Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিবি অফিসে বসে মিতুকে খুনের পরিকল্পনা— জেরায় অনড় বাবা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ মে ২০২৩ ১৯:০৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেনকে চতুর্থ দফায় জেরা সম্পন্ন করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। বাবুল আক্তারের বান্ধবীর উপহার দেওয়া বইয়ে হাতের লেখা, তার সঙ্গে হোটেলে রাতযাপন, পারিবারিক কলহ, মিতুর আত্মহত্যার চেষ্টা, বাবুলের মিশনে সুদান-চীনে যাওয়া-আসা, এর মধ্যে খুনের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা- আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব বক্তব্য নিয়ে মোশাররফ জেরার মুখোমুখি হন। তবে তিনি সাক্ষ্যে দেওয়া বক্তব্যে অনড় থেকে ফের বলেছেন, সিএমপির ডিবি অফিসে বসেই বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মিতুকে খুনের পরিকল্পনা করেন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষী মোশাররফ হোসেনকে জেরা করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন।

বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে মোশাররফকে চতুর্থ দিনের মতো জেরা শুরু হয়। মাঝে দুই দফায় বিরতি দিয়ে জেরা চলে টানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত। জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় আদালত বৃহস্পতিবার (১৮ মে) পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মূলতবি করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মহানগর পিপি আব্দুর রশীদ।

মোশাররফকে বাবুল আক্তারের আইনজীবীর জেরা

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার হাটহাজারি থেকে প্রমোশন হয়ে কক্সবাজারে যায়, সেখানে এক সমাজকর্মী ভারতীয় বংশদ্ভেূাত বান্ধবীর সাথে বাবুল আক্তারের পরিচয় হয়। ওই বান্ধবীর একটি সন্তান ছিল। পরস্পরের বাসায় তাদের যাতায়াত ছিল। ওই বান্ধবীর বাসার গৃহকর্মী ও দারোয়ান সব ভালো বলতে পারবে। তারা হোটেলেও রাত্রিযাপন করেছিল। ওই বান্ধবী তার শিশুসন্তানকে গৃহকর্মীর কাছে রেখে কাজের কথা বলে বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতো। এসব আপনি ১৬১ ধারার জবানবন্দি ও এজাহারে উল্লেখ করেননি।

উত্তর: আমি সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) সব বলেছি। এজাহারে বলিনি তা সত্য।

প্রশ্ন: আপনি এই কথাগুলো আদালতে প্রথম বলেছেন এবং অন্যের শেখানো মতে বলেছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বান্ধবীর ছেলের নাম আপনি কোথা থেকে পেয়েছেন? কবে পেয়েছেন?

উত্তর: স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: ওই ছেলের বয়স কত ছিল?

উত্তর: ছয় থেকে সাত বছর।

প্রশ্ন: ওই ছেলেটাকে দেখেছেন?

উত্তর: দেখেছি।

প্রশ্ন: ওই বান্ধবীর বাবুলের বাসায় আসা, যাওয়া, খাওয়া- এসব কথা মুখের কথা ছাড়া আর কোনো প্রমাণ আছে?

বিজ্ঞাপন

উত্তর: ডকুমেন্টারি কোনো কিছু নেই।

প্রশ্ন: কক্সবাজারে ওই বান্ধবীর সাথে বাবুল আক্তারের সম্পর্ক কতদিনের? বলতে পারবেন?

উত্তর: কক্সবাজারে যতদিন ছিল ততদিন সম্পর্ক ছিল। সুনির্দিষ্ট তারিখ, মাস, বছর বলতে পারব না।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তারের ওই বান্ধবী কক্সবাজারে কর্মকালীন কতদিন ছিলেন?

উত্তর: বান্ধবী ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কর্মস্থলে ছিলেন।

প্রশ্ন: ওই পিরিয়ডে বাবুল আক্তার কত দিন কক্সবাজারে ছিলেন?

উত্তর: বাবুল আট থেকে নয় মাস ছিল। সম্ভবত ২০১৩ সালে।

প্রশ্ন: ওই সময়ে আপনি কক্সবাজারে কতবার গিয়েছিলেন?

উত্তর: দুই-তিনবার গিয়েছিলাম।

প্রশ্ন: বান্ধবীর বাসায় গিয়েছেন?

উত্তর: না।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তারের বাসা থেকে উনার বাসা কত দূরে?

উত্তর: জানি না।

প্রশ্ন: বান্ধবীর কর্মকালীন সময়ে বাবুল আক্তার কক্সবাজারে অবস্থান করেছিলেন ২৮ দিন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বান্ধবীর কোনো ছেলে আছে এটা মিথ্যা কথা।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: একদিন বাবুল আক্তার, তার বান্ধবী ও মিতু এবং তাদের বাচ্চাসহ কক্সবাজারে হোটেলে ছিল। রাতে বাবুল বান্ধবীর রুমে ছিল। দেরি হওয়ায় মিতু বাবুলকে ডাকতে গেলে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। এইসব কথা আপনি ১৬১-এ বলেননি, আবার এজাহারেও উল্লেখ করেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। এজাহারে বলিনি।

প্রশ্ন: কত তারিখ কোন হোটেলে তারা ছিল বলতে পারবেন?

উত্তর: স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: আপত্তিকর অবস্থায় মিতু বাবুল ও তার বান্ধবীকে দেখে ফেলার ঘটনার পর আপনি কক্সবাজারে গিয়েছেন কিনা বা কখন গিয়েছেন?

উত্তর: একবার গিয়েছি। কখন গিয়েছি স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: ওই হোটেলটা বাবুল আক্তারের বাসা থেকে কত দূরে? বা জানেন কি না?

প্রশ্ন: জানি না।

প্রশ্ন: ওই বান্ধবীর স্বামী ছিল?

উত্তর: আদৌ স্বামী আছে কি না জানা নেই।

প্রশ্ন: ওই ঘটনার পর তাদের পারিবারিক কলহ বৃদ্ধি পায়। মিতু তার মাকে কল দিয়ে জানায়। তার মা ঢাকার বাসায় চলে যেতে বলে। এসব কথা আইও এজাহারে বলেননি।

উত্তর: আমি আইওকে বলিনি সত্য নয়। তবে এজাহারে বলিনি।

প্রশ্ন: এসব কথাগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। এগুলো অন্যর শেখানো অনুযায়ী এখানে বলেছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল চট্টগ্রামে বদলি হলে সপরিবারে চট্টগ্রামে চলে আসে। তখন কলহ আরও বৃদ্ধি পায়। বাবুলের মা-বাবা তার পক্ষে নিতো।…… এসব কথাগুলো ১৬১তে এবং এজাহারেও বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি তবে তিনি কি লিখেছেন জানি না। এজাহারে বলিনি।

প্রশ্ন: মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মিতু আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গৃহকর্মী ও ছেলে মাহির তখন তাকে সেইভ করে। ঘটনা কত তারিখে ও কোন সালে?

উত্তর: ২০১৫ সালের প্রথম দিকে। বাবুল আক্তার সুদানে যাওয়ার পূর্বে। কত তারিখ বলতে পারব না।

প্রশ্ন: আত্মহত্যার বিষয়ে এসব কথাগুলো সব বানোয়াট ও মিথ্যা।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: ওই ঘটনার পর মিতু আরও একবার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। এটা কোনদিন, কোন মাস, কোন তারিখ বলতে পারবেন?

উত্তর: এই মুহূর্তে স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: আর একবার বলেছেন মিতু ভবনের আটতলায় সারারাত অবস্থান করেছে। এটি কোন মাস, কোন তারিখ বলতে পারবেন?

উত্তর: স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: আরেকবার বলেছেন, মিতু ব্যাগেজ নিয়ে লিফটে উঠে চলে যেতে চাইলে তখন মাহির ও কাজের মেয়ে ফাতেমা চাবি চেপে ধরে বাসায় নিয়ে যায়। এটা কোন দিন, কোন মাসে, কোন বছরে?

উত্তর: এই মুহূর্তে স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: এই দিনক্ষণ, তারিখগুলো কোনোদিন কাউকে বলেছেন? এসব অভিযোগ কোথাও লিখিতভাবে জানিয়েছেন ?

উত্তর: না।

প্রশ্ন: এই কথাগুলো বানোয়াট। অন্যর শেখানো মতে এগুলো বলছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: চট্টগ্রামের বাসায় থাকাকালে ওই বান্ধবীর সাথে বাবুলের মোবাইলে কথা হতো। এগুলো মিতু জানতে পারে। পরে বাবুল এগুলো জেনে যাওয়ায় মিতুকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এইসব আপনি আইও’কে ও এজাহারে বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। তিনি কি লিখেছেন জানি না। এজাহারে বলিনি সত্য।

প্রশ্ন: চট্টগ্রামের বাসায় থাকাকালে বান্ধবীর সাথে বাবুল আক্তারের মোবাইলে কথা হতো। এগুলো কোন তারিখ, কোনদিন? কোন নম্বর ও কোন দেশ থেকে?

উত্তর: আমি যতটুকু জেনেছি কক্সবাজার থেকে যোগাযোগ করতো। ২০১৪-১৫ সালের দিকে কথা বলেছে। কোন দিন জানি না, স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: আপনি ফোনকলের রেকর্ড শুনেছেন ?

উত্তর: না, শুনিনি।

প্রশ্ন: এইসব আপনি জানেন না, তাই বলে আপনি ভূয়া কথা বলছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: আপনি বলেছেন, বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করার পরিকল্পনা করে। বাবুল আক্তার কোনদিন, কোথায় বসে, কতক্ষণে এই পরিকল্পনা করেন, তার রেকর্ড আপনার কাছে আছে?

উত্তর: এটা শুনেছি। চট্টগ্রামে যোগদান করার পর বাবুল আক্তার মুসার সাথে বসে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার স্থান বাবুলের অফিস ও মেট্রোপলিটন মেডিকেলের পাশের গলি। সিএমপির ডিবি অফিস। কোন তারিখ, মাস স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: পরিকল্পনার কোনো ছবি বা ডকুমেন্ট আছে ?

উত্তর: না নেই।

প্রশ্ন: যেসব জায়গা বলেছেন সেসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। আপনি সেসব ছবি সংগ্রহ করেননি?

উত্তর: সিসি ক্যামেরা আছে কি না আমি জানি না।

প্রশ্ন: এসব কথা কার কাছ থেকে শুনেছেন?

উত্তর: মিতুর হত্যার পূর্বে শুনেছি। কার কাছ থেকে শুনেছি স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: হত্যাকাণ্ডের কয়মাস আগে শুনছেন?

উত্তর: বাবুল আক্তার মিশনে যাওয়ার আগে। আনুমানিক এক বছর আগে।

প্রশ: যে বলেছে সে কি মোবাইলে বলেছে নাকি সরাসরি বলেছে?

উত্তর: হত্যাকাণ্ডের আগে মিতু এই কথাগুলো বলে গেছে। আর আর কাছ থেকে শুনেছি তা টেলিফোনে শুনেছি।

প্রশ্ন: কোন টেলিফোন নম্বর থেকে বলেছে সেটা বলতে পারবেন?

উত্তর: পারব না।

প্রশ: মিতু কোনদিন, কোন মাসে, কোন বছরে বলেছে বলতে পারবেন?

উত্তর: ২০১৫ সালের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে বলেছে।

প্রশ্ন: এই কথাগুলো আপনাকে মিতু কীভাবে বলেছে?

উত্তর: মোবাইলে ফোনে বলেছে।

প্রশ্ন: এই কথাগুলো শোনার পর আপনি মিতুকে হত্যা থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো উদ্যেগ নিয়েছিলেন?

উত্তর: লিখিতভাবে কোথাও কমপ্লেইন করিনি, তবে মৌখিকভাবে বাবুলের পরিবারকে বলেছি।

প্রশ্ন: মৌখিকভাবে বা পারিবারিকভাবে যেটা জানিয়েছেন বলছেম সেটা বানোয়াট।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তাররের বাসায় জঙ্গি হামলা হতে পারে এজন্য তার বাসায় কে যায়, কে আসে সেটার জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার করার কথা আপনি ১৬১ ও এজাহারে বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি।

প্রশ্ন: এটা মিথ্যা ও বানোয়াট।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাসার বিপরীতে যে চায়ের দোকানদার ও তরকারি বিক্রেতার কথা আপনি সাক্ষ্যে বলেছেন তাদের আপনি চেনেন, নাম বলতে পারবেন?

উত্তর: চিনি। তবে নাম স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: কোন তারিখে তাদের উচ্ছেদ করেছে, বলতে পারবেন ?

উত্তর: না।

প্রশ্ন: এই কথাগুলো মিথ্যা। কারও শেখানো মতে আপনি এগুলো বলছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার হাটহাজারী থাকাকালীন সময়ে মুসার তার অফিসে যাতায়াত ছিল। বাবুল আক্তার মুসাকে ডেকে মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। দুই-তিনবার মুসাকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পাশের গলিতে ডেকে দিকনির্দেশনা দেন… এটা আপনি ১৬১ ও এজাহারে বলেননি।

উত্তর: ১৬১ ধারায় আইওকে বলেছি।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার এসব হত্যা পরিকল্পনা করাকালীন আপনি আশেপাশে ছিলেন? আপনি দেখেছেন? কোনো দিন বা তারিখ মনে আছে?

উত্তর: কোন দিন, কোন মাসে হয়েছে তা বলতে পারব না। এই মুহূর্তে স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: মুসা বাবুলের কাছে অস্ত্র ও টাকা দাবি করে। তখন মুসাকে বাবুল ৭০ হাজার টাকা দেন। পরে টাকা প্রয়োজন হলে আরো তিন লাখ টাকা প্রেস মালিক সাইফুল ইসলাম মুসাকে পরে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এসব কথা আপনি ১৬১-তে বলেননি। এজাহারেও বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। এজাহারে বলিনি সত্য।

প্রশ্ন: এই বিষয়গুলো কোনদিন, কোন মাসে হয়েছে এবং আপনি দেখেছেন?

উত্তর: তারিখ স্মরণে নেই। ২০১৪ সালের জুন বা জুলাইয়ে সুদান মিশনে যাওয়ার ১৫ দিন আগে।

প্রশ্ন: এই টাকা দেওয়া বা বলা এবং পরিকল্পনা কিছু তো আপনি দেখেননি।

উত্তর: না, দেখিনি।

প্রশ্ন: কে দেখেছে, কার থেকে শুনেছেন?

উত্তর: স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: এসব ভূয়া কথা সেজন্য আপনার এগুলো স্মরণে নেই বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: সাইফুলের সাথে বাবুলের কোনো ধরণের যোগাযোগ আছে এরকম কোনো ডকুমেন্ট বা ছবি দেখাতে পারবেন ?

উত্তর: এই মুহূর্তে কোনো ডকুমেন্ট নেই। সাইফুল বাবুলের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু। মিতু প্রেসের মালিক।

প্রশ্ন: সাইফুলের সাথে ব্যবসা ছিল আপনার। মিতুকে পরিচালক রেখে আপনিই ব্যবসা করতেন। ব্যবসার ঠিকানা আপনার স্থায়ী বাসা।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: কর্মজীবনে সাইফুলের সাথে বাবুলের কোনো সম্পর্ক ছিল না। সাইফুলকে মামলা পরিকল্পনাকারীদের নির্দেশে আপনি সৃষ্টি করেছেন ও ১১-০৫-২০২১ তারিখ মামলা করার সময় সাথে করে নিয়ে এসেছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার মিশনে সুদান যাওয়ার আগে বাসায় দায়িত্বরত কনস্টেবল সাদ্দামকে বাসায় কম আসতে বলে ও ছেলেকে শুধু স্কুল বাসে নিয়ে আসার কথা আপনি ১৬১তেও বলেননি, আবার এজাহারেও উল্লেখ করেননি।

উত্তর: ১৬১ এ বলিনি সত্য নয়। তবে এজাহারে বলিনি সত্য।

প্রশ্ন: বাবুল সুদানে চলে যায়। যাওয়ার আগে মুসাকে মিতুকে হত্যার সব দিক নির্দেশনা দিয়ে যায়। বাসাও রেকি করতে চিনিয়ে দিয়ে যায়। আর বলে যায়, যাতে কেউ বুঝতে না পারে বাবুল আক্তার এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। এসব কথা ১৬১ তেও এজাহারে উল্লেখ করেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। এজাহারে উল্লেখ করিনি।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার মিশনে যাওয়ার পর আড়াই মাস পর পর বাংলাদেশে আসতেন। তবে বাসায় কম আসতেন। এটা ১৬১-এও বলেননি, এজাহারেও বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। এজাহারে বলিনি।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার কোন তারিখ থেকে কোন তারিখ ছিল না.?

উত্তর: তারিখ বলতে পারব না।

প্রশ্ন: এই কথাগুলা আপনি মনগড়া ও শেখানো। প্রথমবারের মতো আদালতে বলছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: ছুটির সময় আসামি মুসাকে বাবুল আক্তার মিতুকে হত্যার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন- এই কথাগুলো আপনি ১৬১-তে বলেননি ও এজাহারেও বলেননি।

উত্তর: ১৬১তে বলেছি, এজাহারে বলিনি।

প্রশ্ন: এগুলো কখন শুনেছেন, কার থেকে শুনেছেন?

উত্তর: স্মরণে নেই। তবে মিতু হত্যার আগে শুনেছি।

প্রশ্ন: সুদান থেকে বাবুল আসা-যাওয়া করতো, তার আসাযাওয়া, খাওয়া এসব তো সব সরকারি খরচের টাকা।

উত্তর: এসব আমার জানা নেই।

প্রশ্ন: উনি যে এসে নির্দেশনা দিলেন- এটা কোন বছর, কোন মাস ও কোন তারিখ?

উত্তর: তারিখ, মাস, বছর স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: এসব নির্দেশ কোথায় বসে দিয়েছে?

উত্তর: জানি না।

প্রশ্ন: সুদান থেকে আসার পর মুসার সাথে দেখা হলে মুসা জানায়- মিতুকে হত্যার কাজটা তার লোকজন করতে পারেনি। চীনে যাবার আগে বাবুল আবার মুসাকে মিতুকে হত্যার কথা বলে যায়। এসব কথা আপনি আইও ও এজাহারে বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি, তবে এজাহারে বলিনি।

প্রশ্ন: এই কথাগুলো কার থেকে শুনেছেন ও কোনদিন কোথায় বসে হয়েছে?

উত্তর: এই মুহূর্তে স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: এই ঘটনা কখন শুনেছেন? কার থেকে শুনেছেন?

উত্তর: মিতুকে হত্যার ১০-১৫দিন পর শুনেছি। তবে কার থেকে শুনেছি স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: এই সব কথা বানোয়াট ও মিথ্যা। মামলার পরিকল্পনাকারীদের নির্দেশ মোতাবেক আপনি এসব কথা প্রথম আদালতে বলেছেন।

উত্তর: ইহা সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল চীন থেকে এসে জানতে পারে মিতুকে এখনো হত্যা করা হয়নি, চীনে থাকাকালে জঙ্গিরা বাসা চিনে গেছে জানিয়ে মিতুকে বাবুল কল দিয়ে বাসা পরিবর্তন করতে বলে। বাসা পরিবর্তনের সময় মিতুকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল বাবুলের। এসব কথা আপনি ১৬১ ও এজাহারে উল্লেখ করেননি।

উত্তর: এজাহারে বলিনি তবে ১৬১-তে বলেছি।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার চীন থেকে আসার কয়মাস পর মিতু মারা গিয়েছে?

উত্তর: প্রায় একমাস।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার চীন থেকে এসে বাসা পরিবর্তনের কোনো উদ্যেগ নিয়েছিল?

উত্তর: জানা নেই।

প্রশ্ন: বাসা পরিবর্তন করার সময় বাবুল আক্তার মিতুকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলো। বাবুলের আক্তারের এই মনের কথাটা কীভাবে, কবে, কোথা থেকে শুনেছেন?

উত্তর: এই মুহূর্তে স্মরণে নেই। তবে মিতু হত্যার পরে লোকমুখে জেনেছি।

প্রশ্ন: এসব আপনার কাল্পনিক উক্তি। যারা মামলা পরিচালনাকারী যারা আপনাকে যুক্ত করেছে তাদের শেখানো।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: ২০১৬ সালের ১৯ মে পুলিশ সদর দফতরে পদোন্নতি হওয়ার পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে একটি নির্দেশনা আসে যে, জঙ্গিদের বিষয়ে এলার্ট থাকতে। ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাবুল মিতুকে জঙ্গিরা হত্যা করেছে মর্মে চালিয়ে দেওয়ার মনস্থির করে। এই কথাগুলো ১৬১ তেও এজাহারে বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। তবে এজাহারে বলিনি সত্য।

প্রশ্ন: পুলিশ সদর দফতর থেকে যে এলার্ট দিয়েছে জঙ্গিরা বাসা চিনেছে- এই নির্দেশনা আপনি কিভাবে জানলেন বা দেখেছেন?

উত্তর: দেখিনি।

প্রশ্ন: ওই সুযোগে মিতুকে হত্যা করে জঙ্গিদের উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এটা কোন দিন, কোথায় বসে, কখন করেছে?

উত্তর: দেখিনি।

প্রশ্ন: ৩০ মে ২০১৬ সালে ঢাকার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে যোগদান করার জন্য বাবুল আক্তার মুসাকে হত্যা করতে বলে যায়। যাতে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা কেউ জানতে না পারে। বাবুল বলেছিল- সে মামলার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাকে জঙ্গি হামলা বলে চালিয়ে দেবে। এটা আইওকে বলেননি বা এজাহারেও বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। এজাহারে বলিনি সত্য।

প্রশ্ন: এসব নির্দেশ দিতে আপনি দেখেননি বা শোনেননি।

উত্তর: শুনেছি। তবে দেখিনি।

প্রশ্ন: কার কাছ থেকে শুনেছেন?

উত্তর: স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার বলেছে যে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলা হলে আমি নিজে তদন্ত করব- এই কথাটি আপনি বলেছেন সেটা বানোয়াট ও অস্বাভাবিক এবং পুলিশের অর্গানোগ্রাম বিরোধী।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: ২০১৬ সালের ১ জুন মিতুকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। মিতু তড়ঘড়ি করে বাসায় চলে আসে। এই কথা কার থেকে শুনেছেন?

উত্তর: এই কথাটা আমি মিতুর কাছ থেকে শুনিনি। এই কথা আমি মিতু হত্যার পর আইও এবং আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে জানতে পেরেছি।।

প্রশ্ন: আপনি কোন আসামির জবানবন্দি থেকে শুনেছেন ?

উত্তর: আনোয়ার এবং ওয়াসিমের কাছ থেকে জেনেছি। ২০১৬ সালের ২৬ জুন তারা জবানবন্দি দেয়।

প্রশ্ন: কোন আইওর কাছ থেকে জেনেছেন ?

উত্তর: সব আইও’র কাছ থেকে শুনেছি।

প্রশ্ন: ওই স্টেটমেন্টগুলো কতদিন পর দেখেছেন?

উত্তর: ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দেখেছি।

প্রশ্ন: এসব কথা বানোয়াট। আপনাকে যারা শিখিয়ে দিয়েছে তাদের কথা অনুযায়ী আপনি এগুলো বলেছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: ডায়েরিতে মিতুর লেখার কথা বলেছেন। এগুলো যে মিতুর লেখা কিনা সেটা এক্সপার্ট দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। মিতুর অন্য কোনো লেখা আইওকে দিয়েছিলেন?

উত্তর: মিতুর লেখা আমি চিনি। শনাক্ত করেছি। এক্সপার্ট দ্বারা পরীক্ষা হয়েছে কি না জানি না। মিতুর অন্য হাতের লেখার নমুনা আইওকে দিয়েছি।

প্রশ্ন: মিতুর নামে যে লেখা চিরকুট সেগুলো আপনার কাছে ছিলো না। পিবিআইয়ের অফিসে সৃষ্টি করে ২০২১ সালে ১২ মে স্বাক্ষর নিয়েছে।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুলকে হত্যা মামলায় জড়ানোর জন্য যারা কাজ করেছে তারা ঘটনার পাঁচ বছর পর সৃষ্টি করেছে।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: যে দুইটি বই জব্দ করা হয়েছে সেগুলোতে মিতুর লেখা নেই বলে পুলিশ ও আপনি এক্সপার্টকে সেগুলো দেননি।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: মিতুর কাছ থেকে বাবুলের বান্ধবী থেকে উপহার পাওয়া দুইটি বইয়ের বিষয়ে ১৬১-তে উল্লেখ নেই। পিবিআইয়ের শেখানো মতে এজাহারে বলেছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল ও তার বান্ধবীর হস্তাক্ষর বইয়ে লেখা আছে বলে বলেছেন। আপনি ওই বান্ধবীর হস্তাক্ষর বইয়ে ছাড়া আর কোথাও দেখেছেন?

উত্তর: না।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার চীনে যাওয়ার পর মুসাকে মিতুর হত্যার পরিকল্পনা, বাবুলকে বান্ধবীর দেওয়া দুটি বই এগুলো সব বানোয়াট এবং পিবিআইয়ের শেখানো, অসত্য।

উত্তর: সত্য নয়।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তারের পরিবারকে আপনি এগুলো জানিয়েছেন। এগুলো অসত্য।

উত্তর: আইওকে বলেছি।

প্রশ্ন: এসব ঘটনা আপনি চট্টগ্রামের তৎকালীন চট্টগ্রামে পুলিশ অফিসারদের জানিয়েছিলেন বলছেন। তবে এসব কথা আইওকে বলেননি এবং এজাহারে বলেননি।

উত্তর: এজাহারে বলিনি, আইওকে বলেছি।

প্রশ্ন: কোন তারিখ, কোন সময়ে, কোন অফিসারকে বলেছেন?

উত্তর: এই মুহূর্তে স্মরণে নেই।

প্রশ্ন: বাবুল আক্তার মিশনে থাকার সময় ওই বান্ধবী মিতুকে কল দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। মিতু সেটা আপনাকে কল দিয়ে জানায়। আপনি তখন হজে ছিলেন। এসব কথা এজাহারে ও আইওকে বলেননি।

উত্তর: আইওকে বলেছি। এজাহারে বলিনি সত্য।

প্রশ্ন: কোন সময়ে মিতু আপনাকে এই কথা জানিয়েছেন?

উত্তর: হজের মাঝামাঝি সময়ে। তবে কোন তারিখ বলতে পারব না।

প্রশ্ন: এই খবরটা শোনার কত দিন পর দেশে এসেছেন?

উত্তর: ১৫-২০ দিন পর।

প্রশ্ন: মিতুর ফোন চেক করে বান্ধবীর নম্বরটা কোন দেশ থেকে এসেছে যাচাই করেছেন?

উত্তর: না।

প্রশ্ন: যেহেতু এটা দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার মৃত্যুর হুমকি আপনি কোনো থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন?

উত্তর: না।

প্রশ্ন: এই কথা বানোয়াট ও মিথ্যা বলে আইও ও এজাহারে বলেননি। এই প্রথম আদালতে বলেছেন।

উত্তর: সত্য নয়।

সারাবাংলা/আইসি/আরডি/পিটিএম

বাবুল আক্তার মিতু হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর