনগণ ব্যাংকে টাকা রাখে আর ব্যাংকের মালিক-চাকরবাকরদের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা হয় জনগণের টাকায়।’

পয়েন্ট অব আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশিদ মন্ত্রীদের সমালোচনা করে বলেন, ‘মন্ত্রীরা একেক সময় একেক কথা বলেন। একটা সংবাদ পেলাম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবেন না। তবে তিনি রাজনৈতিক চর্চা করতে পারবেন। আরেক মন্ত্রী বললেন তিনি (খালেদা জিয়া) শর্ত দিয়েছেন রাজনীতি করবেন না। আপনারা একেক সময় একেক আইনের ব্যাখ্যা দেন।’

জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘দেশে প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। মোকাবিলায় প্রস্তুতির অবস্থা খারাপ। বঙ্গবাজারে হাজার হাজার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঢাকার ভেতর স্থাপনা অপরিকল্পিত, এখানে আগুন নেভানোর সুযোগ নেই।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

জাতীয় পার্টি টপ নিউজ ফিরোজ রশীদ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর