Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ ঘাটতি ৩০০ মেগাওয়াট, পানি ১৩ কোটি লিটার

ইমরান চৌধুরী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ এপ্রিল ২০২৩ ২১:১৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্মরণকালের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি হওয়া তীব্র গরম, সঙ্গে বিদ্যুৎ আর পানির সংকট— এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে দিন কাটছে চট্টগ্রাম নগরবাসীর। কয়েকবছর ধরে প্রায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে অভ্যস্ত মানুষকে এখন দিনরাতে লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সঙ্গে ওয়াসার পানির সরবরাহ কমে যাওয়ায় নগরবাসীর এখন হাঁসফাঁস অবস্থা।

আধাঘণ্টা বিদ্যুৎ পেলে এরপর ঘণ্টাখানেক থাকতে হচ্ছে বিদ্যুৎবিহীন। গভীর রাতে অন্তত তিন-চারবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। গরমে ঘুম নেই তাদের চোখে, যাদের জেনারেটর, আইপিএস’র মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাওয়ার সুযোগ নেই। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ওয়াসার পানির গণলাইনগুলোতে আবারও বাড়ছে কলসির সারি, যে দৃশ্য গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

নগরীর সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মান্নান সারাবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল চার ঘণ্টার মতো। একবার গেলে আসে তিন ঘণ্টা পর। এসে ১০-১৫ মিনিট পর আবার চলে যায়। গরমে শুধু ঘুমানোর কষ্ট হচ্ছে তা নয়, ইফতার-সেহরিও ঠিকমতো হচ্ছে না।’

হালিশহরের বাসিন্দা খালিদ মিরাজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এত গরম জন্মের পর থেকে আর পাইনি। এক মিনিট ফ্যান বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। কিন্তু কীভাবে, বিদ্যুৎ একবার গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যায়। ওয়াসার পানি নিয়ে এতদিন সমস্যা ছিল না। এখন দিনে মাত্র একবার আসে। রান্নাবান্না, গৃহস্থালি কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ এবং আরও কয়েকটি থেকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে লোডশেডিং বেড়েছে। চট্টগ্রামে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি আছে।

বিজ্ঞাপন

রাউজান তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৪২০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে। পটিয়ার শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ডুয়েল-ফুয়েল পদ্ধতির ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও বন্ধ। হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ আছে। ১১০ মেগাওয়াটের এনার্জি প্যাক কেন্দ্র উৎপাদনে নেই দীর্ঘসময় ধরে। চট্টগ্রামে বেসরকারিভাবে নির্মিত ছোট ছোট আরও ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎও পাওয়া যাচ্ছে না।

চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের (দক্ষিণ অঞ্চল) প্রধান প্রকৌশলী এম রেজাউল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ, তাই বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রামে ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট। প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। দুই-একদিনের মধ্যেই এটি ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

এদিকে তীব্র গরমের চট্টগ্রামে পানির চাহিদা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৮ কোটি লিটার। ওয়াসার উৎপাদন সক্ষমতা ৩৫ কোটি লিটার। প্রায় ১৩ কোটি লিটার ঘাটতি নিয়ে ওয়াসাকে রেশনিং করে পানির চাহিদা মেটাতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি কম ছাড়ায় হালদা নদীতে মিঠা পানির পরিমাণ কমে গেছে। হালদায় উজানের পানির চাপ কমে যাওয়ায় কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের লবণাক্ত পানি হালদায় প্রবেশ করছে। লবণাক্ত পানি প্রক্রিয়াজাত করে খাওয়ার উপযোগী করতে প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা সময় বেশি যাচ্ছে। এতে দুই কোটি লিটার পানি নষ্ট হচ্ছে। আবার কর্ণফুলী নদীতে পানি কমে যাওয়ায় শ্যাওলা জমে ফিল্টার মেশিনে ময়লা ধরে যাচ্ছে। সেটি পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রতিদিনই ১০-১৫ কোটি লিটার পানির অপচয় হচ্ছে।’

সারাবাংলা/আইসি/একে

চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ মেগাওয়াট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর