বঙ্গবন্ধুর চিন্তায় শ্রমজীবী-পেশাজীবী মানুষের জীবনমান উন্নত হোক
৩০ এপ্রিল ২০২৩ ২২:৫৮
ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারায় দেশের শ্রমজীবী -পেশাজীবী মানুষের জীবনমান আরো উন্নত হওয়ার আশাবাদ প্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক আগামীকাল মহান মে দিবস উপলক্ষে আজ দেওয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে এই আশাবাদ প্রকাশ করেন।
দেশের মেহনতি মানুষসহ পৃথিবীর সকল দেশের শ্রমজীবী মানুষদেরকে অভিনন্দন ও তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তারা বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবী জুড়ে বৃহৎ শিল্প-কারখানার উদ্ভবের মাধ্যমে ধনবাদী বিপুল অর্থনৈতিক বিকাশের পর মেহনতি মানুষেরা দাবি করে আসছিল যে, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাদের বাধ্যতামূলক ও অমানুষিক কাজের ঘন্টা কমিয়ে দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা করতে হবে, কাজের পরিবেশকে মানবিক করতে হবে, সাপ্তাহিক ছুটির নিয়ম সব শিল্প-কারখানার মালিককে মানতে হবে এবং রাষ্ট্রীয়-সামাজিক-ধর্মীয় উৎসবে ছুটি দিতে হবে।
তারা বলেন, কিন্তু সেই যৌক্তিক দাবিগুলো মানা হচ্ছিল না বলে শিল্পোন্নত দেশগুলোতে আন্দোলন ক্রমেই তীব্র হচ্ছিল এবং তা পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছিল। দমননীতি চালিয়েও আন্দোলন থামাতে না পেরে এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত শিল্পনগরী শিকাগোতে ১৮৮৬ সালের এই দিন থেকে পুলিশ কয়েকদিন ধরে শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।
তারা বলেন, এতে প্রতিবাদ আরও তীব্র হলে শেষ পর্যন্ত দৈনিক ৮ ঘণ্টার কর্মঘণ্টাসহ অন্যান্য দাবি সরকার ও শিল্প-কারখানার মালিকরা মেনে নিতে বাধ্য হয়।
তারা বলেন, পৃথিবীব্যাপী সেই মানবিক আন্দোলন ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্দোলনরত শ্রমিকদের রক্তের বিনিময়ে সারা পৃথিবীর শ্রমিক, শিক্ষিত ও কম শিক্ষিত মেহনতি মানুষ নির্বিশেষে যারাই চাকরি করে তারা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ, সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটিসহ অন্যান্য যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। বর্তমান পৃথিবীর মানুষ ১ মে শহীদ হওয়া শ্রমিকদের এবং তখনকার আন্দোলনকারী মানবতাবাদী আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনগুলোর কাছে ঋণী।
নেতৃদ্বয় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব শোষিতের পক্ষে ছিলেন। তার লেখা বইগুলোতে এর অনেক প্রমাণ ছড়িয়ে আছে।
তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক উদ্যোগে স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের অঙ্গ সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ অর্জন করে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সরকার এই সংস্থার ৬টি ভিত্তি নীতিমালা এবং মোট ২৯টি সনদের সবগুলো মেনে চলার দলিলে অনুস্বাক্ষর করে।
তারা বলেন, অথচ পৃথিবীর কয়েকটি উন্নত দেশসহ অনেকগুলো দেশই এখন পর্যন্ত আইএলও’র সবগুলো দলিলে স্বাক্ষর করেনি, তারাই আবার মানবাধিকার ও মেহনতি মানুষের পক্ষে কথা বলার ভান করে থাকে।
তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে দেশের সব ধরনের শ্রমজীবী-পেশাজীবী মানুষের জীবনমানের আরো উন্নয়ন ঘটুক এবং তাদের অধিকারসমূহ উত্তরোত্তর আরো সুরক্ষিত হোক। মহান মে দিবস উপলকক্ষে এটিই বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রত্যাশা।
সারাবাংলা/একে