Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুদানে আটকে পড়া ৭০০ বাংলাদেশিকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৯ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৫২

ঢাকা: সুদানে বসবাসরত এক হাজার ৫০০ বাংলাদেশির মধ্যে ৭০০ জন দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আটকে পড়া ওইসব বাংলাদেশিদের ফেরত আনার জন্য কাজ করছে সরকার। তাদের প্রথমে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান এবং পোর্ট সুদান থেকে পোর্ট জেদ্দায় ফিরিয়ে আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় আনা হবে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিনের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকে প্রথমে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান এবং সেখান থেকে পোর্ট জেদ্দায় আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ চলছে। গত দুই সপ্তাহের এ সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত চারশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেসামরিক লোকজন ছাড়াও জাতিসংঘের কর্মী, মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সুদান থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বর্তমানে এই দুই বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়ার কথা তুলে ধরা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। উদ্ধারের প্রক্রিয়া তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের দূরত্ব ৮৫০ কিলোমিটার। খার্তুম ও এর আশপাশের শহর থেকে তাদের বন্দরের উদ্দেশে নেওয়ার নয়টি বাসের ব্যবস্থা করেছে দূতাবাস।

বিজ্ঞাপন

উদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য রোববার জেদ্দায় বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল থেকে একটি দল সুদান পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন। তিনি বলেন, ‘পোর্ট সুদান থেকে পোর্ট জেদ্দায় পরিবহনের জন্য সৌদি সরকার বিনামূল্যে নৌবাহিনীর জাহাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

উদ্ধার প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য খার্তুমে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বর্তমানে পোর্ট সুদানে অবস্থান করছেন জানিয়ে সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘২ মে’র মধ্যে সব বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদানে নিয়ে আসা সম্ভব হবে; ৩ বা ৪ মে’র মধ্যে তারা জেদ্দা পৌঁছে যাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।’

জেদ্দায় বাংলাদেশি দুটি স্কুলে তাদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সুদানে সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে দেশটির রাজধানী খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনেও গুলি লেগেছে।

তিনি বলেন, ‘খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে প্রায় ১২ ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে প্রবাসীদের যেন শারীরিক কোনো সমস্যা না হয় এ বিষয়টি মাথায় রেখে পোর্ট সুদানেও বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুদান প্রবাসীরা যেদিন জেদ্দা পৌঁছাবেন সেদিন থেকেই বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের এমডি শফিউল আজিম বলেন, ‘আমাদের প্রথমদিন থেকে যোগাযোগ আছে। আমাদের সেখানকার রিজিওনাল ম্যানেজার ও কনস্যুলেট জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। অ্যাম্বাসির লোকজন সেখানে গেছেন। লাস্ট নিউজ হলো- তারা হয়তো ৪ তারিখে প্যাসেঞ্জার দিতে পারবেন। আমরা এটা জরুরি হিসেবে নিচ্ছি। আমরা রেডি আছি। প্যাসেঞ্জার ফ্লাইটেও সিট রাখছি। প্রয়োজনে স্পেশাল ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনে ইচ্ছুক সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের যোগাযোগের জন্য দুটি হটলাইন নম্বরও সরবরাহ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দুটি হল, +234 909 755 1790 (একরামুল হক, তৃতীয় সচিব, খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস), এবং +8801737125349 (জাহাঙ্গীর আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস)।

প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরের আগে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন। সুদানের রাষ্ট্রদূত, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দার কনসাল জেনারেল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

বাংলাদেশি সুদান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর