বৈশাখী মেলায় জমজমাট ভাব নেই
১৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৩৭
ঢাকা: রোজায় এবার বৈশাখী মেলায় জমজমাট ভাব নেই। খুব বেশি জায়গায় বসেওনি মেলা। রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে বৈশাখী মেলা বসেছে। সেখানে দেখা গেছে, লোকজনের আনাগোনা খুবই কম। তবে মেলায় বাংলার প্রায় সব ঐহিত্যের দেখা মিলেছে। হাত পাখা, বাঁশি ও টেপা পুতুল চোখে পড়েছে এই মেলায়। সেখানে হস্তশিল্পের পসরাও দেখা গেছে। শিশুরা যেন আনন্দে মেতে উঠতে পারে সেজন্য রয়েছে নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইড।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের বিকাশে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের মাঠে বৈশাখী মেলা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
একতারা, বাঁশি, হাতপাখা ও বাঁশের বাস্কেট নিয়ে দোকান সাজিয়েছেন এলিফ্যান্ট রোডের মো. লাল মিয়া। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি দুইবার বিসিকের পুরস্কার পেয়েছি। এখানে ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় বিভিন্ন মানের বাঁশি বিক্রি হচ্ছে। দোকানটিতে তালপাতার হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।’
তিনি বলেন, ‘বিক্রি আগের মতো নেই। বৈশাখী মেলায় বিক্রি বা মানুষের আনাগোনা আগের মতো নেই। শিল্প এখন হারিয়ে যাচ্ছে।’
মেলায় টেপা পুতুল ও টেরাকোটা শিল্পী শ্রী সুবোধ কুমার পালের দোকান রয়েছে। রাজশাহী থেকে তারা টেপা পুতুল নিয়ে এসেছেন। দোকানটিতে কথা হলে সুবোধ কুমার পালের স্ত্রী বিজলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ২০ বছর ধরে টেপাপুতুল বানাই। সবাই মিলে মাটির পুতুল তৈরি করি। এটেল মাটি দিয়ে পুতুলসহ বিভিন্ন খেলনা বানিয়ে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পুতুল ভালোই বিক্রি হয়। সব জায়গাতেই স্যারদের (বিসিক) সহযোগিতা রয়েছে। নতুবা আমরা টেপা পুতুলের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারতাম না। ২০ থেকে ১৮০ টাকা করে বিভিন্ন টেপা পুতুল বিক্রি করছি।’
বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের একটি দোকানে কথা হলে সুজিত বলেন, ‘এবারের মেলায় তেমন ক্রেতা নেই। অল্প মানুষ যারা এসেছে তারা ঘুরে চলে যাচ্ছে, বেশি কেনাকাটা করছেন না।’
মেলায় গুলিস্তান থেকে এসেছেন জসিম উদ্দিন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে মেলাতে প্রতিবছরই আসি। মেলা থেকে অনেক কিছু কেনাকাটা করি। রোজার কারণে এবার পরিবার দেশের দেশের বাড়িতে। তাই তাদের মেলায় নিয়ে আসা হয়নি। রোজার কারণে এবার মেলা আগের মতো জমজমাট নয়। মেলায় আসা সাধারণ মানুষের আনাগোনা খুবই কম।’
নাগরদোলায় আনন্দে মাতোয়ারা ছিলো ফার্মগেট থেকে বাবার সঙ্গে আসা শিমু। সারাবাংলাকে শিশুটি বলে, ‘মেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে। নাগরদোলায় চড়ে আরও আনন্দ পেয়েছি। বাবা নানা ধরনের খেলনা কিনে দিয়েছে।’
শিমুর বাবা রফিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছে। ওর মাও এসেছে। পরিবার নিয়ে বৈশাখের মেলায় ঘুরতে আমাদের বেশ ভালো লাগছে। তবে এবার মেলা সেই অর্থে জমজমাট নয়।’
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলা আয়োজন করা হয়েছে। ২৮ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ থেকে শুরু হওয়া এ বৈশাখী মেলা চলবে ৭ বৈশাখ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে