ঢাকার ২ মেয়রের তিন বছর: প্রতিশ্রুতি বেশি, বাস্তবায়ন কম
১৩ মে ২০২৩ ০৮:৪৯
ঢাকা: দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পার করে তৃতীয় বছরে পৌঁছেছেন ঢাকার ২ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস। ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি’র দুই মেয়র এই সময়ের মধ্যে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কিছু সাফল্য দেখালেও চিরাচরিত সমস্যা থেকে মুক্তি পায়নি রাজধানীবাসী। নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই মেয়র অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হলেও তিন বছরে তার খুব অল্পই বাস্তবায়ন হয়েছে। রয়েছে নগর ব্যবস্থাপনায় সদিচ্ছা, সঠিক পরিকল্পনা, ও আন্তরিকতার ঘাটতি।
নির্বাচনি ইশতেহারে দুই মেয়রই জলাবদ্ধতা, যানজট, মশার উপদ্রবসহ নানা নমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও অনেক ক্ষেত্রেই এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেননি তারা। যে প্রক্রিয়ায় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে, সেগুলো সঠিক পদ্ধতি নয় বলেই নগরবাসী সুফল পাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২০ সালে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরে ওই বছরের ১৩ মে দায়িত্ব বুঝে নেন উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং ১৬ মে দক্ষিণ সিটির দায়িত্ব বুঝে নেন শেখ ফজলে নূর তাপস।
নির্বাচনী ইশতেহারে আতিকুল ইসলাম সুস্থ, সচল ও আধুনিক নগরী গড়ার লক্ষ্যে ৩৮টি এবং শেখ ফজলে নূর তাপস ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে প্রায় অর্ধশত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন বছর মেয়াদকালে দুই মেয়র অধিকাংশ কাজই শুরু করতে পারেনি। এ অবস্থায়, মেয়াদের বাকি দুই বছরে কতটা কী করতে পারবেন সেটি নিয়ে রয়েছে সংশয়।
মশক নিধন
মশক নিধন রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের অন্যতম প্রধান কাজের ক্ষেত্র। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ছাড়িয়ে যায় অতীতের সব রেকর্ড। কিন্তু মশা নিধনে সাফল্য দেখাতে পারেনি দুই সিটি করপোরেশন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি শহর পরিদর্শন করে এতদিন ভুল পদ্ধতিতে মশা নিধন কার্যক্রম চালানো হয়েছে বলে স্বীকার করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বরত আওয়ামী লীগ মনোনীত এই মেয়র ঘোষণা দেন, এখন থেকে ল্যাব টেস্টের ফলাফল অনুযায়ী মশার প্রজাতি শনাক্ত করে নিধন করা হবে।
অন্যদিকে এপ্রিলে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, তারা পুরনো নিয়মে ফগিং এবং লার্ভিসাইডিংয়ের মাধ্যমেই মশা নিধন কার্যক্রম চালাবেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, ‘মশক নিধনে ভুলের মাশুল হিসেবে গত বছর ডেঙ্গু প্রায় আউটব্রেকের পর্যায়ে যায়। মশা মারার পাশাপাশি প্রতিরোধ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মশা যেখানে তৈরি হয় তা পরিষ্কার করতে দুই সিটিই ব্যর্থ। বনানী-গুলশান লেকের পাশে দুর্গন্ধে হাঁটা যায় না। মশা তো এসব জায়গাতেই হয়। কিন্তু পরিষ্কারের উদ্যোগ নেই। তারা যে দাবি করেন তার সঙ্গে বাস্তব অভিজ্ঞতার মিল নেই।’
যানজট নিরসন
দুই মেয়রেরই নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল নগরীর যানজট নিরসন। কিন্তু তাদের এই তিন বছর মেয়াদকালে যানজট তো কমেইনি, উল্টো বেড়েছে। প্রতিদিন ঢাকায় বেড়ে চলা জনসংখ্যার ঘনত্ব যেমন দায়ী, তেমনি একে মোকাবিলায় সঠিক ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
যানজট নিরসনে উত্তরের মেয়রের প্রতিশ্রুতি ছিল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা, নিরাপদ পথচারী পারাপার নিশ্চিত করতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল পুশ বাটন সিগন্যাল স্থাপন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা চালু, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণ-স্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিত, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পার্কিং ব্যবস্থা নির্মাণসহ নানা কর্মসূচির। এছাড়াও ছিল নগরে ইলেকট্রিক বাস চালুর প্রতিশ্রুতি। যার কোনোটিই বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, শুরুও করা যায়নি।
যানজট নিরসনে দক্ষিণের মেয়রের প্রতিশ্রুতি ছিল— গণপরিবহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুতগতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীরগতির যানবাহন, আবার কিছু রাস্তায় শুধু মানুষের হাঁটার ব্যবস্থা করা। এছাড়া, দ্রুতগামী যানবাহনের জন্য আলাদা পথ ও নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা করে রাস্তা পারাপারের সুব্যবস্থাসহ নগর ঘুরে দেখার ব্যবস্থা করা। এসব প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন হয়নি।
তবে ইতোমধ্যে বাস রুট রেশনাইলেজশনের মাধ্যমে রাজধানীকে কয়েকটি ক্লাস্টারে ভাগ করে কাজ শুরু করেছে দুই সিটি। চলতি বছর থেকে কাজ শুরু করা গ্রিণ ক্লাস্টারের আটটি রুটের মধ্যে ২১, ২২ ও ২৬ নম্বর রুটে বিআরটিএর সমন্বয়ে চলছে ঢাকা নগর পরিবহনের বাস। ২৪, ২৫, ২৭ এবং ২৮ নম্বর রুটে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া আগামী বছরের মধ্যে একশ বৈদ্যুতিক বাস আনার ঘোষণা দিয়েছেন দুই মেয়র।
গত বছরই ঢাকার যানজট নিরসনে শহরের প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার জন্য স্কুল বাসের ব্যবস্থা করার বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। কয়েকটি বেসরকারি স্কুলে বিছিন্নভাবে স্কুলবাস চালু করতে রাজি হলেও এখনও বড় কোন সাফল্য আসেনি এক্ষেত্রে।
বিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, ‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় মেয়র আনিস প্রস্তাবিত বাস রুট র্যাশনালাইজেশন চালু করা গেলেও অনেক অগ্রগতি হত। কিন্তু সেটা বাস্তবায়নেও দীর্ঘ সময় লাগিয়ে দিচ্ছেন তারা।’
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)র নির্বাহী পরিচালক নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘দক্ষিণের মেয়র অযান্ত্রিক যানবাহন শৃঙ্খলায় আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আনেননি। নতুন কর্মসূচির তুলনায় ম্যানেজমেন্ট ঠিক করা সহজ কিন্তু তাতেও তারা পিছিয়ে আছেন।’
জলাবদ্ধতা নিরসন
ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই মেয়রের প্রতিশ্রুতির জেরে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি ওয়াসার কাছ থেকে খালগুলোকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের পরপরই দুই সিটি করপোরেশন খালগুলো উদ্ধারে মাঠে নামলেও এখনও পুরোপুরি পানির প্রবাহ ফেরাতে এবং দখলমুক্ত করতে পারেনি তারা। জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকেও মেলেনি মুক্তি।
চলতি বছরের মে মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজস্ব অর্থায়নে ১৩৬টি স্থাপনা নির্মাণ করেছে ডিএসসিসি।’
দুই সিটি মেয়রই দাবি করেন ঢাকায় এখন জলাবদ্ধতা নেই বললেই চলে।
তবে মেহেদী আহসান বলেন, ‘দুই মেয়রেরই কিছু কাজ ভালো, তবে সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য তারা অনেক কথা বলে, কিন্তু কাজের কাজ তো হচ্ছে না। এর মধ্যে অন্যতম বলা যায় খাল উদ্ধার। দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছরে উদ্ধার ও সংরক্ষণ কার্যক্রম আরও দৃশ্যমান হওয়া উচিৎ ছিল যা হয়নি। গত বছর বৃষ্টি অনেক কম হওয়ায় জলাবদ্ধতা নিরসনে তাদের সাফল্য এখনই বলা যাচ্ছে না।’
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
নগর ব্যবস্থাপনার অন্যতম দায়িত্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন তৈরির মাধ্যমে নগরীর সড়কে ময়লা জমে দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও তিন বছরে দুই মেয়র এখনও গড়ে তুলতে পারেননি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন আমিনবাজারে বর্জ্য বিদ্যুৎ তৈরির ঘোষণা দিলেও সেটির অগ্রগতি এখনও অজানা।
এছাড়া প্রতিটি বাড়িতে নিজস্ব পয়োঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রতি জোর দেন মেয়র আতিক। স্যুয়ারেজ লাইন খালে যুক্ত করলে সুয়ারেজ ড্রেনের মুখে কলাগাছ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে পরে গুলশানের কিছু বাড়ির স্যুয়ারেজ লাইনে কলাগাছ ঢুকিয়ে দেন তিনি। কিন্তু কয়েক মাস চলে গেলেও সমগ্র উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার সুয়ারেজ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখনো সমন্বয় আসেনি।
মেহেদী আহসান বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হলেও শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখনও সামগ্রিক পরিকল্পনার মধ্যে আসেনি।’
রাজধানীর প্রধান প্রধান সমস্যাগুলোর দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে পিছিয়ে থাকলেও কিছু কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন দুই মেয়র। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের পোস্টারবিরোধী অবস্থানের অংশ হিসেবে ঢাকার মগবাজার ফ্লাইওভারের স্প্যানে দৃষ্টিনন্দন পেইন্টিং সবার নজর কেড়ে নেয়। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত মেয়র কাপে ওয়ার্ডভিত্তিক দল অংশ নেয় যা তরুণদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বেশ কয়েকটি মাঠ উদ্ধার করে উন্নয়ন করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। যদিও এসব মাঠের অনেকগুলোই বিভিন্ন ক্লাবের দখলে থাকায় সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারে না। মেয়র তাপসের উদ্যোগে আদি বুড়িগঙ্গা উদ্ধার কার্যক্রমও যথেষ্ট আশা জাগানিয়া। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যে কাজটি শেষ করতে পারবেন কি-না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটির মধ্যে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থাপনা নিয়ে ঐতিহ্যবলয় সৃষ্টির কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন বর্তমান মেয়র। আটটি ঐতিহ্যবলয়ের মধ্যে একটির কাজ পরিদর্শন দিয়ে শুরু হলো মাত্র। বাকি দুই বছরের মধ্যে কাজটি শেষ হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘প্রতিশ্রুতির অধিকাংশই অপূর্ণ। সিটি করপোরেশন চাইলেও ঢাকার বাস্তবতায় তারা সবটা পারবেন না। কিন্তু ঢাকার মতো শহরে যে স্কেলে বা গতিতে কাজ করা দরকার তা হচ্ছে না। যেমন প্রাথমিক বাধা দূর করে তারা নগর পরিবহনের কাজ শুরু করলেও মাত্র ঘোষণা দিচ্ছেন ১০০টি ইলেক্ট্রিক বাস আনার যেখানে সংখ্যাটি হওয়া উচিত অন্তত এক হাজার। এই গতিতে চললে দশ থেকে বারো বছর লেগে যাবে। এখানে প্রধান সমস্যা ভিশনে।’
‘কমিউনিটি ও কমিশনারদের সম্পৃক্ত না করার ফলে অনেক সাফল্যই ধরে রাখতে পারেননি বা কাজ করতে পারেননি। উদ্ধার করা খাল ঠিক রাখতে এলাকাবাসী আরও সহায়ক হতে পারত। দক্ষিণের মেয়রের আদি বুড়িগঙ্গা উদ্ধারের কার্যক্রম যথেষ্ট ভালো কিন্তু এটি দ্রুত শেষ করা দরকার। দুই মেয়রের ক্ষেত্রে একটি বড় ব্যর্থতা খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে না পারা। উন্নয়ন কাজ করেও তা ক্লাবের দখলে থাকায় তা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারছেন না। অনেকসময় পার্কও লিজ দেওয়া হচ্ছে এলাকার কাউন্সিলরদের যার ফলে পার্কে ঢুকতেও অনেকসময় টিকেট কাটা লাগছে, বলেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।
ওয়ার্ড কাউন্সিলগুলো নির্জীব থাকলে মেয়রদের সাফল্য খুব একটা কার্যকরী হবে না। তাই সব পক্ষের সমন্বয়ে নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খানের।
সারাবাংলা/আরএফ/এমও
আইপিডি ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট আইপিডি জলাবদ্ধতা ডিএনসিসি ডিএসসিসি ঢাকা উওর সিটি করপোরেশন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঢাকার ২ মেয়র প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স বাস রুট রেশনাইলেজশন বাস্তবায়ন বিআইপি মশক নিধন মোঃ আতিকুল ইসলাম শেখ ফজলে নুর তাপস