Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সংবিধান সংস্কারের বিকল্প নাই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৫৭

ঢাকা: মুজিবনগর সরকার দিবস উপলক্ষে এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তরা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে সরকারের ক্ষমতাকে জবাবাদিহিতার আওতায় আনতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিদ্যমান সাংবিধানিক সংকট উত্তরণে গণতান্ত্রিক শক্তির করণীয়’ শীর্ষক শিরোনামে গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব ও গণপরিষদ আন্দোলনের সমন্বয়ক মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে সভায় লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন রাষ্ট্রচিন্তা জার্নালের সম্পাদক হাবিবুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এক গভীর ও নজিরবিহীন রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে। বিদ্যমান সংবিধানকে অক্ষুণ্ণ রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন তো দূরে থাক, কোনো ধরনের পরিবর্তনই সম্ভব নয়।

আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, বাসদ-মার্কসবাদী দলের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, নগর পরিকল্পনাবিদ নিয়াজ রহমান প্রমুখ।

সভায় লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এই সংবিধানে রাষ্ট্র ও সরকারকে একাকার করে ফেলা হয়েছে এবং এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই সরকারি দল এবং রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। ফলে সরকার ও সরকারি দলের কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিকার পাওয়ার পথও সাংবিধানিকভাবে রুদ্ধ করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বাসদ-মার্কসবাদী দলের সমন্বয়ক মাসুদ রানা তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে মনে করি, সকল গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া দরকার।’

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমান সংবিধান জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল। এর সংস্কার করে এই সংবিধানকে গণতান্ত্রিক করতে হবে।’ বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীই এখন রাষ্ট্র। তার কথার বাইরে এখন কোনো কিছু হওয়ার জো নাই। এই সরকারকে ঐক্যবদ্ধভাবে ‘না’ বলতে হবে।’

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম তার বক্তব্যে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল যে প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পরবর্তী সংবিধান তৈরি হয় তার সাথে বেঈমানি করে। বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশের মানুষকে শতভাগে বিভক্ত করে দিশেহারা প্রাণে পরিণত করা হয়েছে। মানুষের নুন্যতম রাজনৈতিক অধিকার ‘ভোটের অধিকার’ও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আর যে দেশে মানুষের ভোটের অধিকার থাকে না তার আর কোনো অধিকারই থাকে না।’

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান সরকার মুজিবনগর সরকার দিবস পালন করে না। তাজউদ্দিন আহমদকে পরিত্যাক্ত ব্যক্তিতে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মূল কমিটমেন্টকে বর্তমান সংবিধানে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা হয়েছে। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত। বাহাত্তরের সংবিধানের বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। এখন পাবলিক রাইটস নিশ্চিত করতে সংবিধানের পরিবর্তন করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আগামী মে মাস থেকে আমরা দেশব্যাপী এই ক্যাম্পেইন চালাতে চাই যে, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সংবিধানের সংস্কার করার কোনো বিকল্প নাই। বাংলাদেশকে একটি জবাবদিহিমূলক মানবিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সংবিধান সংস্কার করতে গণপরিষদ (সংবিধান সভা) নির্বাচন লাগবে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

মুক্তিযুদ্ধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর