Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যবস্থা করুন: মান্না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৮ এপ্রিল ২০২৩ ২১:০৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জাতীয় সংসদের চলতি মেয়াদের মধ্যেই নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামে বিভিন্ন দলের কর্মীদের নাগরিক ঐক্যে যোগদান উপলক্ষে এক সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। নগরীর লাভ লেইনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সরকার নিজের সুবিধা অনুযায়ী সংবিধানকে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আজকাল খুব সংবিধানের কথা বলে। বলে, সংবিধানে যা আছে তা-ই তো করছে। কই, সংবিধানে যা আছে, সেই অনুযায়ী সবকিছু তো তারা করে না। তাদের পক্ষে যেটা সেটিই করে।’

সংবিধান সংশোধনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধান নতুন করে সংশোধন করা যায়। আমাদের দেশের সংবিধানে ১৭টির বেশি সংশোধনী আছে। তার মানে নতুন করে আইন করা হয়েছে। আমরাও একই কথা বলছি। সংসদের মেয়াদ তো এখনও আছে। সংসদ বসে আইন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যবস্থা করুন।’

মান্না বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাতে নির্বাচন নিরাপদ নয়। সামন যে নির্বাচন হবে সেটি যদি উনি ক্ষমতায় থেকে হয়, তাহলে এদেশের মানুষ কেউই ভোট দিতে পারবে না। অতএব ভালো ভোট যদি করতে হয়, উনাকে যেতে হবে। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও মানুষ যেন ভোট নির্বিঘ্নে দিতে পারে, তাহলে শেখ হাসিনাকে রেখে সেই নির্বাচন হবে না। মানুষের এখন একটিই কথা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। ক্ষমতার লোভ, অর্থের লোভ তাকে এমনভাবে পেয়ে বসেছে উনি ওইটাকে ছাড়তে চাচ্ছেন না।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা জাপান গেছেন কেন? কারণ জাপান উনাকে বলেছে, তুমি তো নির্বাচিত সরকারই নও। তুমি তো দিনের ভোট রাতে করো। তোমাকে তো আমি অনেক টাকা দিয়েছি। ধার দিয়েছি, বিনিয়োগ করেছি। বিভিন্ন প্রজেক্ট করে দিয়েছি, শিল্প এলাকা করছি। কিন্তু তুমি তো নির্বাচিত সরকার নও। ভালো একটা ভোট দাও। এখন শেখ হাসিনা তাদের বোঝাতে গিয়েছে।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না বলেন, ‘দেশের মানুষ অতীষ্ঠ হয়ে গেছে। আগে কারও সঙ্গে দেখা হলে জিজ্ঞেস করত কেমন আছেন, রাজনীতির অবস্থা কী? এখন জিজ্ঞেস করে শেখ হাসিনা কখন যাবে? পারবেন তাকে ফেলতে? আপনারা যে দাবি করছেন উনি কি পদত্যাগ করবেন? পরপর দুইটি নির্বাচন ছলচাতুরি করে, ডাকাতি করে নিয়ে চলে গেছে তারা। এই সরকার কোনো নির্বাচিত সরকার নয়।’

‘এই সরকারের তাই জনগণের কাছে জবাবদিহি করার কোনো দরকারও নেই। ১৫ বছর আগে নির্বাচন করার সময় যারা বলেছিল ১০ টাকা করে চাল খাওয়াবে ,ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, প্রত্যেককে চাকরি দেবে, শিক্ষা ও চিকিৎসা সবকিছু আপনার দরজায় পৌঁছে দেবে সেই অবস্থা এই দেশে হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলছে আমরা সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছি। অথচ চট্টগ্রামের একজন মানুষের যদি মাঝারি ধরনের অসুখও হয় তিনি যে হাসপাতালে যাবেন সেটিও তার ভাবতে কষ্ট হয়। দরিদ্র পরিবার তো দূরে থাক মধ্যবিত্ত পরিবারও মেডিকেলে চিকিৎসা করাতে কয়েকবার ভাবে। এই সরকারের কাছে কেউই নিরাপদ নয়। চিকিৎসার খরচ,ওষুধ খরচ, ডাক্তার ফি, মেডিকেল ভর্তি ফি সব বেড়েছে।’

‘শিক্ষার ব্যয় বেড়েছে। সরকার কি বলতে পারবে যে কোনো জিনিসের দাম তারা কমাতে পেরেছে। দাম কেনো বাড়ে সেটি প্রশ্ন করতে গেলেই তারা বলে এত বড় ইউক্রেন যুদ্ধ গেলো সে জন্য দাম বেড়েছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ বা মহামারি করোনা আক্রমণের পরেও পৃথিবীর বহুদেশে আমাদের দেশের চেয়েও জিনিসপত্রের দাম কম ছিল ও আছে।’

নাগরিক ঐক্য, চট্টগ্রাম জেলার আহবায়ক মুন্না চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ন আহ্বায়ক মো. রফিকের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিবুল আনোয়ার, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আনিসুর রহমান খসরু, সৈয়দ শাহেদুল আনোয়ার, মিজানুর রহমান ও সরোয়ার আলম আরজু।

দলে যোগ দেওয়া অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

সারাবাংলা/আইসি/একে

আওয়ামী লীগ মাহমুদুর রহমান মান্না সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর