Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আলুর চিপসে ভাগ্য বদল, স্বাবলম্বী গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার

মো. শামীম কাদির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১১ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৪৭

জয়পুরহাট: আলুর চিপস তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের কয়েকটি গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার। প্রায় ২৫ বছর ধরে তারা এই চিপস তৈরি করে আসছেন। কাজের ফাঁকে আলুর চিপস তৈরি করে আর্থিক স্বচ্ছলতা এনেছেন দরিদ্র নারী-পুরুষরা। আলু মৌসুমের তিন মাস কঠোর পরিশ্রমে তৈরি করা এসব চিপস বিক্রি হয় ঢাকাসহ সারা দেশে। শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামবাসী প্রথমে এ ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে এর প্রসার ঘটেছে আশপাশের কয়েক গ্রামে।

বিজ্ঞাপন

আলুর উৎপাদন মৌসুম শুরুর পর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত তিন মাস কঠোর পরিশ্রম করে তারা শত শত টন আলুর চিপস তৈরি করেন। নারীরা সংসারের সব কাজের ফাঁকে এই ব্যবসা করে সংসারের অভাব দূর করছেন।

সরেজমিনে জেলার আক্কেলপুর উপজেলার শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামসহ ৭টি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কয়েকশ’ পরিবারের নারী-পুরুষরা আলুর চিপস তৈরির কাজে ব্যস্ত। কেউ আলু সিদ্ধ করছেন, কেউ আলু কাটছেন, আবার কেউ কাটা আলুর চিপসগুলো রোদে শুকানোর জন্য বস্তার ওপর বিছিয়ে দিচ্ছেন। আর চিপস শুকানোর জন্য তারা ব্যবহার করেন নদীর পার ও মাঠের পরিত্যক্ত জমি। রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় আলুর চিপস। যা তেলে ভেজে মুখরোচক খাবার হিসেবে বিক্রি হয়। চাহিদা বেশি হওয়ায় গ্রামে দিন দিন এর প্রসার ঘটছে।

জানা যায়, এক মণ চিপস তৈরি করতে পাঁচ মণ আলুর প্রয়োজন হয়। আলুর দাম ও আনুসাঙ্গিক খরচসহ এক মণ চিপস বানাতে প্রায় দুই হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়। যা বিক্রি হয় ৪ হাজার টাকা। আর এজন্য সময় লাগে দুই দিনের মতো।

স্থানীয়রা জানান, এই এলাকার চিপসের অনেক জনপ্রিয়তা আছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারাবছর আলুর এগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। চিপস তৈরিতে পরিশ্রম হলেও বাজার ভাল থাকায় লোকসান হয়নি আজ পর্যন্ত। অন্যদিকে যাদের পুঁজি বেশি তারা বেশি করে আলু কিনে চিপস সংরক্ষণ করেন।

শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের আলুর চিপস ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন জানান, বর্তমানে তাদের দেখে চিপস তৈরির প্রসার ঘটেছে আশপাশের কয়েক গ্রামে। দিন-রাত তিন মাসের পরিশ্রমে তৈরি করা চিপস বিক্রি করে তাদের সংসার চলে সারা বছর। এক মণ চিপস বিক্রি করে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মতো লাভ হয়।

বিজ্ঞাপন

কেশবপুর গ্রামের জাবেদা বেগম বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। বেশি ট্যাকা না থাকায় হামরা বেশি করি আলু কিনতে পারি না। সরকার যদি কিস্তিতে ঋণ দেয় তাহলে ভালোই হতো।’

চকবিজলি গ্রামের হাফিজার রহমান বলেন, ‘বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে এ পেশায় এখন খুব একটা লাভ হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি সহযোগিতা পেলে চিপস তৈরির প্রসারতা বেড়ে যাবে।’

জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আহসান কবীর বলেন, ‘আক্কেলপুর উপজেলার ৭টি গ্রামে অধিকাংশ মহিলা সংসারের কাজের ফাঁকে আলুর চিপস তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চিপস তৈরির জন্য কৃষকের কাছ থেকে বড় বড় আলু বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে কিনে থাকেন, এতে কৃষকেরাও আলুর ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। যদি কেউ আলুর চিপস তৈরির ব্যবসার জন্য ঋণ নিতে চায় তাহলে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।’

সারাবাংলা/এমও

আলুর চিপস স্বাবলম্বী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর