দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে স্বস্তির ঈদযাত্রা
২০ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৪৭
মানিকগঞ্জ: চিরচেনা পাটুরিয়া ঘাট যেন অচেনা। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ না থাকায় এবারের ঈদ যাত্রায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে এই নৌরুটে যাতায়াতকারী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ২১ জেলার মানুষ। নির্বিঘ্নে ঈদ যাত্রার এই পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে পদ্মা সেতু। সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুট যানজট এবং কোলাহলমুক্ত।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে পাটুরিয়া ঘাটে দেখা যায়, পর্যাপ্ত পরিমাণ ফেরি থাকলেও ঘাটে যানবাহন এবং যাত্রীর চাপ নেই। ২০টি ফেরি, ৩৩টি লঞ্চ এবং পাঁচটি ঘাট সচল রয়েছে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের জন্য। সকালের দিকে ছোট গাড়ি প্রাইভেট কার মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেলের সামান্য চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে চাপ কমে গেছে। যানবাহন এবং যাত্রীরা ঘাটে আসা মাত্রই পদ্মা পাড়ি দিয়ে যাচ্ছে যে যার আপন ঠিকানায়।
ঈদযাত্রায় স্বস্তির কথা জানালেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। যশোরের রাজিব মিয়া জানান, ১৫ বছর ধরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া হয়ে রাজধানী ঢাকা শহরে আসা-যাওয়া করছি। এই প্রথমবারের মতো ঈদ যাত্রায় স্বস্তি পেয়েছি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এই নৌরুটে যানবাহনের চাপ কমে গেছে অনেকাংশেই। এবার ঘাটে এসে পাঁচ মিনিট সময় লাগেনি ফেরিতে উঠে গেলাম।
খুলনার জাকির হোসেন জানান, একবার ভেবেছিলাম পরিবার-পরিজন নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে গ্রামের বাড়ি যাব। কিন্তু শুনেছি পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে যানজট নেই। তাই সকালে ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে রওনা হয়ে সকাল ১০টায় পাটুরিয়া ঘাটে এসে পৌঁছাই। কোন ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই নদী পার হতে পেরেছি।
বাস চালক শহীদ মিয়া জানালেন, সকাল সাড়ে ১০টায় পাটুরিয়া ঘাটে আসামাত্রই ফেরিতে ওঠা সম্ভব হয়েছে। অথচ বিগত কোনো ঈদে দুই দিন আগে স্বাচ্ছন্দ্যে পাটুরিয়া ঘাট পাড়ি দিতে পারিনি। পদ্মা সেতু চালু না হলে এই ঘাটে এসে চরম দুর্ভোগে পড়তে হতো এটা বাস্তব সত্য কথা।
সকালে দেখা গেছে, ঈদের তিন দিন আগে ও পরে ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকলেও যাত্রীবাহী বাস কম থাকায় সকাল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার হয়েছে।
এদিকে ঈদ যাত্রায় পাটুরিয়া দৌলতদিয়া ঘাটে ভোগান্তি না থাকলেও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট পাড়ি দিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের। দেশের উত্তর অঞ্চলের মানুষজন যমুনা সেতু ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন চালু হওয়া আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট দিয়ে রাজধানী ঢাকার যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু আরিচা-কাজিরহাট নৌ রুটে মাত্র ছয়টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করায় যানবাহনের চাপ পড়ে গেছে। মূলত ফেরি সংকটের কারণেই ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অঞ্চলের ডিজিএম মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, ঈদে যাত্রী ও যানবাহন নির্বিঘ্নে পারাপারের জন্য পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ২০ ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যানবাহন ও যাত্রী কম থাকায় ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই বরাবরই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ অনেকাংশই কম। যার কারণে এই ঈদে যানবাহনের চাপ খুব বেশি হবে না।
সারাবাংলা/এমও