কয়লাভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ আসছে ১৩৩৮ প্রকল্প
৮ মে ২০১৮ ১৮:৩৬
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : কক্সবাজারের পেকুয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পসহ ১ হাজার ৩৩৮ নতুন প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)। বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তালিকায় রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পুরো অর্থবছরজুড়ে এখান থেকে প্রক্রিয়াকরণ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হবে।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এমন প্রকল্প ছিল ১ হাজার ২৭টি। সে তুলনায় আগামী অর্থবছর নতুন প্রকল্প বাড়ছে ৩১১টি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সামনে নতুন প্রকল্পগুলোর তালিকা উপস্থাপন করা হচ্ছে।
পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম এ বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘নতুন প্রকল্পগুলো তালিকায় রাখা হচ্ছে যেনতে পরে সেগুলো অনুমোদনে সুবিধা হয়।’ তবে চূড়ান্ত তালিকায় প্রকল্পের সংখ্যা কম-বেশি হতে পারে।’ এটিই স্বাভাবিক বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত ৩ মে অনুষ্ঠিত পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিল মাসের ৯ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক। টানা চার দিনের এ সিরিজ বৈঠকের মধ্য দিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ১ হাজার ৩৩৫টি প্রকল্প বরাদ্দহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকা অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশপত্র তৈরি করা হয়। আগেই অনুমোদন হওয়ায় ১১টি প্রকল্প এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। প্রকল্প সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ৩২৪টি। পরে প্রোগ্রাম কমিটির সভার পর সেক্টর বিভাগ/মন্ত্রণালয় বা বিভাগ থেকে আরও ১৪টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। ফলে শেষ পর্যন্ত বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৩৩৮টিতে।
সূত্র জানায়, অননুমোদিত ও বরাদ্দবিহীন নতুন প্রকল্পের মধ্যে সর্বোচ প্রকল্প রয়েছে ভৌত পরিকল্পনা পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতে ২৯৮টি; দ্বিতীয় অবস্থানে পরিবহন খাতে ২১৮টি ও তৃতীয় অবস্থানে কৃষিখাতে ১৭০টি নতুন প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খাতের প্রকল্প সংখ্যা হচ্ছে শিক্ষা ও ধর্ম খাতে ৯৫টি, পানি সম্পদ খাতে ৭৫টি, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিখাতে ৬২টি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাতে ৫৭টি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ৫৬টি, শিল্প খাতে ৫৫টি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতে ৫১টি, সমাজ কল্যাণ, মহিলা বিষয়ক ও যুব উন্নয়ন খাতে ৪২টি, জনপ্রশাসন খাতে ৪১টি, বিদ্যুৎ খাতে ৩০টি, শ্রম ও কর্মসংস্থান খাতে ২৫টি, জনসংযোগ খাতে ২৩টি নতুন প্রকল্প এবং তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে ৪টি নতুন প্রকল্প রয়েছে।
নতুন প্রকল্প তালিকায় থাকা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্প হচ্ছে,পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ, ঢাকায় বিসিক ক্যামিক্যাল পল্লী নির্মাণ, বিসিক শিল্প নগরী, কেরানীগঞ্জ-২, চামড়া শিল্পনগরী (দ্বিতীয় ফেজ), পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সংযোগ সড়ক ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ, ডিপিডিসির আওতায় সাড়ে ৮ লাখ প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন, ঢাকার গুলশানে ১৩২/৩৩/১১ কেভি ভূ-গর্ভস্থ গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ, মোল্লাহাট ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন, জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ বৃদ্ধি কার্যক্রমে অর্থায়ন প্রকল্প, পেকুয়ায় আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভূমি উন্নয়ন ও সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (মেট্রোরেল) এমআরটি লাইন ১, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে সাবওয়ে নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই, যমুনা নদীর তল দেশে টানেল নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা, আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নৌ-বন্দর নির্মাণ, চিলমারীতে আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ নদীবন্দর নির্মাণ, নিঝুম দ্বীপ ও হাতিয়ায় পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ, মক্তিযুদ্ধে শহীদ ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ঢাকায় একটি ঘৃণা স্তম্ভ এবং বিভাগীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ এবং মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প।
সারাবাংলা/জেজে/একে