গাজীপুর: সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় পৌঁছেছে বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়া ‘ভাই খ্যাত’ বর্ষীয়ান চিত্রনায়ক, সংসদ সদস্য ও বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মরদেহ। তার গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের সোমটিওরীতে নেওয়া হচ্ছে জানাজার জানাজার প্রস্তুতি। সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে তার সর্বশেষ নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হবে তাকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চিত্রনায়ক ফারুকের ভগ্নিপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে বি এম মফিজুর রহমান খান।
তিনি বলেন, ‘চিত্রনায়ক ফারুকের প্রথম নামাজে যানাজা সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মে) সকাল ৭টা ৫০মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার ফ্লাইটে তার মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। সেখান থেকে সকাল ৯টায় রাজধানীর উত্তরায় তার নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সকাল ১১টায় জাতীয় শহীদ মিনার সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাদ যোহর এফডিসিতে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট গুণীজনের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন ও সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আসর গুলশান আজাদ মসজিদে তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া দক্ষিণ সোম গ্রামের বাড়ি সর্বশেষ (চতুর্থ) নামাজে জানাজা সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ’নামাজে জানাজা শেষে সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আজগার হোসেন পাঠানের পাশে শায়িত হবেন।’
এর আগে, সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
আকবর হোসেন পাঠান ফারুক আট বছর ধরে এই মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ সর্বশেষ ২০২১ সালে মার্চে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। ওই সময় পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
প্রায় পাঁচ দশক বাংলা সিনেমায় কাজ করেছেন অভিনেতা ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।