করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব এফবিসিসিআইয়ের
১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৫৯
ঢাকা: ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট সামনে রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৪৩তম সভায় এ প্রস্তাব দেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এনবিআর ও এফবিসিআই যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত আছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এ সময় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শিল্প পরিচালনার ব্যয় কমানোর জন্য আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়করের (এআইটি) হার ধাপে ধাপে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। বর্তমানে অগ্রিম আয়করের হার ৫ শতাংশ। উল্লেখ্য যে, অগ্রিম আয়করের হার ৩০ জুন ২০১০ পর্যন্ত ৩ শতাংশ ছিল।’
তিনি বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয়, মূল্যস্ফীতি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা এবং মহিলা ও সিনিয়র নাগরিকদের জন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি।’
এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, ‘আয়কর আইনের মৌলিক বিষয়গুলি আবশ্যিকভাবে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম চর্চা এবং দেশের বিনিয়োগ চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি যুগোপযোগী আয়কর আইন প্রণয়ন করা। দেশি বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শুল্ক ও কর সুবিধার সমতায়ন এবং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অনুসৃত ‘আয় যেখানে কর সেখানে’ নীতিমালা গ্রহণ করা। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি এবং ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি করার জন্য সকল উপজেলা পর্যায়ে আয়কর দফতর স্থাপন করা। এছাড়া আরও বেশ কিছু প্রস্তাব রয়েছে।’
এদিকে আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে আরও বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে সংগঠনটি। এফবিসিসিআইয়ের প্রস্তাবনাগুলো হলো- শুল্কায়ন, পণ্য খালাস এবং সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ত্বরান্বিত করার জন্য অনলাইন প্রক্রিয়াসহ ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (NSW) সংক্রান্ত কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন করা। উৎপাদন, আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে আরোপিত সকল শুল্ক ও কর এবং খালাস প্রক্রিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, বিশ্ব কাস্টমস সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক উত্তম ব্যবস্থাবলীর সঙ্গে সংগতিপূর্ন করা।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যকর এবং জোরদার করে ফাঁকি দেওয়া কর আদায়ের জন্য প্রণোদনা হিসাবে নিয়মিত স্কেলের বেতন ভাতাদির অতিরিক্ত হিসেবে কর কর্মকর্তাকে পুরস্কার দেওয়ার বিধান বাতিল করা। এতে কর আদায়ে হয়রানি বন্ধ হবে বলে আশা এফবিসিসিআইয়ের।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, রাজস্ব আহরণ এবং রাজস্ব পলিসি কার্যক্রম পৃথক করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বিভাগ গঠন করা। রফতানি বাণিজ্যে বার এবং সময় কমানোর জন্য রফতানি পণ্যে ব্যবহৃত আমদানিকৃত এবং দেশীয় উপকরণের উপর পরিশোধিত সকল শুল্ক ও কর পূর্ব স্থিরকৃত হারে রফতানি মূল্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে একক বিভাগ মারফত স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাৎক্ষণিক ফেরত প্রদান করা এবং খরচ ও সময় কমানোর জন্য রফতানিখাতসহ শিল্প বানিজ্য খাতে উৎস ও আগাম কর ফেরত দেওয়ার পরিবর্তে রহিত করা। উৎপাদনশীল এবং রফতানিমুখী গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র শিল্পসহ নারী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে খাতভিত্তিক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যৌথ ব্যবস্থাপনায় বন্ডেড ওয়্যার হাউজ এবং বিতরণ ব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে ই-কমার্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম করা। উৎপাদন এবং রফতানি বৃদ্ধির সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট সকল রফতানি এবং শিল্প খাতে করমুক্ত রেয়াতি হারে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি সরবরাহের সংস্থান করা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ