‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া দেশের মানুষের সেবায় কাজ করতে পারছি’
১৮ মে ২০২৩ ১৬:৪৮
ঢাকা: জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল স্বীকৃতি পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া গ্রেনেড-বোমা-গুলির মুখোমুখি হয়েও বেঁচে আছি এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর উদ্ভাবনী ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ মডেল গৃহীত হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানায় মন্ত্রিপরিষদ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।
দেশবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে ধন্যবাদ আমার দেশবাসীকে, তারা যদি বার বার ভোট না দিতো, আর আমাকে সেবা করার সুযোগ না দিতো আমি তো আসতে পারতাম না। আর আল্লাহর কাছে আমার এইটুকু শুকরিয়া আদায় করা যে, গ্রেনেড-বোমা-গুলি সব কিছু মুখোমুখি হয়েও আমি বেঁচেও আছি এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এখনও আছি আর কি।’
মঙ্গলবার (১৬ মে) সর্ব সম্মতিক্রমে জাতিসংঘে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজোল্যুশন সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন কমিউনিটি ক্লিনিককে বৈশ্বিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এ রেজোল্যুশনটি কো-স্পন্সর করে।
রেজোল্যুশনটির শিরোনাম ছিল, ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি। ’প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত এ রেজোল্যুশন কো-স্পন্সর করা দেশগুলোকে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্য আমি এটা জানতাম যে কবে প্রস্তাবটা জাতিসংঘে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটা পাস হওয়ার পর আমার পিআর জানালেন যে প্রস্তাবটা পাস করেছে। বাংলাদেশের পক্ষে ৭০টা দেশ আমাদেরকে কো স্পন্সর করে এটা সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে।’
‘আমাদের অভিজ্ঞতা আমরা সকলের সঙ্গে শেয়ার করবো। অনেক দেশ এভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারেনা, তাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এখন চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা নিতে আসে সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে এটাই বড় কথা।’
এ সময় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরুর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রায় ১১ হাজার ঘর করেছিলাম। তার মধ্যে প্রায় চার হাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করে দিলাম। চালু করার এক বছর পর আমরা একটা সার্ভে করলাম। এটা যে করে দিলাম রেজাল্ট কি আসে। মানুষ কতটুকু লাভবান হয়। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক থেকে শুরু করে অনেকে এগিয়ে এলো। এক বছর পর আমরা একটা জরিপ করলাম। তাতে দেখা গেল ৭০ শতাংশের ওপর এর সাফল্য। আমরা আরও উৎসাহিত হলাম যে চার হাজার চালুর পর, ১১ হাজার চালু করে দেওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পাঁচ বছর সময় শেষ।
২০০১ সালে দোরগোড়ায় ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে দিল। তাদের বন্ধ করার যুক্তি হলো, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ যদি চিকিৎসা সেবা নেয় তাহলে সবাই নৌকায় ভোট দেবে। তাদের কেউ ভোট দেবে না এ জন্য বন্ধ করে দিল। আমার খুব কষ্ট লাগলো, আমরা যে ক্লিনিক করলাম সেখানে শুধু আওয়ামী লীগের লোক চিকিৎসা নেবে না। জনগণ সেবা পাবে। সাধারণ মানুষ সেবা পাবে। ওইসব এলাকায় অন্য দলের সমর্থক আছে না? তাহলে বন্ধ কেন করল?’
ভবিষ্যতে কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এটিকে একটি ট্রাস্টের আওতায় দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ