মানুষ বাজারে গিয়ে কাঁদছে: শিল্প প্রতিমন্ত্রী
১১ মে ২০২৩ ১৮:৪৮
ঢাকা : শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, অর্থনীতি ও বাজার—দুই জায়গাতেই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। যে কারণে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঝরে পড়ছেন। পণ্যের মূল্য বেড়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মানুষ বাজার করতে গিয়ে এখন কাঁদছে। এই সিন্ডিকেট ধরতে না পারলে এবং ভাঙতে না পারলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের দায়িত্বে থাকা উচিত না।
বৃহস্পতিবার ( ১১ মে) রাজধানীতে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর সম্মেলন কক্ষে ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। ইআরএফ ও এসএমই ফাউন্ডেশন কর্মশালাটির আয়োজন করে।
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মাদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
শিল্পমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি অনেককে দেখেছি, বাজার করতে গিয়ে কাঁদছেন। কারণ তাদের পকেটে বাজার করার টাকা নেই। এটির একমাত্র কারণ সিন্ডিকেট। আমাদের চিনির অভাব নেই, চাল-ডাল তরি-তরকারির অভাব নেই।’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সুগার মিলে যারা আখচাষী তারাই সুগার মিলের শ্রমিক। যে কারণে মিলগুলোতে লুটপাট হয়েছে। লুটপাটের কারণে মিলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের চিনির মিলগুলো যদি চালু রাখতে পারতাম তবে বাজারে চিনির এত দাম বাড়ত না। এখন চিনির স্বল্পতা দেখা দিয়েছে, চিনি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না— এগুলো তো হতো না।’
তিনি বলেন, ‘একইভাবে আমাদের এসএমই খাতের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাদের যারা মুড়ি-চানাচুর বিক্রি করে চলত, সেখানেও দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো হাত ঢুকিয়েছে। যে কারণে ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না।’
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘দেশ এগিয়ে চলেছে, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। কিন্তু তারপরও দেশে আজকে যে অরাজকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, ব্যবসার নামে আজকে যে লুটপাট হচ্ছে, মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে— এগুলোর বিষয়ে সাংবাদিকদের আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। এগুলো আরও ফোকাসড করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বাজারে যাই, তখন দেখি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কেন ঊর্ধ্বগতি? আমাদের তো কোনো কিছুর অভাব নেই, আমরা প্রতিক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাল, ডাল, তরিতরকারি, মাছ-মাংস থেকে শুরু করে সবকিছুতেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারপরও সিন্ডিকেটের কারণে দেশে এ অবস্থা বিরাজ করছে।’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘অবাক লাগে, বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে লাখ লাখ বেকার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ কিন্তু মওকুফ করা হয় না। কাদের ঋণ মওকুফ করা হচ্ছে? যারা ব্যাংক থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে খেলাপি হয়েছে, তাদের ঋণই বারবার মওকুফ করা হচ্ছে। তারা মওকুফ পেয়ে আবার ঋণ নিচ্ছে। বড় খেলাপিদের ঋণগুলো যদি এসএমই ফাউন্ডেশনসহ ক্ষদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের দেওয়া হতো তবে তাদের ব্যবসা আরও সমৃদ্ধশালী হতো। কিন্তু সেটি আর করা হচ্ছে না।’
সারাবাংলা/জিএস/একে