৫ মে’ ভুলে যেতে চায় হেফাজত, এখনও বাকি ৬১ মামলার চার্জশিট
৫ মে ২০২৩ ১৮:০৫
ঢাকা: হেফাজতে ইসলামের ‘তাণ্ডবে’র আজ ১০ বছর পার হচ্ছে। দশম বছরে এসে হেফাজত নেতারা ওই দিনে (৫ মে, ২০১৩) যা হয়েছে, তা ভুলে যেতে চান। পূর্বে যা ঘটেছে তা মনে করতে চান না তারা। সবকিছু ভুলে এখন হেফজতের নেতারা সামনে এগিয়ে যেতে চান এবং দেশ গড়ার কাজে অংশ নিতে চান।
অন্যদিকে, ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিল পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় দিনরাত যে তাণ্ডব চালিয়েছিল হেফাজতের নেতাকর্মীরা সে ঘটনায় ঢাকা ও ঢাকাসহ সারাদেশে মোট ৬২টি মামলা হয়েছিল। ওইসব মামলার মধ্যে মাত্র একটি মামলার চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। সেই মামলার বিচার কাজও শেষ হয়েছে। বিচারে আসামিদের সবাই খালাস পেয়েছে। বাকি মামলাগুলোর চার্জশিট এখনও দিতে পারেনি পুলিশ।
হেফাজত নেতারা জানিয়েছেন, ওইসময় হেফাজতের শীর্ষ নেতাসহ ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তারা জামিন পান। ৫ মে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা মওদুদ আহমদ, প্রয়াত এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়াকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।
হেফাজত নেতাদের অভিযোগ, সরকার মামলাগুলো ঝুলিয়ে রেখেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে সরকারের সঙ্গে হেফাজতের সমঝোতার ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, রাজধানীতে করা ৫৩টি মামলার মধ্যে ৪টি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪৯টি মামলা তদন্তের পর্যায়ে পড়ে রয়েছে। এসব মামলায় প্রায় আড়াই শ’ নেতার নামসহ অন্তত ৪০ হাজার লোক আসামি।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) ড. মোহিদ উদ্দিন বলেন, ‘যাচাইবাছাই করে তদন্ত শেষ করতে সময় বেশি লাগছে।’
ঢাকার বাইরের মামলা
ঢাকার ঘটনার পরদিন ৬ মে হেফাজতে ইসলামের ডাকা সড়ক অবরোধে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছয় জন নিহত হন। এ ঘটনায় হাটহাজারী থানার পুলিশ একটি মামলা করে। মামলায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আসামিরা সবাই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী এবং হেফাজতের সমর্থক।
ঢাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন ও পরদিন বাগেরহাটে হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হেফাজতের দু’জন কর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় ফকিরহাটে চারটি ও বাগেরহাট সদর থানায় দু’টি মামলা করে পুলিশ। এতে হেফাজত, জামায়াত, স্থানীয় বিএনপির ৮৮ জন নেতা-কর্মীসহ ১০ থেকে ১২ হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
বাগেরহাটের জেলা পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, ‘হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের আসামি করে দায়ের করা ছয়টি মামলায় এর আগে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর-শিমরাইল এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ-বিজিবির সংঘর্ষ এবং নিহত হওয়ার ঘটনায় সোনারগাঁও এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাতটি মামলা হয়। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘এর আগে পাঁচ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি দুই মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।’
এছাড়া অন্য ৪ জেলায় হেফাজতের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তও থেমে আছে বলে পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এমও