Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনাকে মার্কিন সরকার প্রত্যাখান করেছে: খন্দকার মোশাররফ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ মে ২০২৩ ২০:৩৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন সরকার প্রত্যাখান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে চট্টগ্রামে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ১০ দফা দাবিতে নগরীর নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহমদ সড়কে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগে শেখ হাসিনা জাপানে গিয়েছিলেন, যাওয়ার আগে অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু জাপান থেকে কিছু আনতে পারেননি। তারপরে আমেরিকা গেলেন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন পিওনের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী দেখা করতে পারেননি। এই প্রধানমন্ত্রীকে আমেরিকার সরকার থেকে কেউ ওয়েলকাম করতে আসেনি। আমেরিকা থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখাত হয়ে এসেছেন তিনি।’

‘ওয়াশিংটনের রাস্তায় মানুষ স্লোগান দিয়েছে শেখ হাসিনা ভোট চোর। সেখানে গিয়ে একটি অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হঠাৎ করে বসে একটি ছবি দিয়ে সারাদেশের মানুষকে বোকা বানাতে চেয়েছে শেখ হাসিনা। ব্রিটিশ সরকার স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কোনো বৈঠক হয়নি। শুধু আমেরিকা নয়, সারাবিশ্বের মানুষ শেখ হাসিনাকে প্রত্যাখান করেছে।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ বড় বড় মেগা প্রজেক্ট করে মেগা দুর্নীতি করেছে। দেশের টাকা পাচার করে সুইস ব্যাংকে জমা রেখেছে। কানাডা, আমেরিকায় বাড়ি করেছে। মালয়েশিয়ায় থাকার ঘর করেছে। এ সব আমাদের কথা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সব কথা বলেছে। যারা টাকা পাচারে জড়িত তাদের নাম সরকার মুখে আনছে না। কারণ, তাদের লোকই এই টাকাগুলো পাচার করেছে। এভাবে সরকার দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ গরিব মানুষ দুবেলা খেতে পারে না, মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষে এই অর্থনীতি ঠিক করা সম্ভব নয়।’

বিজ্ঞাপন

‘এই সরকার যেখানে বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেখানে আর তারা বিচার বিভাগকে স্বাধীন করতে পারবে না। এই সরকার যেখানে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে সেটি তারা আর পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। তাই এদেশের জনগণ এই অবৈধ ও স্বৈরাচারী সরকারকে প্রত্যাখান করেছে।’

সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায়, যারা এই দেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করেছে, সামাজিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, সুশাসনকে ধ্বংস করে দিয়েছে সেই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় মানুষ আর দেখতে চায় না।’

‘আজকে স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আবার গায়েবি মামলা শুরু করেছে। নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার শুরু করেছে। আজকে আমরা বলতে এসেছি আর কোনো গায়েবি মামলা হতে পারবে না। আর কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।’

আওয়ামী লীগ আবার বাকশালে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকারকে আর এই দেশের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যত তাড়াতাড়ি বিদায় হও, ততই দেশের জন্য মঙ্গল। এইসব কথা কিন্তু জনগণ আওয়াজ তুলেছে। এই আওয়াজকে আজকে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। আজকে সরকার সবজায়গায় ব্যর্থ হয়ে দেশে-বিদেশে মিথ্যাচার করছে। বানোয়াট কথা বলছে। জনগণ তাদের কথায় বিশ্বাস করে না।’

‘কারণ জনগণ জানে এই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পরে ক্ষমতায় থাকার সময় ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। সব রাজনৈতিক দলকে বন্ধ করে বাকশাল সৃষ্টি করেছিল। জনগণ সে বাকশালকে প্রত্যাখান করেছিল। আজকে এই সরকার গত ১৪ বছর যাবৎ গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসে আবার বাকশাল করার চেষ্টা করছে। তারা একবার গণতন্ত্রকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে আবার করার চেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাজই হচ্ছে গণতন্ত্রকে হত্যা করা আর বিএনপির কাজ হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। আজকে সারাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়। নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। চট্টগ্রামে কিছুদিন আগে একটি উপনির্বাচন হয়েছে। সে উপনির্বাচনে এত সরকারের নেতা, মন্ত্রীদের প্রচারের পরও ভোট দিয়েছে শতকরা মাত্র ১৪ ভাগ মানুষ। এটি লজ্জার বিষয়।’

‘এবার নাকি শেখ হাসিনা নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবে। এই কথা কেউ বিশ্বাস করে না। এসব বানোয়াট কথা। বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। এ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ ভিপি, কেন্দ্রীয় সদস্য মীর মো. হেলাল উদ্দিন, সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম ও উত্তর জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম।

সারাবাংলা/আইসি/একে

আওয়ামী লীগ খন্দকার মোশাররফ বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর