মোখায় ক্ষত-বিক্ষত সেন্টমার্টিন, জেলার ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত
১৪ মে ২০২৩ ২৩:৫৬
কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কেন্দ্র বাংলাদেশে আঘাত না হানলেও এর অগ্রভাগের তাণ্ডব উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার দিয়ে বয়ে গেছে। ‘মোখা’র হাত থেকে শেষ রক্ষা পায়নি দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। ঝড়ের আঘাতে পুরো দ্বীপটি ক্ষত-বিক্ষত। মোখায় বড়ধরনের কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও কক্সবাজার জেলায় বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ১২ হাজার ঘর।
রোববার (১৪ মে) বিকেলে ‘মোখা’ উপকূল অতিক্রমের পর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, জেলায় ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর দুই হাজারের বেশি। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সেইসঙ্গে জোয়ারের পানিতে নতুন করে বেড়িবাঁধের কিছু এলাকাও ভেসে গেছে বলে জানা গেছে। ক্ষতি নির্ধারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করেছে।
‘মোখা’য় সেন্টমার্টিনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দ্বীপে গিয়ে ক্ষতির সার্বিক চিত্র বা পরিমাণ জানা যাবে।’ তিনি আরও জানান, ঝড়ের আঘাত লেগেছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়ন, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানী, পাটুয়ারটেক, সোনাপাড়া এলাকা।
এদিকে, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ‘মোখা’র আঘাতে দ্বীপের ১২ শতাধিক আধাপাকা টিন শেড ঘর ও ছোট কটেজ বাতাসে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। দ্বীপের ৭৫ শতাংশ গাছ ভেঙে গেছে। সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হলেও কোথাও প্লাবিত হয়নি। একজন নারী গাছ চাপায় আহত হয়েছেন। তবে নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে। যেখানে ব্যাপক সংখ্যক গাছ ছাড়াও আধাপাকা ও টিনশেড সব ঘর ভেঙে গেছে। উড়ে গেছে ছাউনি।
টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ‘টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়নের গাছের উপর তাণ্ডব চালিয়েছে মোখা। এসব এলাকার ৩০ শতাংশ গাছ ভেঙে গেছে। এছাড়া বহু ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।’
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ জানান, কক্সবাজারে ৫৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৩২ কিলোমিটার অরক্ষিত ছিল আগে থেকেই। এই ৩২ কিলোমিটারের বাইরে কোনো অংশে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা দেখা হচ্ছে।
কক্সবাজার আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানান, রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে।
এদিকে, কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া তিন লাখ মানুষ বিকেল ৫টা থেকে আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করে।
সারাবাংলা/পিটিএম