সিটি নির্বাচন সরকারের ট্র্যাপ: মির্জা ফখরুল
১০ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:০৮
ঢাকা: পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগকে ‘সরকারের ট্র্যাপ’ বলে অভিহিত করে তা প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১০ এপ্রিল) রামপুরার ডেল্টা হেলথ কেয়ারে চিকিৎসাধীন নাটোরের এক নেতাকে দেখতে আসেন বিএনপি মহাসচিব। এসময় পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কিনা জানতে চাইলে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
গত শনিবার নাটোরের আলাইপুর এলাকায় দলের ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালনকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হন নাটোর সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় গতকাল নাটোর থেকে তাকে ঢাকার এই হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবার জনগণ সরকারের কোনো ট্র্যাপে পা দেবে না, বিএনপি কোনো ট্র্যাপে পা দেবে না। আমাদের সরাসরি বক্তব্য আমরা কোনো ট্র্যাপে যাচ্ছি না। তাদের ট্র্যাপকে উল্টে ফেলে দিবো।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণের পূর্বশর্ত তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন একটাই, এই আন্দোলন হচ্ছে এই সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন তো অনেক আগেই বাদ দিয়েছি… আপনারা জানেন।’
কেউ যদি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় সে ক্ষেত্রে কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো উত্তর দিয়েছি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজকে যদি একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে দেখবেন যে, আওয়ামী লীগ ৩০টা আসন খুঁজে পাবে না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’
‘সেই কারণে আজ তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে মামলা-মোকাদ্দমা, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকে পণ্ড করে দেওয়া এই করেই তারা আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসতে চায়। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তারা যদি না নিয়ে আসে, তারা যদি পদত্যাগ না করে তাহলে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না’, বলেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ধরনের ভয়াবহ কর্মকাণ্ড তারা করছে। কিছুদিন আগে নাটোরের সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ তাকে এবং জেলা কমিটির নেতাদের ওপর তারা অতর্কিতে আক্রমণ করে। সেখানেও ১৫ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত করেন, জেলা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফতার করে। এভাবে একটা ত্রাসের রাজত্ব, সন্ত্রাসের রাজত্ব তারা নাটোরে চালিয়েছে।’
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে অবহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মূলত একটা সন্ত্রাসী দল, এই সরকার সম্পূর্ণভাবে একটা সন্ত্রাসী সরকারের পরিণত হয়েছে। জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তার জবাব দেবে।’
‘নাফিজকে তুলে নেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে’
মির্জা ফখরুল বলেন, “নাফিজ মোহাম্মদ আলমকে (ডয়েচে ভেলের একটি ডকুমেন্টারি ‘ডেথ স্কোয়াড’ এ সাক্ষাৎকার প্রদানকারী) তুলে নেওয়ার ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, র্যাব অসাংবিধানিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত। এখানে যারা কথা বলছে তাকেই তারা মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। এটা শুধু র্যাব নয়, মূলত এর দায়-দায়িত্ব সরকারের।”
‘র্যাব হচ্ছে রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ, সরকার যেভাবে বলছে সেভাবে কাজ করছে, র্যাবকে তারা ব্যবহার করছে। এখানে মূল দায়িত্বটা এসে পড়ে সরকারের ওপর। সেজন্য আমরা এই সরকারের পদত্যাগসহ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছি। একইসঙ্গে এসব অন্যায়-অপকর্মের বিষয়গুলো তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের কথা বলেছি’, বলেন বিএনপির এই নেতা।
সারাবাংলা/এজেড/এমও