সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ১৪০ বছরের পুরনো মসজিদ
১০ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:০৭
ভৈরব: ভৈরবে ১৪০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ‘পঁচু বেপারী মসজিদ’টি সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মসজিদের ছাদ ও দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ায় বৃষ্টির পানি ভিতরে ঢুকে পড়ে। যেকোনো সময় মসজিদটি ধসে প্রাণহাণির মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই দ্রুত মসজিদটি সংস্কার বা মেরামতের দাবি মুসল্লিসহ স্থানীয়দের।
জানা যায়, ভৈরবে মেঘনা নদীর তীরবর্তী মুসকিলাহাটি গ্রামে রেললাইনসংলগ্ন স্থানে ১০ শতাংশ জায়গার ওপর মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল প্রায় ১৪০ বছর পূর্বে। প্রথমে টিনসেড মসজিদ থাকলেও পরে ৯ বৈশাখ ১৩৪১ বঙ্গাব্দে ইট, বালি, সিমেন্ট দিয়ে মিনারসহ বিভিন্ন কারুকার্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর শত বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সংস্কার কাজ হয়নি এই মসজিদে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে মসজিদটি।
মসজিদটি টিকিয়ে রাখতে ও দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে লোহার পাইপ দিয়ে ছাদে ঠেকা দিয়ে কোনরকমে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে মসজিদটি। কিন্ত ছাদ সংস্কারের অভাবে মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাশ ঘেষে ট্রেন চলাচল করায় কেঁপে উঠে মসজিদটি। ট্রেন চলাচলের সময় কাঁপুনিতে মনে হয় মসজিদটি এই বুঝি ভেঙে পড়বে।
এছাড়াও বৃষ্টি এলে মসজিদের ভেতরে পানি জমে যায়। দ্রুত সংস্কার করা না হলে শতবর্ষী মসজিদটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে। ইতিমধ্যে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে মসজিদটি না ভাঙতে মসজিদ কমিটিকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মুসল্লি হারুন মিয়াসহ এলাকাবাসীরা জানান, মসজিদটির ইতিহাস-ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এটি যেন সংস্কার করা হয়। তা না হলে যেকোনো সময় মসজিদটি ভেঙে মানুষ মারা যেতে পারে।
মসজিদের ইমাম হাফেজ ওমর ফারুক জানান, মসজিদের বয়স ১৪০ বছর। প্রথমে এ মসজিদের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আশুগঞ্জের আড়াইসিধার একজন। এরপর কালিকাপ্রসাদের ১ জন ৬০ বছর খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে খতিব হিসেবে আছেন। মসজিদটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মুসল্লিরা ভয়ে ভয়ে নামাজ আদায় করে। বর্তমানে মসজিদটির অস্তিত্ব ধরে রাখতে সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজি মোশারফ হোসেন জানান, মসজিদটিতে নামাজ পড়তে মুসল্লিরা ভয় পায়। তবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটি পরিদর্শন করে মসজিদটি না ভাঙার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শত বছরের পুরনো এই মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে সংস্কার কিংবা নতুন নির্মাণ করতে সরকার এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ‘পুরনো এ মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে মসজিদটি যেন সংস্কার করা হয় সেজন্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটি না ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে। মসজিদ কমিটি লিখিতভাবে জানালে এটির ঐতিহ্য ধরে রেখে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমও