স্বাধীনতা বিরোধীরা সাংবিধানিক সরকার গঠনে বাধা সৃষ্টি করছে
১০ এপ্রিল ২০২৩ ২২:২০
ঢাকা: বিএনপির ছত্রছায়ায় স্বাধীনতা বিরোধীরা সাংবিধানিক সরকার গঠনে বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, বিএনপি বারবার এই সংসদকে কলঙ্কিত করেছে। তারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এখনো তারা স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে ১৪৭ বিধিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্থাপিত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজনীতিতে বিএনপির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু বিএনপি সাধারণত অনৈতিক পথ অনুসরণ করে রাজনীতিতে মিথ্যাচার করছে।’ তিনি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কথা উল্লেখ করেন।
সাবেকমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অপর নাম, শেখ মুজিবুর রহমান- এটি একটি কঠিন সত্য। যে সত্য বারবার অন্ধকারকে ভেদ করে বাঙালির হৃদয়ে সূর্যালোক পৌঁছে দেয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উন্নয়নে বিপুল ত্যাগ স্বীকার করায় সংসদের অভ্যুদ্বয় এবং জাতির অস্তিত্ব একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিলেন এবং তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে কৃষি ও কৃষকের সাফল্য আজ দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।’ যার কারণে হেনরী কিসিঞ্জাররা বাংলাদেশকে আর ‘বটম লেস বাস্কেট’ বলতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় সংসদে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ‘অতীতে এই সংসদে জাতির পিতার হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাসসহ অনেক কালো আইন পাস হয়েছে। সংসদে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী, খুনি, সন্ত্রাসী, কালোবাজারিদের সদস্য করে আনা হয়েছে। সংসদের বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংস করার পাশাপাশি সংসদের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালী বিঘ্নিত করা হয়েছে। সংসদকে অকার্যকর করার সকল প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সংসদকে কার্যকর করতে সংসদীয় কমিটিগুলোকে সক্রিয় করেছেন। মন্ত্রীদের পরিবর্তে সদস্যদের সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করাসহ সংসদকে কার্যকর করার সব উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন।’
রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের কল্যাণে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। কিন্তু সামরিক ও স্বৈরশাসকরা গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছিল। এখনো স্বাধীনতা বিরোধীরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে অবহেলা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। বাংলাদেশকে তিনি এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছেন যে, বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের অনেক দেশ অনুকরণ করে।’ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম