মোখা যেন ‘উপভোগের’ ঝড়, পতেঙ্গায় মানুষের ভিড়
১৪ মে ২০২৩ ১৮:২৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। তবে মোখার তেমন প্রভাব বন্দরনগরীতে পড়েনি। বরং ঘূর্ণিঝড় ‘উপভোগ করতে’ নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ভিড় জমিয়েছে শত শত মানুষ।
রোববার (১৫ মে) বিকেলে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের এত সতর্কবার্তাকে পাত্তা না দিয়ে শত, শত মানুষ ঘুরছে-ফিরছে সাগরতীরে। কেউ কেউ নেমেছেন সাগরেও। অনেকেই ছোট বাচ্চা নিয়েও আসেন। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বন্ধ ছিল সব দোকানপাট।
ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘুরতে আসা মো. কামরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, দুপুরে মোটামুটি জানতে পেরেছি ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব চট্টগ্রামে পড়বে না। তাই পরিবার নিয়ে সমুদ্র দেখতে এসেছি। যেহেতু এখন কোনো জাহাজ নেই আর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাস আছে সমুদ্রের আসল রূপ মিস করতে চাইনি।’
বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসা প্রফুল্ল দেবনাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় উপভোগ করতে বন্ধুরা সবাই মিলে সমুদ্রে ঘুরতে এসেছি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের বিন্দুমাত্র প্রভাব এখানে নেই। তবুও কিছুটা বাতাস ও ঢেউ আছে। সেটিই উপভোগ করছি।’
সমুদ্র সৈকত ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ এবং আউটার রিং রোডে মানুষের বেশ উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
কিছু কিছু পুলিশের টহল দেখা গেছে সৈকতে। তবে টুরিস্ট পুলিশ কিংবা কর্তৃপক্ষের তেমন তৎপরতা নেই পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণে। গতকাল ঘূর্ণিঝড় নিয়ে প্রচারণা বা মাইকিং করতে প্রশাসনকে দেখা গেলেও আজ তাদেরকে তেমন দেখা যায়নি।
রোববার দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৯ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ কক্সবাজার মিয়ানমার উপকূল দিয়ে স্থলভাগে উঠে যাওয়ায় চট্টগ্রামে ঝড়ের তেমন প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক ওবায়েদ উল্লাহ।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যানুসারে রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টার থেকে উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়টি বাংলাদেশের ভূখণ্ড পার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সর্বশেষ তথ্যে বাংলাদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমে এসেছে। মূলত অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড় মূল আঘাত হানবে মিয়ানমারের সিটওয়ে অঞ্চলে।
এর আগে, আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-২০) বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ অগ্রসর হয়েছে। এটি রোববার (১৪ মে) সকাল ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কি.মি. দক্ষিণে, মোংলা- সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিল।
বর্তমানে ঝড়টি কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার (১৪ মে) বিকাল নাগাদ সিটুয়ের (মিয়ানমার) কাছ দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শেষ করতে পারে।
ছবি : শ্যামল নন্দী, ফটো করেসপন্ডেন্ট
সারাবাংলা/আইসি/একে