Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্নেল নাজমুল হুদা হত্যা মামলায় প্রতিবেদন ১২ জুন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ মে ২০২৩ ১৮:৫১

ঢাকা: বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রমকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামী ১২ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) মামলাটির এজাহার আদালতে আসে। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের এ তারিখ ধার্য করেন।

হত্যার ৪৮ বছর পর নিহতের মেয়ে ও সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান বুধবার (১০ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর (অব.) আব্দুল জলিলকে নামীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উৎপল বড়ুয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর আমার বয়স ছিল পাঁচ আর আমার বড় ভাইয়ের আট। ওই সময় আমার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭২ বিশেষ কমান্ডার, রংপুর, কর্মরত অবস্থায় ঢাকায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপথগামী বিশৃঙ্খল সদস্যদের হাতে খুন (শহিদ) হন। তার সঙ্গে অপর দুই সেক্টর কমান্ডার শহিদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ, বীর-উত্তম এবং শহিদ লে. কর্নেল এ টি এম হায়দার, বীর-উত্তমও নিহত (শহিদ) হন।’

এজাহারে আরও বলা হয়, ‘পরবর্তী সময়ে আমরা বড় হয়ে বাবার কোর্সমেট, কলিগ ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারি, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকালবেলা বাবাসহ অপর দুই সামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন ১০ নম্বর ইস্ট বেঙ্গলের অফিসে। যেখানে এখন এমপি হোস্টেলের অবস্থান। সকালে বাবা ও তার কলিগ নাশতা করা অবস্থায় দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি থেকে একটি টেলিফোন আসে দশম ইস্ট বেঙ্গলের সিও লে. কর্নেল নওয়াজেশের কাছে। এরপর বাবাসহ অপর দুই সামরিক কর্মকর্তাকে বাইরে নিয়ে আসেন দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তারা।’

বিজ্ঞাপন

‘আমাদের অনুসন্ধানে আরও জানতে পারি, তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জাসদ নেতা লে. কর্নেল (অব.) আবু তাহেরের নির্দেশে ১০ ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও ও সৈনিকেরা সংঘবদ্ধভাবে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়। লে. কর্নেল সিরাজ (তৎকালীন ক্যাপ্টেন) ও মেজর মুকতাদির, সাবেক পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান (ততকালীন ক্যাপ্টেন) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আমরা আরও জানতে পারি, ১০ ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও এবং সৈনিকদের সঙ্গে মেজর মো. আসাদউজ্জামান (অব.) এই তিন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলি করার পর বেয়নেট চার্জ করা হয়।’

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘বাবা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন এবং সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ছিলেন যশোর ৮ নম্বর সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টর কমান্ডার। তার সরাসরি নেতৃত্বে পরিচালিত বিখ্যাত গরিবপুরের ট্যাংক যুদ্ধ, চৌগাছা যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজিত হয়েছিল এবং ৬ ডিসেম্বর বাবার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম জেলা হিসাবে যশোর মুক্ত হয়। আমাদের জন্য সময় এতটাই প্রতিকূল ছিল যে, একবার ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার কাছে আমার ভাই গিয়েছিল বাবার নামে রাস্তার নামকরণের জন্য। তখন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে রাস্তার নামকরণ করা হচ্ছিল। তিনি ভাইয়ের আবেদনপত্র হাতে নিয়ে আমার বাবার নাম দেখে ভাইকে তার অফিসরুম থেকে বের করে দেন।’

সারাবাংলা/এআই/ইআ

কর্নেল হুদা খুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর