আরিফ এখনও ভাবছেন, মাঠে আওয়ামী লীগ ও জাপা
১৫ মে ২০২৩ ১০:১২
সিলেট: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রহস্য জিইয়ে রেখেছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি প্রার্থী হবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট করেননি। তবে আগামী ২০ মে সিলেটের রেজিস্টারি মাঠে দলের নেতাকর্মী ও নগরের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সিদ্বান্ত জানাবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, নির্বাচনে মেয়র পদে দলের যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি নির্বাচনে না আসার সিদ্ধান্তের কারণে দলটির মনোনয়নে গত দুটি নির্বাচনে জয় পাওয়া আরিফুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট বিএনপি’র একাধিক নেতা সারাবাংলাকে জানান, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। ফলে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আসছে না দলটি। কেউ যদি স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন তাহলে তার সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে নামবেন না। ইতোমধ্যে দলের পদ-পদবিতে থাকা নেতাকর্মীদের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন না করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় দো-টানায় পড়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দলীয় সিদ্বান্ত ও নগরের মানুষের মতামতের আলোকে তিনি ২০ মে তার সিদ্বান্ত জানাবেন। তবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের অতি উৎসাহী কর্মকর্তাদের ধরপাকড় ও তল্লাশির ঘটনায় আমি চিন্তিত। ফলে সার্বিক বিষয় মাথায় রেখে সিদ্বান্ত নিতে হচ্ছে।’
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আরিফ। তার মতে, ইভিএম-এ ভোটদানে সিলেটের মানুষ অভ্যস্থ নয়। ফিঙ্গারিং না মেলা, ধীর গতিতে ভোটগ্রহণ, এমনকি কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিয়েও শঙ্কায় আছেন তিনি। আর এসব হলে নির্বাচনের স্বচ্ছতার বিষয়টিও মাথায় রাখছেন বলে জানান।
এদিকে, এবারের সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। ইতোমধ্যে দলের পক্ষ থেকে মহানগর আহ্বায়ক শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রোববার বাবুলের পক্ষ থেকে মেয়র পদে মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে বাবুলের প্রার্থিতাকে ঘিরে জাতীয় পার্টিতে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
এর আগে, মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলায় কেন্দ্রীয় সদস্য ও মেয়র পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়াও শোকজের কবলে পড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য দেওয়া ও ভোট চাওয়া সাবেক এমপি এবং দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া।
সিলেট সিটির বিগত দুই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে কেউ অংশ নেননি। ফলে সিলেট নগরে দলীয় ভোটব্যাংক সম্পর্কে ধারণা কম বলে জানান চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সিলেট জাপার শীর্ষ নেতা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নিলে নগরে দলের ভোট সর্ম্পকে ধারণা পাওয়া যাবে। এছাড়া নির্বাচনে জাপার প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বাইরে সিলেট সিটিতে মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে প্রার্থী করে মাঠে নেমেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দিলেও সেরকম কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায়-ই আসতে পারেননি। দলের সিলেট মহানগর কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ সারাবাংলাকে বলেন, “নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে সংগঠনের কমিটি রয়েছে। বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সমর্থক থাকায় নির্বাচনে এবার তাদের প্রার্থী ‘ফ্যক্টর’ হয়ে উঠেছেন।”
উল্লেখ্য, ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৩ মে। নির্বাচনে অংশ নিতে মেয়র পদে মোট ছয় জন এবং কাউন্সিলর পদে প্রায় চার শতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এবার সিলেট সিটিতে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সারাবাংলা/পিটিএম