Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্থবিরতা কাটছে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মার্চে রেকর্ড আমদানি

ইমরান চৌধুরী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১০:১৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: টানা পাঁচ মাসের স্থবিরতা কাটিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। বন্দর ও কাস্টমসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে আমদানিতে আগের মাসের চেয়ে ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে নানামুখী বিধিনিষেধের কারণে ঋণপত্র ও ডলার সংকটে গত অক্টোবর থেকে দেশে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ধস নামে। অক্টোবর থেকে আমদানি খাতে নিম্নমুখী ধারা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তবে মার্চে এসে রমজানের ভোগ্যপণ্যকে কেন্দ্র করে আমদানি বাড়তে থাকে।

বিজ্ঞাপন

আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েক মাসের স্থবিরতা কাটিয়ে মার্চ মাসে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। তিনমাস ধরে রাজস্ব আদায় ৪ হাজার কোটি টাকার ঘরে থাকার পর চতুর্থ মাসে এসে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১ লাখ ৭৭ হাজার আমদানি-রফতানির শুল্ক নথির বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে ১ লাখ ৬২ হাজার আমদানি রফতানির শুল্ক নথির বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ হাজার ২২৭ কোটি টাকা ও ফেব্রুয়ারি মাসে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় মার্চ মাসে যেমন তিন লাখ মেট্রিক টন পণ্য বেশি আমদানি হয়েছে, তেমনি ৭৫০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সি সারাবাংলাকে বলেন, ‘চার মাসের তথ্য পর্যবেক্ষণ করে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, ডিসেম্বর-জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হয়েছে, তার তুলনায় মার্চ মাসে আমদানি অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য মার্চ মাসে আমরা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে পেরেছি।’

বিজ্ঞাপন


চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চলতি অর্থবছরে ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত ৯ মাসে আদায় হয়েছে ৪৪ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা।

কাস্টমস কর্মকর্তা বদরুজ্জামান মুন্সি সারাবাংলাকে বলেন, ‘মার্চ মাসের মতো যদি এপ্রিলে ও মে মাসে আমদানি ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের যে প্রভাব ছিলো, সেটা আস্তে আস্তে কাটিয়ে উঠছে বিধায় আমদানির পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।’

এদিকে আমদানি-রফতানিতে স্থবিরতার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার উঠানামা অর্ধেকে নেমে এসেছিল। কিন্তু গত মার্চে রমজানের পণ্য দেশে আসা শুরু হতেই চাঙ্গা হতে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর।

মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর ৯৯ হাজার আমদানি এবং ৫৫ হাজার রফতানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪৭ হাজারের বেশি। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসে আমদানি কনটেইনার ছিল মাত্র ৭৮ হাজার।

এদিকে এক মাসের ব্যবধানে আমদানি কনটেইনারের ক্ষেত্রে সামান্য অগ্রগতি হলেও রফতানি কনটেইনারের ক্ষেত্রে ২৩ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে ১৯টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে। মার্চ মাসেই অফডকগুলোতে ৫১ হাজার আমদানি এবং ১৭ হাজার রফতানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো অচলাবস্থা ছিল না। আমরা সময়মতো ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পণ্য হ্যান্ডলিং করেছি। আমাদের রাজস্বও প্রতিনিয়ত বাড়ছে।’

সারাবাংলা/আইসি/এমও

চট্টগ্রাম কাস্টমস চট্টগ্রাম বন্দর রেকর্ড আমদানি স্থবিরতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর