Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘূর্ণিঝড় মোখা: গ্যাস সংকটে দুর্ভোগ চট্টগ্রামে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মে ২০২৩ ১৪:১১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস সংকটে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। গ্যাসের জন্য ফিলিং স্টেশনগুলোর সামনে তৈরি হয়েছে গাড়ির দীর্ঘ সারি। নগরীর বাসাবাড়ি ও হোটেল-রেস্তোঁরায়ও চুলা জ্বলেনি। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে গৃহস্থালিতে ব্যবহারের জন্য সীমিত আকারে গ্যাস করা হয়েছে।

ক্রমশ ধেয়ে আসা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব এড়াতে কক্সবাজারের মহেশখালির দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুক্রবার (১২ মে) রাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাতেই বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ও আংশিক চালু থাকতে পারে। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৩ মে) সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীসহ কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ আস্তে আস্তে কমতে থাকে। সকাল ৮টার দিকে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

কেজিডিসিএল’র উপ মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও সমন্বয়) মীর মোহাম্মদ শফিউল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় পাইপলাইনে গ্যাস সঞ্চালন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ জন্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

শনিবার সকালে নগরীর কদমতলীতে কুলিয়ারচর সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস এবং অটোরিকশার দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। গ্যাসের অভাবে নগরীতে গণপরিবহনও তুলনামূলক কম দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রাইভেট কার চালক জয়নাল আবেদীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত (শুক্রবার) রাত ১০টা থেকে কয়েকটি স্টেশনে গিয়ে গ্যাস নেওয়ার চেষ্টা করেছি। রাতে এত ভিড় ছিল, কোথাও ঢুকতে পারিনি। ভোর ৬টায় এসে লাইন দিয়েছি। গ্যাস পাইনি।’

সিএনজি অটোরিকশা চালক খোকন ভট্টাচার্য্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে, এটা আমাদের আগে জানানো দরকার ছিল। রাতে জানালে আমরা গ্যাস নেব কিভাবে? এখন গাড়ি বের করেছি, মালিককে তো ঠিকই টাকা দিতে হবে। কিন্তু গাড়ি চালাতে না পারলে টাকা কোথা থেকে দেব ?’

কুলিয়ারচর সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক রিদোয়ান কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা গত রাতে নোটিশ পেয়েছি।’

নগরীর অধিকাংশ বাসায় গ্যাস না থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাতে কিছু কিছু এলাকায় থাকলেও সকালে অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস নেই।

নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ের সালাম ভিলার বাসিন্দা ধীমান বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে বাসায় গ্যাস নেই। চা-ও খেতে পারিনি। বিঘ্নিত হবে বলা হয়েছে, একেবারে বন্ধের কথা বলা হয়নি।’

নগরীর কাজীর দেউড়ির রোদেলা বিকেল রেস্তোঁরার ব্যবস্থাপক শিবু দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্যাসের কারণে রান্না সেভাবে সম্ভব হয়নি। আমাদের প্রতিদিন যেসব আইটেম থাকে, সেগুলো কমিয়ে ফেলতে হয়েছে।’

কেজিডিসিএল’র বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (উত্তর) প্রকৌশলী মো, শফিউল আজম খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্যাস সরবরাগে সংকট কখন কমবে, সেটা আমরা এই মুহুর্তে বলতে পারছি না। এক সপ্তাহ লাগতে পারে, এর বেশিও লাগতে পারে। তবে কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে, সেটা মন্ত্রণালয়ে উর্দ্ধতনরা চিন্তাভাবনা করছেন। শিগগরিই মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর