আসছে বৈসাবি, পাহাড়ে বইছে উৎসবের আমেজ
১১ এপ্রিল ২০২৩ ১০:১৮
বান্দরবান: আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে বান্দরবানে বৈসাবি উৎসব শুরু হবে। এই উৎসবকে ঘিরে নতুন পোশাকসহ নানা কেনাকাটা, ঘরবাড়ি সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাহাড়িরা। জেলা শহরের মার্কেটগুলোতে পড়েছে কেনাকাটার ধুম। প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে এখন পাহাড়জুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।
পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছর বরণে আয়োজিত উৎসবকে, পাহাড়ে ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই, চাকমা ভাষায় বিজু বলা হয়। পাহাড়ের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির এই আয়োজনকে একসঙ্গে বলা হয় বৈসাবি। বৈচিত্র্যময় ভিন্ন ভিন্ন কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও সামাজিক বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় এই বৈসাবি উৎসব পালন করে থাকে পাহাড়ে বসবাসরত ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়।
এ উৎসবে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ। এর পাশাপাশি গানে আর নাচে পরস্পরকে ভালোবাসা ও শুভেচ্ছায় সিক্ত হন তারা। উৎসবকে স্বাগত জানাতে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছে বান্দরবান জেলায় বসবাসরত ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষ।
এদিকে সাংগ্রাই উপলক্ষ্যে বান্দরবানের বার্মিজ মার্কেটগুলোতে পাহাড়ের দূরদূরান্ত থেকে পাহাড়ি নারী-পুরুষরা এসে বার্মিজ থামি, চন্দন এবং প্রসাধনী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এবার বিক্রি ভালো হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও। পাশাপাশি সাংগ্রাই সন্নিকটে চলে আসায় ইতোমধ্যে সব কেনাকাটা শেষ করতে পেরে ক্রেতারাও খুশি।
পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত পাহাড়িরা বছর শেষের দিন এবং নতুন বছরের প্রথম তিন দিন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর মাধ্যমে বিদায়ী বছরের সকল পাপাচার, গ্লানি ধুয়েমুছে এবং নতুন বছরকে বরণ করে নিতে যুগ যুগ ধরে বৈসাবি উৎসব পালন করে।
সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং ওয়াই মারমা বলেন, ‘১৩ এপ্রিল সকালে বান্দরবান শহরে রাজার মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আমাদের উৎসব উদযাপন কমিটি থেকে এবারে তিন দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।’
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সাঙ্গু নদীতে বুদ্ধস্নান, সমবেত প্রার্থনা, জলকেলি, পিঠা তৈরি, হাজারো প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বয়স্ক পূজা এবং সম্প্রদায়গুলোর নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বান্দরবানবাসীর সবচেয়ে বড় উৎসব সাংগ্রাইকে ঘিরে উৎসবের প্রতিটি স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।’
সারাবাংলা/এমও