‘সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সংসদের ভূমিকা অনন্য’
৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৫৪
ঢাকা: সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদ অনন্য ভুমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে কাযপ্রণালি বিধি ১৪৭ অনুযায়ী এক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন এবং এর পর দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এর আগে সংসদে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ স্মারক বক্তৃতা দেন।
সংসদে উপস্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, বালাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন একং আশা আকাঙ্ক্ষার সব সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কাযকর ও সক্রিয় ভুমিকা রাখবে। এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত. শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। সবার জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমুহ পূরণ আমরা একযোগে কাজ করব, গড়ে তুলব আগামীর সুখি, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, এই হোক আমাদের প্রত্যয়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, ‘৭ এপ্রিল জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি। এই ৫০ বছরে জাতীয় সংসদের পথ চলা মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে সংবিধানকে ক্ষত বিক্ষত করেছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের উপর আঘাত হেনেছে। সংবিধানের ৪ মুলনীতিকে আঘাত করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের পথ বন্ধ করার জন্য ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিলো সংসদের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সপ্তম জাতীয় সংসদে ইডেমিনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মাধ্যমে ইতিহাসের নির্মম ও নিকৃষ্টতম ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার সদস্যদের হত্যার বিচারের পথ সুগম করা হয়। সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। সরকারের অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর পরিবর্তে সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানও নির্বাচিত করা হচ্ছে। কমনওয়েল্থ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন(সিপিএ) ও ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন(আপিইউ) দুইটি বৈশ্বিক সংস্থা পার্লামেন্টারি এপেক্স বর্ডি প্রদান হিসেবে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালে দশম জাতীয় সংসদের নেতৃত্ব দান বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে অধিষ্ঠিত এক অনন্য উচ্চতায়। দেশের জন্য বয়ে এনেছে এক বিরল সম্মান, এ অর্জন ছিলো বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের আস্থার প্রতীক।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব উপস্থাপন এবং তার বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে