Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাহাড়ে পাজনের আতিথেয়তা

প্রান্ত রনি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৪২

রাঙ্গামাটি: আজ বিজু; চাকমা জনগোষ্ঠীর তথা পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব। বিজু উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো পাজন। প্রায় ২০-৩০ পদের সবজি দিয়ে তৈরি এই খাবারের নাম পাজন। বিজু উৎসবে প্রতিটি ঘরে গেলেই মিলবে পাজন। শহর কিংবা দুর্গম গ্রাম; পাহাড়ের সবখানেই চলছে পাজনের আতিথেয়তা।

রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- তিন পার্বত্য জেলার প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিষু, বিহু, সাংক্রান। বিশেষত রাঙ্গামাটি জেলার চাকমা জনগোষ্ঠীর মানুষের বেশিরভাগ বসবাস হওয়ায় এখানে বিজু উৎসবই সরগরম।

বিজ্ঞাপন

আনুষ্ঠানিকভাবে তিনদিনের বিজু উৎসব হলেও চলে আগে-পরে মিলে দুই সপ্তাহের নানান আচার-অনুষ্ঠান আর মেলা। বুধবার (১২ এপ্রিল) ছিল চাকমাদের তিনদিনের বিজু উৎসবের প্রথম দিন ফুল বিজু। এদিন দেশ-জাতির হিতসুখের আশায় গঙ্গা দেবীর কাছে ফুল নিবেদন করেন তারা। আজ মূল বিজু বা বিজু উৎসবের মধ্যম দিন (চৈত্র সংক্রান্তি)।

ফুল বিজুর দিন সকালে নদীতে ফুল ভাসানোর আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাসায় ফিরে বয়োজ্যেষ্ঠদের স্নান করান তরুণ-তরুণীরা। আর বিজুর সকাল থেকেই একে অন্যের ঘরে যান, চলে পাজনের আতিথেয়তা। শুধু কেবল পাজনই নয়। পাজনের সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরণের ফল, পিঠা, নুডুলস আর বিশেষ ধরণের পানি ‘জগরা’। তবে তরমুজ একেবারেই প্রায় সব ঘরে পাজনের অনুষঙ্গ হিসাবে থাকেই।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা মাসের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ, এদিন চাকমাদের গজ্জেপজ্জ্যের দিন। তবে বিজু দিনের এই আতিথেয়তা চলে কোনো কোনো ঘরে সপ্তাহ পর্যন্তও। রাঙ্গামাটিতে বসবাসরত চাকমাদের বছরব্যাপী নানান অনুষ্ঠান থাকলেও সব কিছুকেই যেন ছাড়িয়ে যায় বিজু উৎসব।

বিজ্ঞাপন

এই উৎসবের মধ্য দিয়ে পুরানো বছরের দুঃখ, গ্নানি, জরা ভুলে নতুন জীবনের স্বপন দেখেন পাহাড়ের এইসব মানুষ।

বিজু উৎসবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাসায় ঘুরছেন আর পাজন আতিথেয়তা নিচ্ছেন চাকমা যুবক মিঠু চাকমা। তিনি বলেন, ‘আজ সকাল থেকেই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বাসায় বাসায় যাচ্ছি। খেতে খেতে একেবারে ক্লান্ত বলা যায়। তবে আরও ঘুরে বেড়াব। বিজুর আনন্দের কমতি রাখা যাবে না।’

আরও কয়েকজন যুবক মিথুন, দীনেশ ও নিপায়ন চাকমাও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা বলেন, বন্ধুরা মিলে বিভিন্ন বাসায় বাসায় যাচ্ছি। পাজন খাচ্ছি। বিজুর আনন্দ সত্যিই অতুলনীয়।

অমৃত লাল চাকমা বলেন, ‘বিজুর দিনে সবাই বাসায় আসে। ভালো লাগে। বছরের একটা দিন সবাই মিলে একত্রিত হই। আনন্দ উল্লাস করি।’

সারাবাংলা/ইআ

চৈত্র সংক্রান্তি পাজন পাহাড়ের বিজু উৎসব বিজু

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর