২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, কোটি টাকার তথ্য গোপন
৯ মে ২০২৩ ২২:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের আলোচিত কর্মকর্তা আবুল কাশেম চৌধুরী। ‘টিআই কাশেম’ নামে পরিচিতি ছিল তার। চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত এই ‘টিআই কাশেম’ এর প্রায় দেড় কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমেরও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ মিলেছে পৌনে তিন কোটি টাকার।
দুদক বলছে, এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের সঙ্গে তাদের জ্ঞাত আয়ের কোনো সঙ্গতি নেই। উপরন্তু চারবছর আগে দেওয়া দুদকের নোটিশের জবাবে বিপুল সম্পদের তথ্যও গোপন করেন এই দম্পতি।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কাশেম চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। মঙ্গলবার (৯ মে) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
আবুল কাশেম চৌধুরী সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের বন্দর জোনে ‘টিআই অ্যাডমিন’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ট্রাফিক পরিদর্শক হিসেবে অলংকার পুলিশ বক্সেও কর্মরত ছিলেন।
টিআই আবুল কাশেম চৌধুরীর বাড়ি ফেনীর পরশুরাম উপজেলায়। চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী চুনা ফ্যাক্টরি রোডে পরিবারসহ থাকেন।
দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাৎ সারাবাংলাকে জানান, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সেই সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারা ও ২৭ (১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে দুদক পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে— ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন আবুল কাশেম চৌধুরী ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম। এতে আবুল কাশেম চৌধুরী ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৮০২ টাকা সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। তবে দুদক অনুসন্ধানে তার ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার ১৬৩ টাকার সম্পদের প্রমাণ পায়। আর ঘোষিত ব্যয়সহ মোট এক কোটি ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ১৬৮ টাকার অর্জিত সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ফাতেমা বেগম সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৮৭ টাকার অর্জিত সম্পদের তথ্য দেন। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬১ টাকার সম্পদ। ব্যয়সহ ২ কোটি ৭৬ লাখ ১ হাজার ৬১ টাকা।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে— দুদকে দেওয়া বিবরণীতে আবুল কাশেম চৌধুরী ৫০ লাখ ৮০ হাজার ২২১ টাকার এবং ফাতেমা বেগম ৪৮ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন। এদিকে আবুল কাশেম চৌধুরী ৬০ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৯ টাকার ও ফাতেমা বেগম এক কোটি ৩৫ লাখ ৭৪ হাজার ৫২১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
সারাবাংলা/আইসি/একে