Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারের সময় শেষ: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ মে ২০২৩ ২২:৪৫

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যতই চিল্লা-চিল্লি করেন, যতই জাপান, যুক্তরাজ্য, আমেরিকার আর সৌদি আরব, কাতার, চীনে যান, কোনো লাভ হবে না। সময় শেষ। এটাই বাস্তবতা।’

শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গায়েবি মামলায় গ্রেফতার, নির্যাতন বন্ধসহ সরকার পদত্যাগেরে ১০ দফা দাবি আদায়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এ সমাবেশ আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উপর থেকে নেমে আসুন। এই গণভবন থেকে বের হোন, পাইক-পেয়াদা, বরকোন্দাজ, এসএসএফ, সোয়াত— এগুলো বাদ দিয়ে এই মানুষের সামনে এসে দাঁড়ান। দেখুন তারা কী বলে। মানুষের চোখের ভাষা বুঝুন। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মানুষ আর বাঁচতে পারছে না।’

সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন অন্যায়ভাবে অন্যায় কোনো কিছু করবেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলতে চাই, এই সরকার দেশে-বিদেশে সমর্থন হারিয়েছে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব চায় যে, এখানে একটা সুষ্ঠু, সঠিক, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক এবং সেটা তারা জানেন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সম্ভব হবে না। তাই বলতে চাই, আপনারা দয়া করে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না সেখানে আপনারাও চিহ্নিত হয়ে যাবেন।’

নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা অনেক কষ্ট করেছেন, আর কিছু দিন কষ্ট করতে হবে। এই সরকারকে টেনে না নামালে, এরা যাবে না। সেজন্য সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, ব্যক্তি-সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশ আপনাদের শপথ নেওয়ার সভা। আমাদের জীবনকে বাজি রেখে এই দেশকে মুক্ত করবার জন্য, এই দেশের মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য যুদ্ধে নেমে পড়তে হবে। সেই যুদ্ধ আমাদের নিজেদের বাঁচানোর যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ জাতিকে বাঁচানোর যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যুদ্ধ।’

ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। তারা এই শেষ সময়ে টিকে থাকার জন্য মরণ কামড় দিচ্ছে। এই যে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা- কোন দেশে আমরা বাস করি। হাইকোর্ট থেকে জামিন দেয়, সেই জামিন নিয়ে নিম্ন আদালত গেলে সেই জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। কোনো ঘটনাই ঘটেনি মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ওরা বলে- তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি কবরে চলে গেছে, বিলীন হয়ে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আপনারা যখন চেয়েছিলেন তখন ছিল এটা ভালো… সেদিন তো শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনোটাই মানব না। আজ আমাদের পরিষ্কার কথা, এ দেশের মানুষ একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য, নিজের ভোট নিজে দেবার জন্য এবং ভোটের রেজাল্ট ঘরে আনার জন্য তারাও তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন মানবে না। আমরা সংঘাত চাই না, আমরা কনফোনট্রেশন চাই না। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিয়মাতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। আমরাও মনে করি নির্বাচনই এর একমাত্র উপায়।’

‘সেই নির্বাচন কখনোই আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে না। আমরা ২০১৮ সালে নির্বাচন দেখেছি, ২০১৪ সালে দেখেছি। তাদেরকে আর বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। ওই আপনার (শেখ হাসিনা) অধীনে এবার নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আপনারা সংসদ রাখবেন আর আমরা নির্বাচন করব— এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। এমপিরা এমপি থাকবেন আর এমপি ইলেকশন হবে সেই নির্বাচন কোনোদিন সুষ্ঠু হবে না। সেই কারণে সংসদ আগেই বিলুপ্ত করতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ইসির নতুন আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন নতুন আইন করতে যাচ্ছেন। যে নির্বাচন কমিশন আসলে কোনো নির্বাচন বাতিল করতে পারবেন না। তাহলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতাটা কোথায়? কাকে কী বোঝাচ্ছেন? বাংলাদেশের সব মানুষকে কি বোকা মনে করেন? আর পারবেন না।’

মহানগর ‍উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মীর নেওয়াজ আলী সপু, রকিবুল ইসলাম বকুল, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, পারভেজ রেজা কানন, রফিক শিকদার, মহানগর উত্তর বিএনপির আমিনুল হক, তাবিথ আউয়াল, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, যুব দলের মামুন হাসান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্র দলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এজেড/এমও

বিএনপি মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর