বঙ্গবাজারে আগুন সিগারেট অথবা মশার কয়েল থেকে
১০ এপ্রিল ২০২৩ ২২:১৪
ঢাকা: বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে নয়, রাজধানীর বঙ্গবাজারে শপিং কমপ্লেক্সে সিগারেট অথবা মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) গঠিত তদন্ত কমিটির।
তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য জানায়, কমপ্লেক্সের আদর্শ ও মহানগর মার্কেটের মধ্যের কোনো জায়গায় আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট দায়ী নয় বলে অভিমত তাদের।
দোকান মালিক নেতাদের দাবি—গত ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সের আগুনে প্রায় তিন হাজার দোকান ও মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ওই দিন রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অঞ্চল-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীকে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটিতে আগুনের কারণ অনুসন্ধানের জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ রাখা হয়নি।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিরূপণ করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। গতকাল রোববার কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার দিন ধার্য থাকলেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সম্পূর্ণ না হওয়ায় আরও এক দিন সময় বাড়ানো হয়। আগামীকাল (মঙ্গলবার) প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে বলে তদন্ত কমিটি সূত্র জানিয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষী, ব্যবসায়ী, দোকান মালিক-কর্মচারী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির দুইজন সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, মহানগর মার্কেট সংলগ্ন আদর্শ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি এমব্রয়ডারি কারখানায় প্রথম আগুন লাগে। কারখানার কাছাকাছি কোনো বিদ্যুৎ বিতরণ বাক্স ছিল না।
তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য জানান, নিদির্ষ্ট কয়েকটি জায়গা ছাড়া পুরো মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। মার্কেট দুটির বিদ্যুতের লাইন সব সময়ই রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। শুধু নিরাপত্তা প্রহরীদের থাকার জায়গা, মসজিদ ও মার্কেট অফিসে লাইট ছিল।
তবে ইন্টারনেটের রাউটার চালু ছিল বলে তদন্ত কমিটির সদস্যদের জানিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য জানান, আদর্শ মার্কেটের চার তলায় নিরাপত্তা প্রহরীদের থাকার জায়গা রয়েছে। তাদের থাকার জায়গার নিচেই রয়েছে একটি এমব্রয়ডারি কারখানা ও একটি গোডাউন।
কমিটির সদস্যদের ধারণা, সেহরির সময় ভোর ৪টার দিকে চার তলা থেকে সিগারেটের কোনো ফিল্টার তৃতীয় তলায় পড়ে এমব্রডারি কারখানা অথবা গোডাউনে প্রথমে আগুন ধরে।
এ ছাড়া, নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার স্থানে জ্বলন্ত মশার কয়েল থেকেও আগুন লাগতে পারে বলেও ধারণা তদন্ত কমিটির।
কমিটির প্রধান ডিএসসিসি জোন-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা নাজনীন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা আমরা এখনও পাইনি। সেটি বাদে তদন্তের প্রায় সব কাজ শেষ করেছি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আমাদের পর্যবেক্ষণ জানাব।’
উল্লেখ্য, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে ওই তদন্ত কমিটিকে।
সারাবাংলা/এসবি/একে