Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অধ্যাপক তাহের হত্যায় আসামিদের ফাঁসি স্থগিতের রিট খারিজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ মে ২০২৩ ১৭:৫১

ঢাকা: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের হত্যা মামলায় মামলায় চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে করা রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (১৪ মে) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি ও যাবজ্জীবন দণ্ডিত এক আসামির করা আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ হয়েছে।

চলতি মাসে একজনের ভাই ও অপরজনের স্ত্রী এ রিট করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম। অধ্যাপক তাহেরের পরিবারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা।

রিট করার পর আবেদনকারী পক্ষ জানায়, আসামিদের আটক, গ্রেফতার ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণে সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ব্যত্যয় হয়েছে।

তাই এক আসামির ভাই ও আরেক আসামির স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেছেন। রিটে ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চাওয়া হয়।

তবে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, সর্বোচ্চ আদালতে রিভিউ নিষ্পত্তির পর এ ধরনের আবেদন আদালত অবমাননার শামিল।

এর আগে, ২ মে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি ও যাবজ্জীবন দণ্ডিত এক আসামির আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

এর আগে, ২ মার্চ প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আট বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ খারিজ করে দেন।

ফলে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে ফাঁসির কাষ্ঠে যেতেই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তবে তার আগে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন। আর যথারীতি যাবজ্জীবন দণ্ডিতদের সাজাভোগ করতে হবে।

জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয় জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

সেই মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চার জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুই জনকে খালাস দেন।

ওই রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।

শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল অধ্যাপক এস তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা আসামিরা হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম। আর ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন- নাজমুল আলম ও আব্দুস সালাম।

এরপর হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। অন্যদিকে সাজা কমিয়ে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।

এরপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় রাবির একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং আরও দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ।

গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। এরপর বছরের গত ৫ অক্টোবর ৬৮ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়।

এরপর মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত রাবির সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম এবং যাবজ্জীবন দণ্ডিত আব্দুস সালাম রিভিউ আবেদন করেন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রিভিউয়ের ওপর শুনানি শুরু হয়। এরপর শেষ হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। আর গত ২ মার্চ রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। এরপর রিভিউ খারিজ করে দেওয়া রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করে সর্বোচ্চ আদালত।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

অধ্যাপক তাহের হত্যা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর