হাসানপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ লোডশেডিং!
১৮ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৩১
কুমিল্লা থেকে ফিরে: রোববার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ১২ মিনিটের দিকে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেন পাহাড়িকা এক্সপ্রেস নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলস্টেশন অতিক্রম করে।
ঠিক তার একটু পরেই অর্থাৎ ৬টা ২০ মিনিটের দিকে হাসানপুর রেল স্টেশনের লুপ লাইনে প্রবেশ করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি কনটেইনারবাহী ট্রেন।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী বিরতিহীন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন গুণবতী রেল স্টেশন অতিক্রম করে ৬টা ৩৪ মিনিটে। তবে তার আগে ৬টা ২৫ মিনিটেই হাসানপুর রেলস্টেশন থেকে গুণবতীকে লাইন ক্লিয়ার দেওয়া হয়।
এমন অবস্থায় ৬ টা ৪০ মিনিটের দিকে কোনো সিগন্যাল ছাড়াই রেলস্টেশন প্রবেশ করে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন। কনটেইনারবাহী ট্রেন যে লুপলাইনে ছিল সেখানেই প্রবেশ করে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসও।
সরেজমিনে হাসানপুর রেলস্টেশন ঘুরে স্থানীয়দের পাশাপাশি তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যখন দুর্ঘটনা ঘটে তার ঘণ্টা খানেক আগ থেকেই স্টেশনে ছিল লোডশেডিং। স্টেশনের বিপরীত মুখে থাকা বাজার সংলগ্ন মসজিদে অবশ্য তখন বিদ্যুৎ ছিল। সেখান থেকে মাইকে দুর্ঘটনার বিষয়ে জানানো হলে সঙ্গে সঙ্গে স্টেশনেও বিদ্যুৎ সংযোগ চলে আসে। তবে এ সময় স্টেশন মাস্টার সেখানে আর ছিলেন না।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) ও মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিনে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে গঠিত তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৫-৪৫ মিনিট থেকে ৬-৪৫ মিনিট পর্যন্ত ১ ঘণ্টা ওই লাইনে বিদ্যুৎ ছিল না। এ সময় লোডশেডিংয়ের কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়ে স্টেশনের প্যানেল বোর্ড। সাধারণত বিদ্যুৎ না থাকলেও জেনারেটর বা আইপিএসের বেকাপের মাধ্যমে স্টেশনের প্যানেল বোর্ড চালানো হয়ে থাকে।
তবে হাসানপুর রেল স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার দিন হাসানপুর স্টেশন এলাকায় দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় অকার্যকর হয়ে পড়ে প্যানেল বোর্ড। এ অবস্থায় ম্যানুয়াল সংকেতব্যবস্থা চালু করা হয়। কিন্তু ট্রেন চালক তা নজরে আনেননি। তাছাড়া কোনো ধরনের বিকল্প ব্যবস্থাও ছিল না প্যানেল চালু রাখার জন্য। দীর্ঘসময় ধরে আইপিএসের অকেজো ব্যাটারি পরিবর্তন করে দেওয়ার আবেদন জানানো হলেও তা করা হয় নি।
ফলশ্রুতিতে ঝুঁকির সঙ্গেই হাসানপুর স্টেশনে কাজ চালাচ্ছিল স্টেশন মাস্টার ও অন্যান্যরা। তবে রোববার (১৬ এপ্রিল) আর শেষ রক্ষা হয় নি।
প্যানেল বোর্ডের কাজ কী?
রেলস্টেশনের প্যানেল বোর্ডের মাধ্যমে মূলত ট্রেনের গতিবিধি, সিগন্যাল, কোন লাইন দিয়ে প্রবেশ করবে বা কোন লাইন দিয়ে স্টেশন পার করবে তার নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া সিগন্যাল বারে সংকেতও প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। যদি কোনো কারণবশত প্যানেল বোর্ড অকার্যকর বা অচল হয়ে পড়ে তবে সংকেতব্যবস্থা নিজে থেকেই লাল বা ডার্ক হয়ে যায়। এমন অবস্থায় ট্রেন চালক বুঝে নেন সেই স্টেশনে কোনো সমস্যা হয়েছে। আর তাই সেই স্টেশন দিয়ে সরাসরি যাওয়া যাবে না।
প্যানেল বোর্ড অকার্যকর থাকলে করণীয়
প্যানেল বোর্ড অকার্যকর হয়ে থাকলে পয়েন্টসম্যান নিজেই লাইন প্রস্তুত করেন। এক্ষেত্রে কোনো লাইন দিয়ে ট্রেন যাবে সে বিষয়ে স্টেশনমাস্টারের দেওয়া নির্দেশনামূলক কাগজ চালকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় করণীয় বিষয়ে হাসানপুরের আগে অবস্থিত গুণবতী স্টেশনের মাস্টার শেখ আনোয়ার বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে প্যানেল বোর্ডে সমস্যা হতেই পারে। মনে করেন হাসানপুর যদি প্যানেল বোর্ডে কাজ করে তখনই আমরা কারিগরিভাবে একটা ব্লক দেই।
তিনি বলেন, ‘এই ব্লকে বোঝানো হয় লাইন ক্লিয়ার দেওয়ার বিষয়ে। কারিগরিভাবে ওই সংকেতে লাইন ক্লিয়ার হয়। তখন সেটি গ্রান্ট করলে আমাদের সিগন্যাল হয়। যদি প্যানেল বোর্ডে কোনো কাজ না করে তখন একটা নির্দিষ্ট প্রাইভেট নম্বর দেওয়া হয়। আমরা সেটি লিখে দেই। এক্ষেত্রে বলা হয়, আপনার প্রাইভেট নম্বর এতো। আপনি রেড সিগন্যালের মধ্যে গুণবতী স্টেশন অতিক্রম করলেন। অর্থাৎ সামনে একটা সিগন্যালের মধ্যে ডেঞ্জার থাকবে। এক্ষেত্রে এলএম পরবর্তী স্টেশনে ক্লিয়ারেন্স না পেলে আউট লাইনে বা স্টেশনের আগে দাঁড়িয়ে সিগন্যালের অপেক্ষা করবে।
তবে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক (লোকোমাস্টার) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সিগন্যালবারে কোনো বাতি জ্বলতে আমি দেখিনি। সেখানে কোনো ধরনের লাল, নীল বা হলুদ কোনো লাইটই জ্বলছিল না।’
গুণবতী স্টেশনে লাইন ক্লিয়ার না দিলে এড়ানো যেত দুর্ঘটনা
গুণবতী স্টেশন থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসকে লাইন ক্লিয়ার না দিলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, রেল পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী, পয়েন্ট থেকে ২০০ গজ পর্যন্ত রেললাইনে কিছু থাকতে পারবে না। আর তাই সোনার বাংলা ট্রেনটি গুণবতী স্টেশনে রেখে দিলেই হতো। এক্ষেত্রে উল্লেখ করতে হবে যে সোনার বাংলা ট্রেনের চালকের অবশ্যই ভুল ছিল। তিনি ডার্ক পয়েন্ট দেখার পর ট্রেনটি থামানোর প্রয়োজন ছিল। তিনি যখন খেয়াল করলেন তখন ব্রেক করেছেন, কিন্তু তা অনেক দেরি হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে স্টেশন মাস্টারেরও অবশ্যই দায় রয়েছে।
তবে গুণবতী স্টেশনের মাস্টার শেখ আনোয়ার বলেন, আমাকে লাইন ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয় ৬টা ২৫ মিনিটের দিকে। তাও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস আমাদের স্টেশন লিভ করে ৬টা ৩৪ মিনিটে।
যা বলছে হাসানপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ?
হাসানপুর রেলস্টেশনে স্টেশন মাস্টার উপস্থিতি না থাকলেও সেখানে ছিলেন সহকারি স্টেশন মাস্টার আরশেল আজিম।
সিগন্যালবারে কেনো কোনো লাইট জ্বলছিল না?- এমন প্রশ্নের উত্তরে হাসানপুর রেল স্টেশনের সেই সময় দায়িত্বে থাকা সহকারী স্টেশন মাস্টার আরশেল আজিম বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে সিগন্যাল পয়েন্টের বারে কিছু জ্বলছিল না। একে বলা যায় ডার্ক অবস্থায় ছিল।
এমন অবস্থায় করণীয় কী থাকে কর্মকর্তাদের?- জানতে চাইলে আরশেল আজিম বলেন, স্টেশনের কাছে যে সিগন্যাল পয়েন্ট থাকে সেটাকে হোম পয়েন্ট বলা হয়ে থাকে। লোডশেডিংয়ের কারণে যদি বিদ্যুৎ না থাকে তবে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে সিগন্যাল ক্লিয়ার দেওয়া হয়ে থাকে। স্টেশন থেকে একজন মেসেঞ্জার প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সেই সিগন্যাল পয়েন্টে যাচ্ছিল। কিন্তু সেই সিগন্যাল পয়েন্ট ও হোম পয়েন্ট দুইটাই ক্রস করে ফেলে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। আর সেভাবেই লুপ লাইনে প্রবেশ করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ‘সোনার বাংলা আসার আগে কনটেইনারবাহী ট্রেনটি লুপ লাইনে প্রবেশ করেছিল। তাই সিগন্যাল পয়েন্ট লুপ লাইনের জন্য সেট করা ছিল। নতুন করে যেহেতু সিগন্যাল দেওয়া হয়নি, তাই স্বাভাবিকভাবেই সোনার বাংলা ট্রেনটি লুপ লাইনে চলে এসে মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়।’
জেনারেটর চালুর জন্য ছিল না লোকবল
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য জানায়, লোডশেডিংয়ের কারণে হাসানপুর স্টেশনের প্যানেল বোর্ড অকার্যকর হয়ে পড়ে। ব্যাকআপ ব্যাটারির চার্জ ছিল না। কোনোভাবে যদি জেনারেটরও চালু থাকত তবে প্যানেল বোর্ড কার্যকর থাকত। কিন্তু সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বরত কর্মী বিকেল পাঁচটার পর অফিসে ছিলেন না। এতে জেনারেটর চালুর জন্য লোকবল ছিল না। আর তাই ইতোমধ্যেই স্টেশনের সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের কর্মী সিগন্যাল মেইনটেইনার আবদুল ওয়াহেদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ট্রেন চালকেরও ছিল গাফিলতি
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, শুধুমাত্র স্টেশন মাস্টার বা প্যানেল বোর্ডের কারণেই নয় বরং এর সঙ্গে জড়িত ট্রেন চালকের গাফিলতিও। ট্রেন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ীও বলা যায়, একক কারণে সচরাচর ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে না। একটি দুর্ঘটনার নেপথ্যে থাকে একাধিক ব্যক্তির ভুলের সমন্বয়। একইভাবে সোনার বাংলা ট্রেনটি পেছন থেকে এসে মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেওয়ার পেছনেও একাধিক ব্যক্তির ভুল রয়েছে।
তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানান, প্যানেল বোর্ড কাজ না করার কারণে একমাত্র পয়েন্টসম্যান সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন যাওয়ার জন্য লাইন প্রস্তুত করছিলেন। কিন্তু এই কাজ করতে মিনিমাম ১০ মিনিট সময় লেগে যায়। এমন অবস্থায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেসকে স্টেশনের প্রবেশের আগে অন্তত ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা দরকার ছিল। কিন্তু ট্রেনচালক এক মুহূর্তের জন্যও অপেক্ষা করেননি। একইভাবে স্টেশন এলাকা পার হওয়ার সময় ট্রেনের গতি সচরাচর ১৬ কিলোমিটার কমাতে হয়। কিন্তু স্টেশনে প্রবেশের সময় চালক সেটিও করেন নি। সেই সময় ট্রেনটির গতি ছিল প্রায় ৮০ কিলোমিটার। গতি কম থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হয়তবা কম হতো।
তবে এ বিষয়ে তবে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক (লোকোমাস্টার) জসিম উদ্দিনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কন্ট্রোল রুমে কেনো ফোন দিলেন না এমন প্রশ্নের উত্তরও তিনি জানাতে পারেননি।
উদ্ধার কাজ ও দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে ব্যস্ত সময় কর্মকর্তাদের
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়। এ দিন দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা, বিভাগীয় সিগন্যাল কর্মকর্তাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তবে উপস্থিত রেলওয়ে কর্মকর্তাদের কেউ নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকাল থেকে প্রায় একই পরিস্থিতি দেখা যায়। ট্রেন চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হলেও দুই লাইনে চলছিল উদ্ধার কাজ।
স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউই সরাসরি কোনো বক্তব্য প্রকাশ করতে চাননি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘একদিকে স্টেশন মাস্টারের গাফিলতি পরিলক্ষিত হয়েছে আবার অন্যদিকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের চালক সতর্ক থাকলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার পরেও কেনো স্টেশন মাস্টার ব্যবস্থা নেননি সেই বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে কনটেইনারবাহী ট্রেনটি প্রায় ২১ মিনিট যেখানে সেই লুপ লাইনে কেনো পয়েন্ট লাগানো ছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সবকিছু পর্যবেক্ষণ শেষে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে নির্ধারিত সময়ে মধ্যে।’
একইভাবে দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. আবিদুর রহমান দুর্ঘটনার কারণ এবং ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছাড়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) টেলিফোনে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন যখন হাসানপুর স্টেশন এলাকায় পৌঁছায়, তখন তা মূল লাইন দিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল না। মূল লাইন প্রস্তুত করতে সময় দরকার ছিল। তাই ট্রেন থামার সংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু চালক ট্রেন চালিয়ে যান এবং লুপ লাইনে থাকা ট্রেনকে ধাক্কা দেন।’
তিনি বলেন, ‘সংকেত অমান্যর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনার মূল কারণ বলে মনে হচ্ছে। গাফিলতির কারণে চালকসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে বিস্তারিত কারণ বের হয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর থেকেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছে। আজকেও ট্রেন চলছে স্বাভাবিকভাবে। আশা করছি ইঞ্জিন উদ্ধারের কাজও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।’
এর আগে, রোববার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মালবাহী ট্রেনের পেছনের কন্টেইনার। সোনার বাংলা ট্রেনের চালকসহ অন্তত অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হন। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেন।
সারাবাংলা/এসবি/একে