Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খার্তুম থেকে ১৩টি বাসে পোর্ট সুদানের পথে ৬৫০ বাংলাদেশি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩ মে ২০২৩ ০৯:৪৭

ঢাকা: সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে সুদান থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওয়ানা করেছেন ৬৫০ জন বাংলাদেশি। খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় ফেরানো হচ্ছে তাদের।

মঙ্গলবার (২ মে) বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১২টার দিকে (স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায়) ৬৫০ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে ১৩টি বাস রওনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ।

মঙ্গলবার সকালে তিন জায়গা থেকে ১৩টি বাসে করে এই বাংলাদেশিরা পোর্ট সুদানের উদ্দেশ্যে রওনা করেন বলে জানান খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পোর্ট সুদান পর্যন্ত প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে তাদের।’

দেশের উদ্দেশ্যে রওনা করা সুদান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, ‘দেশে ফেরার জন্য তিন জায়গায় অবস্থান নিয়ে ছিলেন বাংলাদেশিরা। সোমবার রাত থেকে বাসছাড়ার স্থান খার্তুমের শারিয়া আল সিত্তিন ও মাদানি স্ট্রিটের যে চৌরাস্তা এবং আল-সালাম হোটেলে এসে জড়ো হন ৬২৩ জন। আগে থেকে পোর্ট সুদানগামী রাস্তায় অবস্থান করছিলেন ৫৯ জন।’

তিন স্থান থেকে এই বাংলাদেশিদের রওনা করার কথা জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, ‘৯টি বাসে করে সকাল ৯টার দিকে ৩৫০ জন বাংলাদেশি রওনা করেন। আর আল-সালাম হোটেল যারা ছিলেন, তাদের জন্য বড় বাস যেতে পারেনি। পরে তাদের ছোট বাসে করে খার্তুমের শারিয়া আল সিত্তিন ও মাদানি স্ট্রিটের চৌরাস্তায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে বাকি বাসগুলো রওনা করেছে।’

পোর্ট সুদানের পথে অবস্থান নেওয়া ৫৯ জনকে আলাদা করে পাঠানো একটি বাসে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের দূরত্বের কথা তুলে ধরে তারেক আহমেদ বলেন, ‘এত লোক যেহেতু আসছেন, সেহেতু তাদের বিরতির প্রয়োজন পড়বে। সে কারণে বাসযাত্রায় ১৫ ঘণ্টার মতো সময় লেগে যেতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

উদ্ধারের পরিকল্পনা জানিয়ে দু’দিন আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, ‘যাদের কাছে পাসপোর্ট আছে, তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে উঠিয়ে নেওয়া এবং যাদের কাছে প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট নেই, তাদেরকে ট্রাভেল পারমিট দ্রুততার সঙ্গে দিয়ে নেক্সট অ্যাভেইলেভল ভেসেলে করে পাঠানো।’

বাংলাদেশিদের উদ্ধারে কাজ করার জন্য কয়েকদিন আগে থেকে পোর্ট সুদানে অবস্থান করছেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ। প্রয়োজনীয় অর্থ ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে জেদ্দা কনস্যুলেটের একটি দল।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যাদের পাসপোর্ট আছে, তাদের তালিকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমরা সৌদি দূতাবাসকে দেব। এরপর তারা সুদান কর্তৃপক্ষের প্রক্রিয়া শেষ করবে।’ পোর্ট সুদানের এই কার্যক্রম শেষ হলে বাংলাদেশিরা সৌদি জাহাজে জেদ্দার উদ্দেশ্যে রওনা করবে বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুদানে বসবাসরত এক হাজার ৫০০ বাংলাদেশির মধ্যে ৭০০ জন দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আটকে পড়া ওইসব বাংলাদেশিদের ফেরত আনার জন্য কাজ করছে সরকার। তাদের প্রথমে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান এবং পোর্ট সুদান থেকে পোর্ট জেদ্দায় ফিরিয়ে আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ চলছে। গত দুই সপ্তাহের এ সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত চারশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেসামরিক লোকজন ছাড়াও জাতিসংঘের কর্মী, মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সুদান থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বর্তমানে এই দুই বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/এমও

খার্তুম বাংলাদেশি সুদান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর