তারা পুরনো কায়দায় আরেকটি নির্বাচন করতে চায়: ফখরুল
১ মে ২০২৩ ১৮:৪৩
ঢাকা: আওয়ামী লীগ পুরোনো কায়দায় আরেকটি নির্বাচন করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল এ সমাবেশ আয়োজন করে।
সমাবেশে বিএনপি, শ্রমিকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। বেলা আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১১টার পর থেকে ফকিরাপুল নয়াপল্টন সড়ক নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পিকআপ ভ্যান দিয়ে বানানো অস্থায়ী মঞ্চে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।
বিকেল পৌনে ৫টায় সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় মে দিবসের র্যালি। এটি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজার গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবার সেই পুরনো কায়দায় তারা (আওয়ামী লীগ) আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। আবার মানুষ যেন ভোট দিতে না পারে, ভোট চুরি করে যেন ক্ষমতা আসতে পারে এবং আবার যেন ক্ষমতা দখল করতে পারে, সেজন্য এখন থেকে হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘আজ গোটা বাংলাদেশকে কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নগুলো ভেঙেচুরে তছনছ করে এই আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারই পুনরাবৃত্তিতে আবার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
‘তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয়, এই সরকার কৃষকবিরোধী সরকার, এই সরকার শ্রমিকবিরোধী সরকার, এই সরকার গণবিরোধী সরকার। জনগণের সঙ্গে এ সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই আজ তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করছে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের নিজেদের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, শ্রমিকের স্বার্থে, কৃষকের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আবার হুমকি দেন অগ্নি সন্ত্রাস করতে দেওয়া হবে না। অগ্নিসন্ত্রাস তো করেন আপনারা। নিজেরা অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি উপর দোষ চাপান। বাসের মধ্যে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপান।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের স্বার্থে, স্বার্থে বাংলাদেশের, মানুষের স্বার্থে, স্বাধীনতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। প্রধান দাবি হচ্ছে- এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার, শ্রমিকদের সরকার, কৃষকদের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’
নেতাকর্মীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের মনে রাখতে হবে এই লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। লড়াইয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে আগামী দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে কি থাকবে না। এ লড়াই আমাদের মুক্তির লড়াই, এ লড়াই আমাদের স্বাধীনতার লড়াই, এ লড়াই দেশনেত্রীকে মুক্ত করার লড়াই, এ লড়াই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার লড়াই।’
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী শপু, শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম