পাসপোর্ট অফিসের ৩ কর্মচারীসহ ১৯ জনের বিচার শুরু
৮ মে ২০২৩ ২০:১২
ঢাকা: ভুয়া জন্ম সনদ ব্যবহার করে পার্সপোট তৈরির অভিযোগের মামলায় আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের তিন কর্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত। চার্জগঠনের ফলে মামলাটির বিচার অনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
সোমবার (৮ মে) বিকেলে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত ১৯ আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ চার্জগঠনের আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ২০ জুন সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন।
উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের ডাটা এন্ট্রি /কন্ট্রোলার একেএম তৌহিদুল ইসলাম, অফিস সহকারী জিয়াউর রহমান ও রেকর্ড কিপার সুমন ইসলাম, আনসার সদস্য সাহাদুর ওরফে সাহাদুল, পাসপোর্ট অফিসের দালাল মো. হেদায়েতুর রহমান, হেদায়েতের সহযোগী মো. ইব্রাহিম, আলমগীর হোসেন, শাহ জালাল, হাজী আলা উদ্দিন মনা, রফিকুল ইসলাম, মো. সুজন, আব্দুল মালেক, সামসুল হক, ইমরান হোসেন, হারুনুর রশিদ, দীন ইসলাম জমাদার, রুহুল আমিন মনির ও রিদুয়ান মুমন। আসামিদের মধ্যে রিদুয়ান মুমন পলাতক। অপর আসামিরা জামিনে রয়েছেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে হেদায়েতুর রহমান, রুহুল আমিন মনির এবং ইব্রাহিম মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রাজধানীর মতিঝিল থানায় ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর র্যাব ১১ এর ডিএডি মাকসুদুর রহমান এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের পর একই সংস্থার পুলিশের এসআই এসএম কামাল হোসাইন ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ভুয়া জন্ম সনদ ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরির অভিযোগে আটক হয় মো. হেদায়েতুর রহমান (৪৫) ও মো. ইব্রাহীম (৩০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬০টি ভুয়া জন্ম সনদপত্র, ১০টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ৭টি পাসপোর্ট ও জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত ১টি মনিটর, ১টি সিপিইউ এবং ১টি স্ক্যানার জব্দ করা হয়। আটককৃত হেদায়েতুর রহমান ওই জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা।
ইব্রাহীম ফকিরাপুলে একটি কম্পিউটার কম্পোজের দোকানের কর্মচারী এবং সে উক্ত জালিয়াতির চক্রের সহযোগী। গ্রেফতারকৃত হেদায়েতুর রহমানের বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন কাকারা গ্রামে। সে দীর্ঘ ১ যুগ ধরে ঢাকার ফরিকাপুল এলাকায় বসবাস করে আসছে। শুরুতে পাসপোর্ট অফিসের দালালি ও ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করলেও পরবর্তীতে পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলাতে হওয়ায় কক্সবাজার এলাকায় কয়েকজন পাসপোর্টের দালাল চক্রের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
কক্সবাজারে পাসপোর্টের দালাল চক্রগুলো মূলত মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) ভুয়া পাসপোর্ট তৈরির মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দিতো। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরিতে সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে এলাকার জালিয়াতি চক্রগুলো হেদায়েতুর রহমানের মাধ্যমে ঢাকায় পাসপোর্ট তৈরি করত।
ঢাকায় হেদায়েতুর রহমানে ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে কাজ করত তার ভাতিজা সুমন। হেদায়েত কক্সবাজার ও অন্যান্য এলাকায় দালাল চক্রের চাহিদা মোতাবেক ভাতিজা সুমনের মাধ্যমে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও জন্ম তারিখ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার আজিম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করত। প্রতিটি অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের জন্য ১৩০০ টাকা দিতো।
সারাবাংলা/এআই/একে