Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদ আনন্দ: যাত্রা এবার বিনোদন কেন্দ্রে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৪২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সকালে গরমের তীব্রতা খানিক কম থাকলেও বেলা গড়াতেই আবার চোখ রাঙানো শুরু করে সূর্য। তীব্র তাপদাহে গরম আর অস্বস্তি আবারও। তবু প্রখর রোদের মধ্যেও বিনোদন পিয়াসী কেউ কেউ ছুটছেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত কিংবা ফয়’সলেকের দিকে। ঈদের আনন্দে গরম কী বাধা হতে পারে!

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম শহরের সব প্রান্তের মানুষের স্রোত ছিল বিভিন্ন ঈদগাহের দিকে। নামাজ আদায়ের পর থেকে চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী শুভেচ্ছা বিনিময়, কোলাকুলি, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া- এসব তো চলছেই। বেলা গড়াতেই মানুষ পা রাখতে শুরু করেছে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রেও।

বিজ্ঞাপন

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গায় দুপুর ১২টার পর থেকে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজনের আনাগোণা শুরু হয়। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে চড়ে লোকজন জড়ো হতে থাকেন সৈকতে। দুপুর গড়াতেই জনসমাগম বাড়তে থাকে। পানিতে দাপাদাপি, সৈকতে বসে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, গরম পিঁয়াজু-কাঁকড়া ভাজি, ডাব, আনন্দের কমতি নেই!

আবাসন ব্যবসায়ী হাসান মুরাদ একদল বন্ধু নিয়ে গেছেন সৈকতে বেড়াতে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের দিনে বন্ধুদের নিয়ে পতেঙ্গায় আসি, এটা একেবারে ছোটবেলা থেকে। মাঝে মাঝে কক্সবাজারও গেছি। মোটামুটি সাগরের কাছে আসতেই হবে। না হলে মনে হয়, ঈদের আনন্দটা ঠিকভাবে করা হলো না।’

ঈদের দিনসহ আগামী ১০ দিনে প্রায় ৫০ হাজার দর্শনার্থী সমাগমের টার্গেট নিয়ে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রামের ফয়’সলেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। নতুনভাবে সেজেছে সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড। লেকের শেষ প্রান্তে আছে পানির রাজ্যে বিচরণের রোমাঞ্চকর স্থান ‘সি ওয়ার্ল্ড’।

বিজ্ঞাপন

অ্যামিউজমেন্ট পার্ক পরিচালনাকারী কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ দুপুর ২টা থেকে পার্ক খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলার পর থেকেই ‍লোকজন আসতে শুরু করেছেন। এবার গরম বেশি, এ জন্য সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে সি ওয়ার্ল্ডে পানির রাইডগুলোতে। সেখানেই দাপাদাপি চলবে। আজ ঈদের দিন হওয়ায় লোক কিছু কম হবে। কাল থেকে পরবর্তী তিনদিন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ হাজার করে ট্যুরিস্ট আসবে। প্রতিবছর অন্তঃত ১০ দিন লোকজন আসে। ৫০ হাজারের মতো দর্শনার্থী আসবে বলে আমাদের ধারণা।’

গত জানুয়ারিতে ফয়’সলেকে চালু হয়েছে বিনোদনের নতুন অনুষঙ্গ ‘বেসক্যাম্প’। এতে আছে- কায়াকিং, আর্চারি, ক্রাইম্বিং ওয়াল, উড কেবিন, ট্রি টপ অ্যাক্টিভিটি, অন গ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি, টিম বিল্ডিং গেম এবং হিউম্যান ফুসবলের সুবিধা। এখানকার চমকপ্রদ আকর্ষণ হচ্ছে ওয়াটার জীপ লাইন। এছাড়াও আছে জায়েন্ট সুয়িং, স্মল সুয়িং, জায়ান্ট হ্যামক।

বাংলাদেশের একমাত্র আউটডোর এডভেঞ্চার ক্যাম্প ‘বেসক্যাম্প এডভেঞ্চার লিমিটেড’ ও কনকর্ড লিমিটেড সম্মিলিতভাবে এই বেসক্যাম্প চালু করে। এতদিন যারা ফয়’সলেকে গিয়ে পাহাড় আর হ্রদের নীল জলরাশির নান্দনিক সম্মিলনে মুগ্ধ হতেন, তারা এখন থেকে বেসক্যাম্পের মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি বাস্তবতার শিক্ষাও পাবেন। তবে রোদ আর গরম বেশি হওয়ায় বেসক্যাম্পে খুব বেশি দর্শনার্থী হবে না বলে মনে করছেন কনকর্ডের কর্মকর্তারা।

প্রতি ঈদুল ফিতরে চট্টগ্রাম শহরে মুখর হয়ে ওঠে আরেকটি বিনোদনকেন্দ্র- চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় বর্তমানে প্রায় ৭৩ প্রজাতির ছয় শতাধিক পশু-পাখি আছে। সাদা, বাঘ, সিংহ, ক্যাঙারু, ওয়াইল্ড বিস্ট- বৈচিত্র্যময় প্রাণীর সম্ভার এবার চিড়িয়াখানায়। ফয়’সলেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের পাশেই এই চিড়িয়াখানায় ঈদের বন্ধে কমপক্ষে অর্ধলাখ মানুষের সমাগম ঘটে। তবে এবার দর্শনার্থীদের সমাগম আরও বেশি হবে বলে মনে করছেন চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ ঈদের দিনে ৬-৭ হাজারের মতো লোক হবে। কাল-পরশু দুইদিন ১২ থেকে ১৫ হাজার করে লোক হবে। এরপর অন্তঃত এক সপ্তাহ ধরে লোকজন আসবে। বিপুল দর্শনার্থী সামাল দেয়ার সব প্রস্তুতি আমর নিয়েছি। পুরো চিড়িয়াখানাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।’

এদিকে মেরিড ড্রাইভ সড়কে জেলা প্রশাসনের ফ্লাওয়ার পার্ক, নগরীর পতেঙ্গায় বাটারফ্লাই পার্ক, কর্ণফুলী নদীর অভয়মিত্র ঘাট, কাজির দেউড়ি শিশু পার্ক, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা পার্ক, আগ্রাবাদে কর্ণফুলী শিশু পার্ক, হালিশহর ও সীতাকুণ্ডে গুলিয়াখালী সাগরতীর, মীরসরাইয়ে মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত, ফটিকছড়ি চা বাগানেও প্রতিবছর লোকসমাগম হয়।

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

ঈদ আনন্দ বিনোদন কেন্দ্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর