চুরি করা শিশু কিনে ধরা নিঃসন্তান নারী, গ্রেফতার ৩ ‘চোর’ও
২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:০৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থেকে আড়াই বছর বয়সী শিশু চুরির ঘটনায় এক নারীসহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে দুই লাখ ২০ হাজার টাকায় নিঃসন্তান ওই নারীর কাছে বিক্রি করেছিল বাকি তিন জন।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ছিপাতলী এলাকায় নিঃসন্তান ওই নারীর হেফাজত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে তাকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। রাতভর নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় শিশুচুরির সঙ্গে জড়িত তিন জনকে।
গ্রেফতার চার জন হলো- নুর ইসলাম মুরাদ (২৪), মো. জুয়েল (১৯), মো. রাসেল (৩৭) এবং রীমা আক্তার (৩০)।
গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে নগরীর চান্দগাঁও থানার মধ্যম মোহরা এলাকা থেকে আড়াই বছর বয়সী শিশুটি নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তার মা পারুল বেগম সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেন।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, মধ্যম মোহরার এ এল খান উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে বাসার অদূরে শিশুটি খেলছিল। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক যুবক শিশুটিকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এর সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করে হাটহাজারীর ছিপাতলীতে রিমা আক্তারের বাসায় শিশুটির সন্ধান পায়।
পরে রিমা’র দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। তবে শিশুটিকে চুরির মূল হোতা মো. হাশেম পলাতক আছে বলে জানান ওসি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাশেমসহ চার জন মিলে চিপস খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায়। নিঃসন্তান রীমা আক্তারের সঙ্গে আগে থেকেই তাদের দুই লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি শিশু পাইয়ে দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়েছিল। চুরি করা শিশুটিকে তাকে হস্তান্তরের পর রীমা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করেন। সেই টাকায় মুরাদ একটি মোটরসাইকেল কেনেন।’
এসআই জালাল আরও জানান, পলাতক হাশেম এবং গ্রেফতার তিন জন সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তারা শিশু চুরি করে নিঃসন্তান দম্পতিদের পাশাপাশি পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে। হাশেম এই চক্রের মূল হোতা। গ্রেফতার মুরাদের হেফাজত থেকে শিশু চুরির টাকায় কেনা মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া জুয়েলের হেফাজত থেকে শিশুটিকে তুলে নেওয়ার সময় ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে। জুয়েলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে বিভিন্ন থানায় আরও তিনটি মামলা রয়েছে।
এদিকে, নিখোঁজের চারদিন পর বুকের ধনকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পারুল বেগম। শনিবার সকালে থানায় শিশুটিকে বার বার বুকে জড়িয়ে ধরে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন তিনি।
শিশু চুরির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন পারুল বেগম।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম