Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সিটি করপোরেশনেও নীল নকশার নির্বাচন হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ মে ২০২৩ ১৫:৫০

ঢাকা: সিটি করপোরেশনেও ‘নীল নকশার’ নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা আয়োজন করে জাগপার একাংশ।

আসন্ন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে তারা (সরকার) ধবংস করে দিয়েছে। এই যে মেয়র ইলেকশন হচ্ছে বেশির ভাগ সিটি করপোরেশনে বিরোধী দল কোনো প্রার্থী দিচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সিলেটের অত্যন্ত জনপ্রিয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিলেটের মানুষ তাকে আবারও মেয়র হিসেবে চায়। সেই আরিফ কাল (শনিবার) জনসভা করে বলেছেন যে, এই নির্বাচন কখনও গ্রহণযোগ্য হবে না। তারা ব্লু প্রিন্ট করে ফেলেছে। এই নির্বাচনে যাওয়ার অর্থই হয় না, এটা অর্থহীন হবে। আপনারা দেখেছেন সিলেটের মানুষের তারা চোখের পানি ফেলেছে, কেঁদেছে যে তাদের প্রিয় নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তিনি (আরিফুল হক চৌধুরী) পরিষ্কার করে বলেছ- এই নির্বাচন অর্থহীন হবে এবং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব জায়গায়ই একই অবস্থা। পুরো নির্বাচনের ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানটাকেই ধবংস করে দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। এটাই হচ্ছে কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদীদের একটা হাতিয়ার। নির্বাচন একটা টুল। নির্বাচন কমিশন কথা বলবে। নির্বাচন একটা দেখানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু তারা পুরো নির্বাচনটাকে তাদের মতো করে নিয়ে যাবে।’

‘এই কারণে আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, অত্যন্ত পরিষ্কার, স্পষ্ট, দৃঢ় উচ্চারণ যে, এই সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। হাসিনা সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। একটা নিরপেক্ষ  তত্ত্ব্বাধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে এমন একটা অবস্থা হয়েছে তাদের (ক্ষমতাসীন জোট) যে জোট আছে ১৪ দল, ১৪ দলের এক শরিক দলের মন্ত্রী ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আমাদের অত্যন্ত সন্মানিত শ্রদ্বেয় ব্যক্তিত্ব রাশেদ খান মেনন, তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন, পরিকল্পিত নির্বাচন চাই না। মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার যে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিত নির্বাচন করে, সেই নির্বাচন তিনি (রাশেদ খান মেনন) চান না। আরেকজন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, এখানে মন্ত্রীরাই সিন্ডিকেট তৈরি করে, তারাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে। এসব আমার কথা নয় তারা (সরকারের মন্ত্রীরা) বলছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পত্রিকায় আজকে এসেছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তাদের রিপোর্টে বলছে যে, বাংলাদেশ ইজ চ্যাম্পিয়ান অব ডিফল্ট লোনস। এই যে খেলাপি ঋণ এটাতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ান হয়ে গেছে। এক শ্রীলংকা ছিল, শ্রীলংকা থেকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ কেন হবে না? যারা ঋণ নেয় শোধ করে না। তারা তো তাদের এডভাইজার-মন্ত্রীরা হাজার হাজার কোটি টাকা তারা ঋণ নিয়ে রিসিডিউল করতেই আছেন বছরের পর বছর ধরে। আর আমাদের ছোট খাটো ব্যবসায়ীরা যদি একটা-দুইটা ডিফল্ট হয় তো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাচ্ছে তাকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে। এই সরকারের অপকর্ম বলে শেষ করা যাবে না। এনাফ ইজ এনাফ। এই সরকার যদি একটা মুহূর্ত  আর দেশ পরিচালনায় থাকে দেশ আরও খারাপের দিকে যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খানে অনেক খেলা হচ্ছে, খেলা হবে। এই যে, উনি (ওবায়দুল কাদের) তো প্রায় বলেন খেলা হবে। সেটা হবে। অনেক চেষ্টা হবে আমাদের মধ্যে ভুলবুঝাবুঝি সৃষ্টি করানোর। যারা দেশপ্রেমিক আছেন তারা কখনো ভুল বুঝবেন না। ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে গণতন্ত্রের মুক্তি, বাংলাদেশের মুক্তি, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা অনড় হয়ে থাকব। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। চূড়ান্ত পর্যায় যাওয়ার জন্য সবাইকে সর্বশক্তি দিয়ে নামতে হবে। একাত্তর সালে যেভাবে আমরা নেমেছিলাম আজকেও একইভাবে আন্দোলনে নেমে শান্তিপূর্ণভাবে এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘এই কাজটা বাইর থেকে এসে কেউ করে দেবে না। অনেকে অপেক্ষা আছেন। অপেক্ষায় থাকার কোনো কারণ নাই। আপনাকে করতে হবে, আমাদের সবাইকে করতে হবে। এটা প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে বিশেষ করে তরুণ সমাজের।’

জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাত, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার আবিদুর রহমান, আসম মেজবাহ উদ্দিন, হুমায়ুন কবীর প্র্রমুখ।

সারাবাংলা/ এজেড/এনইউ

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর