‘সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে, আমাদের মন্ত্রী থাকা উচিত না’
১১ মে ২০২৩ ১৯:৪০
ঢাকা: শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে; এই সিন্ডিকেট যদি আমরা ধরতে না পারি ভাঙতে না পারি, দেশের ১৭ কোটি মানুষের দুঃখ-কষ্ট যদি লাঘব না করতে পারি, তাহলে আমার মনে হয়, আমাদের মতো লোকের মন্ত্রী থাকা উচিৎ না।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে আমার রাজনীতির বয়স ৫০ বছর। আমি দেখেছি, অনেকে ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরত। অনেকের কাছে টাকা ছিল না। অন্যের কাছে সিগারেট চেয়ে খেত। আজকে তারা ব্যাংকের মালিক। তারা সরকারি ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বেসরকারি ব্যাংকের মালিক হয়েছেন।’
বৃহস্পতিবার ( ১১ মে) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। ইআরএফ ও এসএমই ফাউন্ডেশন এ কর্মশালার আয়োজন করে।
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মাদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘আমি আগেও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে বলেছি, বড় খেলাপিদের ঋণ যেন মওকুফ করা না হয়। কিন্তু বারবারই তাদের সুবিধা দেওয়া হয়। কারা ব্যাংকের মালিক হয়েছে, কীভাবে হয়েছে এগুলো আপনাদের তুলে ধরতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যারা সরকারি ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বেসরকারি ব্যাংকের মালিক হয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচিত তাদের নাম প্রকাশ করা। কেন ওনারা করেন না, আমি জানি না। এটি একটি বড় প্রশ্ন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা দেখছি যে, ব্যক্তি লুটপাট করে বড়লোক হচ্ছে। তাকে আরও সুযোগ দিচ্ছি। ফলে কিছু ব্যক্তির কাছে ব্যাংক থেকে শুরু করে সারা অর্থনীতি জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে আপনারা (সাংবাদিক) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘উন্নত দেশ হওয়ার ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। উন্নত বিশ্বের কাতারে যেতে হলে বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তা হলে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারব।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে পারি সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনকে আগামী বাজেটে ৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া উচিত। যেভাবে বিভিন্ন প্রকল্পে টাকার অপচয় হচ্ছে, এটি না হলে এই টাকা দেওয়া কোনো বিষয় না।’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম, বাফার এক গুদামের কাজ তিন মন্ত্রীর আমলেও শেষ হয়নি। এটি মন্ত্রীদের দোষ নয়, আমলাদের দোষ। কারণ লাল ফিতার দৌরাত্ম্য এখনও কমেনি। আমলারা যা বলে সেটিই আমাদের করতে হয়। মন্ত্রী যদি দুর্বল হন আর সচিব যদি সবল হন, তবে সেখানে মন্ত্রীর কোনো ভূমিকা থাকে না।’
সারাবাংলা/একে