রোয়াংছড়িতে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে ১৯৫ পরিবার
৭ এপ্রিল ২০২৩ ২২:৫৪
বান্দরবান: বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে গোলাগুলিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে ১৯৫টি পরিবার। এ ঘটনায় রোয়াংছড়ি সদরে এসে রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় ১৭৫ পরিবার। অন্যদিকে খামতাম পাড়ার পার্শ্ববর্তী রুমা উপজেলার অংশে ২০ টি পরিবার রুমা উপজেলা সদরের বম কমিউনিটি হল রুমে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এর সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (ইউপিডি এফ সংস্কার) সদস্যদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়। পরে শুক্রবার সকালে সেখানে গিয়ে সেনাবাহিনীর আদলে পোশাক পরিহিত আটজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে রোয়াংছড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালের মার্গে পাঠানো হয়। পুলিশের দাবি পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কেএনএফ ও ইউপিডিএফ সংস্কারের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ বাতে খুকি নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিহতদের এনআইডি কার্ডসহ পোস্ট করে জানিয়েছেন, তাদের ৭ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত সাত সদস্য হলেন- ভান দু বম, সাং খুম, সান ফির খাং বম, বয়রেম বম, জাহিম বম, লাল লিয়ান বম ও লালঠা জার বম। তবে তারা নিহত আরেকজনের পরিচয় দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে রোয়াছড়ি সদরের পল্লী চিকিৎসক লালচুং বম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই গ্রুপে মধ্যে গোলাগুলির ঘটনার কথা শুনেছি। খামতাম পাড়া থেকে অনেক পাড়াপাশি পালিয়ে এসে সদরে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন।’
রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলের ওই পাড়া থেকে ১৭৫টি পরিবার আতঙ্কে রোয়াংছড়ি রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার দাবার দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের গ্রামে ফেরত পাঠানো হবে জানান তিনি।
এ বিষয়ে রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা বলেন, ‘এ ঘটনার স্থলটি রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে পড়েছে। আমি এরইমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওই এলাকায় গোলাগুলির ঘটনার পর পাড়াবাসীরা আতঙ্কে পালিয়ে এসে ২০টি পরিবার এখন রুমা উপজেলার বাম কমিউনিটি হলে আশ্রয় নিয়েছেন।’
আমাদের উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের খবরাখবর রাখছি বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাহাড়ের দুটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।’
ওই এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীরমধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর খামতাম পাড়া এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সারাবাংলা/একে