‘চাঁদের হুমকি মধ্যযুগীয় বর্বরতা-সন্ত্রাসবাদ’

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কবরস্থানে পাঠানোর’ যে হুমকি রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ দিয়েছেন, তা এক ধরনের মধ্যযুগীয় বর্বরতা ও সন্ত্রাসবাদ। হুমকির নিন্দা ও ঘৃণা জানিয়ে এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের (হলুদ দল) ৪৫ জন শিক্ষক একথা বলেন।

মঙ্গলবার (২৩ মে) অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ মামুন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে প্রকাশ্যে কোন ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাকে হুমকি একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যা সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রী, অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপকার এবং আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের বিশ্ব স্বীকৃত রাষ্ট্রনায়ক। প্রকাশ্যে রাজনৈতিক সমাবেশে তাকে হত্যার হুমকি মানে গণতন্ত্রকে হত্যার হুমকি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়ার হুমকি, বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনকে থামিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য সৃষ্টির হুমকি।

বিবৃতিতে বলা হয়, জীবিত কোনো ব্যক্তিকে ‘কবরস্থানে পাঠানো’র হুমকি আমাদেরকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বাংলাদেশ আফগানিস্তান নয়। তালেবানিক কায়দায় আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক সভ্য সমাজে মধ্যযুগীয় বর্বরতা ফিরিয়ে আনার এই অপচেষ্টা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের বিশ্বাসী বাংলাদেশের সচেতন সমাজ মেনে নিতে পারে না। গণতন্ত্রের আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করার যে অপচেষ্টা একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াপনা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে উসকে দেওয়ার নীল নকশা।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি’র মত একটি রাজনৈতিক দলের কাছে জাতি কখনোই এটা আশা করতে পারে না। আমরা আশা করি বিএনপি এই ধরনের নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিহার করে গণতান্ত্রিক পথে চলবে এবং ইতিবাচক রাজনীতি করবে। গঠনমূলক সমালোচনা ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে হাঁটবে এবং জাতি গঠনে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে। আমরা আরও আশা করব বিএনপির পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে এই হত্যার হুমকির জন্য জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা হবে এবং উক্ত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আইন-শৃঙ্খরা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাব অতি দ্রুত এই সন্ত্রাসী বক্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়ার জন্য উক্ত নেতাকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির বিধান করবে।

বিবৃতি প্রদানকারী শিক্ষকরা হলেন- আবদুল্লাহ মামুন, মাহবুবুল হক, আব্দুল্লাহ আল ফারুক, রাহমান নাছির উদ্দিন, আবুল মনসুর, রুহুল আমিন, আনোয়ার সাঈদ, হেলাল উদ্দিন, সজীব কুমার ঘোষ, জামাল উদ্দিন, আফতাব উদ্দিন, এসএম মনিরুল হাসান, দানেশ মিয়া, নাজনিন নাহার ইসলাম, আদনান মান্নান, অলক পাল, ফরিদুল আলম, বশির আহমেদ, নির্মল কুমার সাহা, রকিবা নবী, জ্ঞান রত্ন, এনায়েত হোসেন, শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, এ এইচ এম সেলিমুল্লাহ, মোহম্মদ খাইরুল ইসলাম, দেবাশীষ পালিত, উদিতি দাস,মহিউদ্দিন, বিধানচন্দ্র মজুমদার, এস এম রফিকুল আলম, শহিদ উল্লাহ, ইন্দ্রজিৎ কুন্ডু, অনুপম দাশগুপ্ত, ফারাহ জাহান, দৈপায়ন সিকদার, এ কে এম রেজাউর রহমান, অঞ্জন কুমার চৌধুরী, সাইদুল ইসলাম সোহেল, মুহাম্মদ জালাল আহাম্মদ, শারমিন সুলতানা, সুপ্তিকনা মজুমদার, ফয়সাল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তফা আলী, মোহাম্মদ ফয়সাল, প্রণব কুমার মিত্র।

সারাবাংলা/এইচএফ/একে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুমকি