‘আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী পয়সার লোভে যুক্তরাষ্ট্রের তাবেদারি করে’
১০ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৩৯
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কথায় কথায় আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়, মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু কোথায় তাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার? যুক্তরাষ্ট্র আমাদের এখানে এমন এক সরকার ব্যবস্থা আনতে চায় যেখানে গণতন্ত্রের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই যে গণতান্ত্রিক ধারা, এর পেছনে আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা সামান্য কিছু পয়সার লোভে এদের তাবেদারি করে, পদলেহন করে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকা এত গণতন্ত্রের কথা বলে। তাদের দেশে গণতন্ত্র চর্চার অবস্থা কী? যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজ্যে তিনজন কংগ্রেস সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কথা বলার অপরাধে। আমেরিকায় প্রতিদিন দেখা যায়, স্কুলে অস্ত্র নিয়ে ঢুকে যাচ্ছে, ক্লাবে ঢুকে যাচ্ছে। এভাবে প্রতিনিয়ত সেখানে শিশুসহ অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আটলান্টিক পার হলেই কি তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পাল্টে যায়? আমেরিকার গণতন্ত্র চর্চা করে তাদের আটলান্টিক পর্যন্ত। এটি যখন পার হয়ে যায়, তখন তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটাই বদলে যায়।’
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘খুনি রাশেদ আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। যতগুলো প্রেসিডেন্ট এসেছে, সবার কাছে আমরা লিখিত আবেদন করেছি। তাদের বলেছি— এরা শিশু হত্যাকারী, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, কিন্তু তারা তো ফেরত দিচ্ছে না। আইনগতভাবে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি, ডিপ্লোম্যাসির মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়েছি, রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছি যে, এই খুনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাকে আপনারা আশ্রয় দেবেন না। কিন্তু তারা আশ্রয় দিয়েছে। খুনিদের লালন-পালন করছে।’
তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুনীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। এখন দেখা যায় দুনীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাদের পক্ষ হয়েই তারা ওকালতি করে যাচ্ছে। আর গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে এখানে এমন সরকার আনতে চায় যেখানে গণতান্ত্রিক কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এই যে গণতান্ত্রিক ধারা, এর পেছনে আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা সামান্য কিছু পয়সার লোভে এদের তাবেদারি করে, পদলেহন করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটি কথায় কথায় আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়। আমাদের বিরোধী দল থেকে শুরু করে কিছু কিছু লোক তাদের কথায় খুব নাচন কোদন করছেন, উঠবস করছেন, উৎফুল্ল হচ্ছেন। তারা যে কোনো দেশের ক্ষমতা উলটাতে পারেন, পালটাতে পারেন। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো তো আরও বেশি কঠিন অবস্থার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। আ্যারাবিক স্প্রিং, ডেমোক্রেসি এ সব কথা বলে। যে সমস্ত ঘটনা ঘটাতে ঘটাতে এখন নিজেরাই নিজের প্রতি একটি প্যাচে পড়ে গেছে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে