ঢাকা: কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল আগামী সেপ্টেম্বরে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করবেন। বুধবার (২৬ এপ্রিল) এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাল্টিলেন টানেলটি সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরকে আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করবে। ফলে কক্সবাজার সরাসরি চট্টগ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।’
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম নির্মিত এই টানেলটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় এবং আনুষঙ্গিক কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেন বিশিষ্ট দুটি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে একটি ৭২৭ মিটার ফ্লাইওভার থাকছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘টানেলের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে এবং কাজের বর্তমান অগ্রগতি ৯৭ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সময়মতো টানেলটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় এবং আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করছি। ইতোমধ্যে আমরা অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ করেছি। এখন টানেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরাপত্তার কাজ চলছে। দুটি টিউবের চার লেনের কাজ শেষ হওয়া ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।’ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেশের প্রথম টানেলটি এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। টানেলটি চালু হলে, এটি দেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে।’
এদিকে, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই টানেলটি হয়ে উঠবে ‘দুই শহরের এক নগরী’ এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তৈরি হওয়া প্যাসেজওয়ে। তারা বলেন, টানেলটি সঠিক পথে বাংলাদেশের জন্য একটি বাস্তব পদক্ষেপ, যা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে এবং দেশের মানুষের জীবনমান প্রভূত উন্নত করবে।
তাদের ধারণা, পদ্মা সেতু, আংশিক মেট্রোরেল উদ্বোধন ও বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দুই শতাংশের বেশি বাড়বে। [সূত্র: বাসস]
