ঢাকা: দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নেই যাত্রীদের বাড়তি ভিড়। স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। যাত্রাপথের এই আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে পদ্মা সেতু। গত বছরের ২৬ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর প্রভাব পড়েছে এই নৌ-পথে। চিরচেনা সেই হইচই আর নেই।
লঞ্চের টিকিট পেতে নেই দৌড়ঝাঁপ-ধাক্কাধাক্কি, নেই ডেকে জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা। ফাঁকাও যাচ্ছে কেবিন। ফাঁকা কেবিন আর কম যাত্রী নিয়েই টার্মিনাল ছাড়ছে লঞ্চগুলো।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সরেজমিনে ঘুরে ঈদকেন্দ্রিক যাত্রীদের বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা যায়নি। এদিন সকাল থেকেই শত শত লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিন সকাল ১০টায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় লঞ্চ কর্মীরা যাত্রীর জন্য হাঁকডাক দিচ্ছেন। তবে ঘাটে যাত্রী খুবই কম।
সদরঘাটে দায়িত্বরত নৌ-পুলিশ, বিআইডব্লিউটিসির সদস্য, ভ্রাম্যমাণ হকার ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত পদ্মা সেতু হওয়ার কারণেই লঞ্চগুলোতে ভিড় নেই।
ঢাকা থেকে ভান্ডারিয়াগামী এমভি মর্নিং সানের কর্মী মোহাম্মদ রিপন মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, যাত্রী একেবারেই কমে গেছে। আগে ঈদের এই সময়ে বিকেল ৩টায় লঞ্চ ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে লঞ্চ কানায় কানায় যাত্রী পূর্ণ হয়ে যেত। আর এখন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত লঞ্চে অল্প কয়েক যাত্রী উঠেছে।
রিয়াদ নামের এক ছোলা-বুট বিক্রেতা বলেন, টার্মিনালতো ফাঁকাই বলা যায়। মানুষ নাই বেচা-বিক্রিও অনেক কমে গেছে। আগে ঈদের এই মৌসুমে যা বিক্রি করছি এখন তার অর্ধেকও হয় না।
বরগুনাগামী লঞ্চের যাত্রী রোকসানা খাদিজা সারাবাংলাকে বলেন, সদরঘাটের এমন নীরবতা আগে কখনও দেখিনি। পদ্মাসেতু চালুর পর পুরো দৃশ্য পাল্টে গেছে ব্যস্ততম এই নদীপথটির। ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দৈত্যকার লঞ্চগুলো। তারপরও পদ্মা সেতু হওয়ায় আমরা খুশি।
সদরঘাটে দায়িত্বরত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পরিবহন পরিদর্শক মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, আজ সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মাত্র ৩৫টি লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে গেছে। আর এ সময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫০টি লঞ্চ টার্মিনালে এসেছে।
সদরঘাটে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার লঞ্চে যাত্রী তুলনামূলক কমে গেছে। ঈদের এই সময়টাতে সদরঘাটে উপচেপড়া ভিড় থাকতো। লঞ্চে উঠতে রীতিমতো লড়াই করতে হতো। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে জায়গা পাওয়াও ছিল কঠিন। কিন্তু এবার পুরোপুরি ভিন্ন চিত্র। তবে বিকেলের দিকে যাত্রী কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।