২০ এপ্রিল থেকে ৩ মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ
১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৩১
রাঙ্গামাটি: ২০ এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিনমাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন। হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতি বছরের মতো এবারও তিনমাস সব ধরনের মাছ শিকার, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। এ সময়ে বন্ধ থাকবে স্থানীয় পর্যায়ের বরফকলসমূহ, নিয়মিত হ্রদ টহলে থাকবে বিএফডিসির মনিটরিং টিম।
জেলাপ্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সোমবার (১০ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি এ সংক্রান্ত এক বৈঠক থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন মাছ আহরণের ওপর নির্ভরশীল জেলেদেরকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের গুরুত্বপূর্র্ণ স্থানে নৌ পুলিশ মোতায়েন করা হবে। হ্রদে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এ বছর ১০ দিন আগে থেকে কেন মাছ আহরণ বন্ধ- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো এবারও সব নিয়মকানুন ও সিদ্ধান্ত একই রয়েছে। তবে কাপ্তাই হ্রদের পানি আশানুরূপ কমে যাওয়ায় ১০ দিন আগে থেকে মাছ আহরণ বন্ধ করা হয়েছে।’
এদিকে, পানি স্বল্পতার কারণে কাপ্তাই হ্রদে তিনমাসের নিষেধাজ্ঞা গত বছর পহেলা মে থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত তিনমাস ১৭ দিন করা হয়েছিল। এর আগের মৌসুমেও একই কারণে তিন মাসের নির্ধারিত নিষেধাজ্ঞা একমাস বর্ধিত করে চার মাস হয়েছিল। তবে এই দুই মৌসুমে বর্ধিত সময়ের পরও পানিস্বল্পতার মধ্য দিয়ে মাছ আহরণ শুরু হওয়ায় ভাটা পড়ে বার্ষিক মৎস্য অবতরণে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৬ সালে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৬২ সালে বাঁধ নির্মাণ শেষে রাঙ্গামাটির বিশাল এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয় কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদ। এই হ্রদই বর্তমানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়গুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ। আয়তন প্রায় ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর। যা বাংলাদেশের পুকুরসমূহের মোট জলাশয়ের প্রায় ৩২ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ মোট জলাশয়ের প্রায় ১৯ শতাংশ।
১৯৬১ সালে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এ হ্রদের সৃষ্টি হলেও এটি রাঙ্গামাটিতে মৎস্য উৎপাদন ও স্থানীয় জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে আসছে।
সারাবাংলা/ইআ